ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ১৩ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে লাশ চাম্বল গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। হতভাগী কিশোরীর মা হালিমা বেগম এমন অভিযোড় এনে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন।
আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দিবাগত মধ্য রাতে কলাপাড়া থানায় মামলাটি (নং-১৭) রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় একই এলাকার জয়নাল মৃধা (৩৫), তাইফুর ইসলাম সোহেল (৩০), সুজন (২৫), সো হাসান (২৫) এর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ছোট বালিয়াতলীর ঘটনা। মামলায় বলা হয়েছে, ৩০ জুন রাত সাড়ে আট টা থেকে সাড়ে নয়টায় ওই কিশোরীকে আসামিরা ধর্ষণ শেষে হত্যা করে মৃতদেহ বাড়ির সামনের পুকুর পাড়ে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। মৃত কিশোরীর গলায় রক্তাক্ত আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যৌনাঙ্গে রক্তাক্ত ক্ষত রয়েছে। বুকে স্পর্শকাতর অঙ্গে ক্ষত দাগ রয়েছে।
ধর্ষকদের কথা বলে দেওয়ার ভয় দেখে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি এক অসুস্থ পড়শিকে দেখতে বাইরে গিয়েছিলেন। তার ফিরতে দেরি দেখায় মেয়ে তাকে খোঁজতে ঘর থেকে বের হলে পাষন্ডরা এমন নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটনায়। পরে বাড়ি ফেরার পথে তিনি মেয়েকে ঝুলন্ত দেখতে পান। ওই কিশোরীর মা হালিমা বেগম মামলায় আরও উল্লেখ করেন, তার স্বামী বাহার সিকদার ঢাকায় কাজ করতেন। বাড়িতে থাকতেন না। একমাত্র মেয়ে, এক ছেলে ও তার মাকে নিয়ে ছোটবালিয়াতলী গ্রামের ওই বাড়িতে বসবাস করতেন। একই পথে আসামিদের সঙ্গে চলাচলের পথ। বিভিন্ন সময় বখাটে তাইফুর ইসলাম সোহেল হালিমাকে কুপ্রস্তাব দিত। এতে রাজি না হওয়ায় ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর একবার মারধর করা হয়। এ নিয়ে মামলা করলে ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর আরও এক দফা (হালিমাকে) মারধর করা হয়। এখানেই শেষ নয়, এরপওে হালিমার স্কুলগামী ওই কিশোরী মেয়েকেও স্কুলে যাওয়া আসার সময় উত্যক্ত করত আসামিরা। স্কুলে যাওয়া বন্ধের উপক্রম হয়। এর প্রতিবাদ করায় মেয়ের বাবা তার স্বামীকেও ২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট মারধর করা হয়। এ ঘটনায় সেনাক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে হালিমা উল্লেখ করেছেন। এরপর কখনো মোবাইলে কখনো সামনাসামনি আসামিরা কুপ্রস্তাব দিত। প্রচন্ডভাবে উত্যক্ত করে আসছিল। হালিমার দাবি তারা মা-মেয়ে ঘরের বাইরে কিংবা ভিতরে অনিরাপদ হয়ে পড়েন। সবশেষ পালাক্রমে ধর্ষণ করে তার মেয়েকে হত্যা করা হলো।
হালিমা জানান, ময়না তদন্তের রিপোর্ট, ভ্যাজাইনাল সোয়াব, রক্তমাখা জামা-পায়জামা, ওড়না জব্দ করা হয়েছে। ডিএনও রিপোর্ট করা হোক। তিনি সঠিক বিচার দাবি করেন। পাশাপাশি তার নিরাপত্তা দাবি করেন। এামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাপাড়া থানার ওসি মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম জানান, আদালতের নির্দেশে এজাহার হিসেবে গণ্য হয়েছে। এ বিষয় ইতিপূর্বে একটি অপমৃত্যুর মামলা রয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।