গাজায় ফের মৃত্যু মিছিল। রবিবার সাহায্য চাইতে আসা নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের উপর গুলি চালাল ইজরায়েলি বাহিনী। গাজা সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির দাবি, অন্তত ৯৩ জন মারা গিয়েছেন এই ঘটনায়। আহত একাধিক।
উত্তর গাজায় খাদ্যসাহায্য বহনকারী ট্রাক পৌঁছনোর পরেই হামলা শুরু হয় বলে অভিযোগ। ৮০ জন প্রাণ হারান সেখানে। দক্ষিণ গাজার রাফার কাছাকাছি আরও নয় জন এবং খান ইউনিসের অন্য একটি সাহায্য পয়েন্টে গুলিতে প্রাণ যায় আরও চার জনের।
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (WFP) তরফে জানানো হয়েছে, তারা রবিবার ২৫টি ট্রাকে খাবার নিয়ে গাজা শহরের উদ্দেশে রওনা দেয়। ইজরায়েলি সীমান্ত পেরিয়ে যাওয়ার পরই বিশাল জনতা ট্রাক ঘিরে ধরে। তারপরেই গুলিচালনার ঘটনা ঘটে। এমন বর্বরোচিত তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ডব্লু এপ পি। তাদের বিবৃতি, 'খাদ্যের জন্য মরিয়া সাধারণ মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।'
তবে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা 'তাৎক্ষণিক হুমকি' ঠেকাতেই সতর্কতামূলক গুলি চালায়। সেনার বক্তব্য, গাজা শহরের কাছে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই তারা গুলি চালাতে বাধ্য হয়।
গাজার বাসিন্দা ৩৬ বছরের কাসেম আবু খাতের বলেন, 'একটু আটার জন্য আমি গিয়েছিলাম। পৌঁছে দেখি, হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছে। হঠাৎ গুলির শব্দ। আমাদের উপর এলোমেলো গুলিবর্ষণ করছিল ট্যাঙ্ক। স্নাইপাররা এমনভাবে গুলি চালাচ্ছিল, যেন জঙ্গলে পশু শিকার করছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার চোখের সামনেই অসংখ্য মানুষ মারা গেল। কাউকে বাঁচানোর সুযোগ পর্যন্ত ছিল না।'
গাজায় খাদ্যসাহায্য নিতে গিয়ে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনা এখন প্রায় নিয়মিত। গাজা প্রশাসনের দাবি, মে মাসের শেষ দিক থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮০০ জন নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইজরায়েলি বাহিনীর গুলির দিকেই আঙুল উঠেছে। মাঠে কাজ করা সেনাদের জন্য ‘পূর্ব অভিজ্ঞতা’ থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন নির্দেশিকাও জারি করেছে ইজরায়েল সেনাবাহিনী।
তবে রবিবারই ইজরায়েল সরকার তাদের দেশে কর্মরত জাতিসংঘের হিউম্যানিটারিয়ান অফিসের প্রধান জোনাথন উইটলের আবাসন অনুমতি বাতিল করে। কারণ, উইটল বারবার গাজার মানবিক পরিস্থিতির সমালোচনা করেছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী গিডিওন সার তাঁকে 'মিথ্যে ছড়ানোয়' অভিযুক্ত করেছেন।
পূর্বে গাজার একমাত্র ক্যাথলিক গির্জা, হোলি ফ্যামিলি চার্চে ইজরায়েলি হামলায় তিন জনের মৃত্যু হয়। তার পরই পোপ লিও চতুর্দশ এই যুদ্ধকে “বর্বরতা” বলে আখ্যা দেন এবং শান্তির আহ্বান জানান। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন এবং বলেন, এটি একটি ‘ভুল করে পড়ে যাওয়া বোমা’ ছিল।
রবিবার গাজার সেই চার্চেই প্রার্থনা সভা করেন জেরুজালেমের লাতিন প্যাট্রিয়ার্ক, পিয়েরবাতিস্তা পিজ্জাবাল্লা। শুক্রবার তিনি গাজা সফরে গিয়েছিলেন। সেখানকার অধিকাংশ মানুষ ইতিমধ্যেই একাধিকবার ঘরছাড়া হয়েছেন। রবিবার ফের ডেইর এল-বালাহ অঞ্চলের বাসিন্দাদের দক্ষিণে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইজরায়েলি সেনা। সঙ্গেসঙ্গেই মাথায় ছাউনি, হাতে ঝুলি আর ঠেলাগাড়ি নিয়ে দলে দলে মানুষ দক্ষিণমুখী।
জাতিসংঘের ওচা জানাচ্ছে, এই নতুন নির্দেশের ফলে গাজার প্রায় ৮৮ শতাংশ অঞ্চলই এখন ‘উচ্ছেদের নির্দেশাধীন’ বা সেনা নিয়ন্ত্রণাধীন। অর্থাৎ ২১ লক্ষ মানুষের ভিড় ঠাসা গাজার ১২ শতাংশের কম এলাকায়। পরিষেবা নেই, পানীয় জল নেই, নেই বিদ্যুৎও।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইজরায়েলে মারা যান ১,২১৯ জন। তার জবাবে ইজরায়েলি অভিযানে এখনও পর্যন্ত গাজায় মৃত্যু হয়েছে ৫৮,৮৯৫ জনের, বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক। এই অবস্থার মধ্যেই গোপনে চলছে যুদ্ধবিরতির চেষ্টাও। ইজরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিরা একটি সম্ভাব্য ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও ১০ জীবিত জিম্মি মুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। তার ফল ঠিক কী, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না।
উত্তর গাজায় খাদ্যসাহায্য বহনকারী ট্রাক পৌঁছনোর পরেই হামলা শুরু হয় বলে অভিযোগ। ৮০ জন প্রাণ হারান সেখানে। দক্ষিণ গাজার রাফার কাছাকাছি আরও নয় জন এবং খান ইউনিসের অন্য একটি সাহায্য পয়েন্টে গুলিতে প্রাণ যায় আরও চার জনের।
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (WFP) তরফে জানানো হয়েছে, তারা রবিবার ২৫টি ট্রাকে খাবার নিয়ে গাজা শহরের উদ্দেশে রওনা দেয়। ইজরায়েলি সীমান্ত পেরিয়ে যাওয়ার পরই বিশাল জনতা ট্রাক ঘিরে ধরে। তারপরেই গুলিচালনার ঘটনা ঘটে। এমন বর্বরোচিত তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ডব্লু এপ পি। তাদের বিবৃতি, 'খাদ্যের জন্য মরিয়া সাধারণ মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।'
তবে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা 'তাৎক্ষণিক হুমকি' ঠেকাতেই সতর্কতামূলক গুলি চালায়। সেনার বক্তব্য, গাজা শহরের কাছে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই তারা গুলি চালাতে বাধ্য হয়।
গাজার বাসিন্দা ৩৬ বছরের কাসেম আবু খাতের বলেন, 'একটু আটার জন্য আমি গিয়েছিলাম। পৌঁছে দেখি, হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছে। হঠাৎ গুলির শব্দ। আমাদের উপর এলোমেলো গুলিবর্ষণ করছিল ট্যাঙ্ক। স্নাইপাররা এমনভাবে গুলি চালাচ্ছিল, যেন জঙ্গলে পশু শিকার করছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার চোখের সামনেই অসংখ্য মানুষ মারা গেল। কাউকে বাঁচানোর সুযোগ পর্যন্ত ছিল না।'
গাজায় খাদ্যসাহায্য নিতে গিয়ে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনা এখন প্রায় নিয়মিত। গাজা প্রশাসনের দাবি, মে মাসের শেষ দিক থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮০০ জন নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইজরায়েলি বাহিনীর গুলির দিকেই আঙুল উঠেছে। মাঠে কাজ করা সেনাদের জন্য ‘পূর্ব অভিজ্ঞতা’ থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন নির্দেশিকাও জারি করেছে ইজরায়েল সেনাবাহিনী।
তবে রবিবারই ইজরায়েল সরকার তাদের দেশে কর্মরত জাতিসংঘের হিউম্যানিটারিয়ান অফিসের প্রধান জোনাথন উইটলের আবাসন অনুমতি বাতিল করে। কারণ, উইটল বারবার গাজার মানবিক পরিস্থিতির সমালোচনা করেছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী গিডিওন সার তাঁকে 'মিথ্যে ছড়ানোয়' অভিযুক্ত করেছেন।
পূর্বে গাজার একমাত্র ক্যাথলিক গির্জা, হোলি ফ্যামিলি চার্চে ইজরায়েলি হামলায় তিন জনের মৃত্যু হয়। তার পরই পোপ লিও চতুর্দশ এই যুদ্ধকে “বর্বরতা” বলে আখ্যা দেন এবং শান্তির আহ্বান জানান। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন এবং বলেন, এটি একটি ‘ভুল করে পড়ে যাওয়া বোমা’ ছিল।
রবিবার গাজার সেই চার্চেই প্রার্থনা সভা করেন জেরুজালেমের লাতিন প্যাট্রিয়ার্ক, পিয়েরবাতিস্তা পিজ্জাবাল্লা। শুক্রবার তিনি গাজা সফরে গিয়েছিলেন। সেখানকার অধিকাংশ মানুষ ইতিমধ্যেই একাধিকবার ঘরছাড়া হয়েছেন। রবিবার ফের ডেইর এল-বালাহ অঞ্চলের বাসিন্দাদের দক্ষিণে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইজরায়েলি সেনা। সঙ্গেসঙ্গেই মাথায় ছাউনি, হাতে ঝুলি আর ঠেলাগাড়ি নিয়ে দলে দলে মানুষ দক্ষিণমুখী।
জাতিসংঘের ওচা জানাচ্ছে, এই নতুন নির্দেশের ফলে গাজার প্রায় ৮৮ শতাংশ অঞ্চলই এখন ‘উচ্ছেদের নির্দেশাধীন’ বা সেনা নিয়ন্ত্রণাধীন। অর্থাৎ ২১ লক্ষ মানুষের ভিড় ঠাসা গাজার ১২ শতাংশের কম এলাকায়। পরিষেবা নেই, পানীয় জল নেই, নেই বিদ্যুৎও।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইজরায়েলে মারা যান ১,২১৯ জন। তার জবাবে ইজরায়েলি অভিযানে এখনও পর্যন্ত গাজায় মৃত্যু হয়েছে ৫৮,৮৯৫ জনের, বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক। এই অবস্থার মধ্যেই গোপনে চলছে যুদ্ধবিরতির চেষ্টাও। ইজরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিরা একটি সম্ভাব্য ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও ১০ জীবিত জিম্মি মুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। তার ফল ঠিক কী, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না।