ঢাকা , শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
গোদাগাড়ী খাদ্য গুদামে নিম্নমানের চাল মজুদের অভিযোগ কুষ্টিয়ায় রেড ক্রিসেন্টের যুব স্বে”ছাসেবীদের দুর্যোগ প্রশিক্ষণ শুরু। লালপুরে হজ্ব পরবর্তী করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা মোহনপুরে পূজা উদযাপন কমিটির সাথে পুলিশের মতবিনিময় সভা রাজশাহীতে বিভাগীয় তায়কোয়ানডো পুমসে চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে সংবাদকর্মীর মোবাইল ছিনিয়ে নিলেন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শিক্ষক জান্নাতুলের মৃত্যুর দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের: রিটার্নিং কর্মকর্তা সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে ঘুমনোর অভ্যেস বলিউডের ৫ তারকার চলনবিলে নৌকাবাইচ দেখতে লক্ষাধিক দর্শনার্থীর আগমন কেঁদে কেটে হাতে-পায়ে ধরি, তাও জোর করে আমাকে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে, বিস্ফোরক অক্ষয়ের নায়িকা! সরকারি চিকিৎসকদের জন্য ৮ দফা কঠোর নির্দেশনা খুলনায় বিদেশি অস্ত্রসহ ইউপি চেয়ারম্যান আটক নেপালে বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১, পলাতক ১২ হাজার ৫৩৩ কয়েদি হাজীগঞ্জ গায়ে হলুদে নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে বরের মৃত্যু রোজ এনার্জি ড্রিঙ্ক খেলে কেবল ডায়াবিটিস নয়, সঙ্গে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও বাড়ে জাকসু নির্বাচন কমিশনার মাফরুহী সাত্তারের পদত্যাগ সুশীলা কার্কিকে নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা পদত্যাগ করলেন জাকসু নির্বাচন কমিশনার মাফরুহী সাত্তার রাশিয়ার অন্দরে ঢুকে আবার ড্রোন হামলা ইউক্রেনের নোয়াখালীতে চালের টিন কেটে ওষুধ দোকানে দুর্ধর্ষ চুরি

গ্রামের পর গ্রাম গিলছে নদী, আতঙ্কে ২০ হাজার পরিবার

  • আপলোড সময় : ২৯-০৭-২০২৫ ১১:০১:৩৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৯-০৭-২০২৫ ১১:০১:৩৪ অপরাহ্ন
গ্রামের পর গ্রাম গিলছে নদী, আতঙ্কে ২০ হাজার পরিবার ছবি: সংগৃহীত
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ছোট ফেনী নদীর পাড়ের মানুষের জীবনে নেমে এসেছে বিভীষিকাময় দিন। প্রতিদিন ভাঙছে নদীর পাড়, বিলীন হচ্ছে, ঘরবাড়ি, মসজিদ, দোকান, কৃষি জমিসহ জীবনের সবকিছু। অথচ এসব মানুষের দীর্ঘশ্বাস, কান্না, আর্তনাদ যেন কেউ শুনছে না। কেউ দেখছে না। বহু জনপদ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। 

জানা গেছে, গত বছরের বন্যার প্রভাবে মুছাপুর রেগুলেটর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পর থেকে ছোট ফেনী নদীর দুপাশে অস্বাভাবিক জোয়ারে ভাঙন দেখা দেয়। চর মজলিশপুর, বগাদানা, চরদরবেশ, চর চান্দিয়া চর পারবতি, চর হাজারী ও মুছাপুর ইউনিয়নের নদীর পাড়ের অংশে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে নদী পাড়ের বসবাসরত ২০ হাজারের অধিক পরিবারের। শতশত পরিবারের সহায়-সম্পদ ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ছোট ফেনী নদী সেতু, ইতালি মার্কেট তালতলা এলাকা, কাজির হাটসংলগ্ন বাঁশ বাজার, দাগনভুইয়া উপজেলার জগতপুর, করিমপুর, তালতলীসহ চরমজলিসপুর, মিয়াজী ঘাট এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অস্বাভাবিক জোয়ারে লোনাপানি প্রবল স্রোতে লোকালয়ে ঢুকছে। এতে করে নদীর দুপাশ ভাঙছে। 

স্থানীয়রা বলছেন, অস্বাভাবিক জোয়ার-ভাটার কারণে ভাঙছে পাড়সহ পাড়ে থাকা পরিবারগুলোর ঘরবাড়ি। এতে করে পরিবারগুলো চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন।

স্থানীয় ওয়ালী-আল হায়দারিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন, মুছাপুর ক্লোজারের পুনর্নির্মাণ দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে থাকায় ছোট ফেনী নদীর উপকূলে বসবাসরত হাজারো মানুষ আজ ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। প্রতিদিনই নদী-ভাঙনের মুখে পড়ছে তাদের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। নদীর ধারে বসবাসরত গরীব কৃষকদের বহু জমি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যেসব জমি তারা বর্গা নিয়ে চাষ করতেন, এখন সেগুলো হারিয়ে জীবিকা নির্বাহে চরম সংকটে পড়েছেন।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো নদী-ঘেঁষা এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এবং সেখানকার শিক্ষার্থীরা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। জোর দাবি জানাচ্ছেন বিলম্ব না করে অতিদ্রুত মুছাপুর ক্লোজারের পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু করা হোক।

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবু বক্কর ছিদ্দিক মারুফ বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর ভাঙার কারণে সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা চাই এ দেশের প্রশাসন বা সরকার কর্তৃক মুছাপুর রেগুলেটর পুনর্নির্মাণে যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু মুসা রকি বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ার পর নদীর পাড় প্রতিনিয়তই ভাঙছে। যেগুলো জরুরি ভিত্তিতে করা দরকার, আমরা এগুলো চিহ্নিত করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কাজীর হাট আউরার খীলের জলদাস পাড়া এলাকায় ৩০০ মিটারের একটি পাইলটিং প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। এটি জিও টিউবের কাজ। আমরা এখন পর্যন্ত ৮০ মিটার ডাম্পিং সম্পন্ন করেছি। আরও যে বাকি অংশগুলো আছে, সেগুলো ধাপে ধাপে এগোচ্ছে। এ ছাড়া নদী শাসন করা যায় কিনা, এ বিষয়টি নিয়েও কাজ করছি।

জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ও চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন খোকন বলেন, প্রতিনিয়ত ভাঙনে সোনাগাজী মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এ উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষিনির্ভর। যে হারে কৃষি জমি ভাঙছে, এতে করে কৃষক তার শেষ অস্তিত্ব হারানোর শঙ্কায় দিন পার করছে। অতিদ্রুত মুছাপুর ক্লোজারের পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু করা হোক এবং উপকূলীয় এলাকার মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।

উপজেলা কৃষি অফিসার মাইন উদ্দিন আহমেদ সোহাগ বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ার পর জোয়ার-ভাটায় কৃষি জমি ভেঙে নদীতে বিলীন হচ্ছে এবং জোয়ারের পানি নদী থেকে খাল হয়ে কৃষি জমিতে ঢুকে যাচ্ছে। এতে করে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে। মুছাপুর রেগুলেটর পুনর্নির্মাণ হলে আশাকরি কৃষকের উৎপাদন ব্যাহত হবে না। এতে করে কৃষি জমিও ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিগ্যান চাকমা জানান, আমি সোনাগাজীতে নতুন জয়েন করেছি। চলতি মাসের ৩০ তারিখে ফেনী বাসীদের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটা সভা আছে। ওইখানে মুছাপুর রেগুলেটরের বিষয়টি উপস্থাপন করব। আশাকরি, ওখান থেকেও একটা সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) অলোক দাশ বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর পুনর্নির্মাণ নিয়ে স্পেসিফিক কোনো তথ্য আমার জানা নেই। এটি নিয়ে ঊর্ধ্বতনরা ভালো বলতে পারে। ভাঙন রোধে কিছু জরুরি স্পট চিহ্নিত করেছি। এগুলোতে টেকসই কাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া এডিবির অর্থায়নে কিছু কাজ হবে। এ জন্য আমরা স্টিমেট তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করেছি। 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Rajshahir Somoy

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
তানোরের আলোচিত কথিত কবিরাজ আটক

তানোরের আলোচিত কথিত কবিরাজ আটক