ঢাকা , রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আমি নাকি বিয়ে নিয়ে খুব প্রেশার দিই ওকে নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানকে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন খুলনায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে টিডিপির প্রশংসনীয় উদ্যোগ: স্বেচ্ছাশ্রমে সুইজগেট খাল পরিষ্কার আনসার ভিডিপি'র মহাপরিচালকের শফিপুর আনসার ভিডিপি একাডেমি পরিদর্শনে রাজশাহীতে ঋণের দায়ে ও খাওয়ার অভাবে চার মৃত্যু, ধার করে চল্লিশা ক্যাটরিনাকে বিয়ের আগে রাধিকার সঙ্গে সম্পর্ক? অভিনেত্রীর বা়ড়ি থেকে পাওয়া গেল ভিকির বিশেষ জিনিস রাশিয়া থেকে তেল কিনে যাচ্ছে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের সদস্যেরাও! পাকিস্তান, চিনের আকাশ হামলা ঠেকাতে থ্রিডি রেডার পেল নৌসেনা, স্পেনের সহযোগিতায় বানাল টাটা শতায়ুর সংখ্যায় লাখ ছুঁইছুঁই জাপানে, নতুন তথ্য প্রকাশ করল সরকার! বেশি দিন বাঁচার রহস্য কী? শাহরুখ কন্যা সুহানার ২ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ভিডিও, রইল নায়িকা রাধিকার পর্ন ভিডিও এখন বাজারে নোয়াখালীতে ৪২৫ কচ্ছপ উদ্ধার মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ১০ শাহজাদপুরে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সেলিম রেজা গ্রেফতার ফেনীতে দেশীয় অস্ত্রসহ ৬ ডাকাত গ্রেপ্তার, ৪টি চোরাই গরু উদ্ধার গাছ প্রিয় রাণীশংকৈলের করিমুল রাজশাহীতে প্রাথমিক শিক্ষায় অচলাবস্থা: এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ, ব্যালট বাক্সের নমুনা তৈরি রাজশাহীতে ২৪ লাখ টাকার স্বর্ণলংকার উদ্ধার; নারী-সহ দুই চোর গ্রেফতার গোদাগাড়ী খাদ্য গুদামে নিম্নমানের চাল মজুদের অভিযোগ

বান্দরবানের বগালেক সবচেয়ে উঁচু স্বচ্ছ পানির আধার

  • আপলোড সময় : ২০-০৮-২০২৫ ১২:৩৯:৫৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২০-০৮-২০২৫ ১২:৩৯:৫৮ অপরাহ্ন
বান্দরবানের বগালেক সবচেয়ে উঁচু স্বচ্ছ পানির আধার বান্দরবানের বগালেক সবচেয়ে উঁচু স্বচ্ছ পানির আধার
বান্দরবানের বগালেক বা বগাকাইন লেক হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু স্বচ্ছ পানির একটি প্রাকৃতিক হ্রদ। একে দ্য লেক অব মিস্ট্রি বা ড্রাগন লেকও বলা হয়ে থাকে। কেওকারাডং পর্বতের গা ঘেঁষে থাকা এই লেকের সৃষ্টি ও ইতিহাস নিয়ে বেশ কিছু লোককথা প্রচলিত আছে।

বান্দরবানের রুমায় অবস্থিত বগালেক বা বগাকাইন লেকের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এটি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি। ভূতত্ত্ববিদদের মতে, প্রায় ২০০০ বছর আগে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ বা উল্কাপাতের ফলে সৃষ্ট একটি বিশাল গর্তে বৃষ্টির পানি জমে এই হ্রদের সৃষ্টি হয়। এর চার পাশে উঁচু পাহাড় এবং ঘন বন থাকায় এটি একটি স্বতন্ত্র ইকোসিস্টেম তৈরি করেছে। ভূতাত্ত্বিকদের মতে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বগালেকের উচ্চতা প্রায় ১২৪৬ ফুট।

তবে স্থানীয়দের মতে, এর উচ্চতা প্রায় ২৪০০ ফুট হতে পারে। বগালেকের রহস্য শুধু এর উচ্চতায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর গভীরতা এবং পানির রং পরিবর্তনের পেছনেও নানা লোককথা প্রচলিত আছে। এই লেক সম্পর্কে সবচেয়ে প্রচলিত গল্প হলো, এক সময় বান্দরবানে একটি চোঙাকৃতির পাহাড় ছিল। পাহাড়ের পাদদেশে বাস করত ম্রো, বম, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরাসহ আরও কিছু উপজাতি। হঠাৎ করে গ্রামের গবাদিপশু এমনকি শিশুরাও উধাও হতে থাকে। দুশ্চিন্তায় পড়েন গ্রামবাসী।

পরে গ্রামবাসী দেখতে পায়, পশুসহ শিশুদের সর্বশেষ পায়ের ছাপ দেখা যাচ্ছে ওই চোঙা আকৃতির পাহাড়ে। এরপর গ্রামবাসী পাহাড়ের মাথায় উঠে দেখে যে পাহাড়টির পাদদেশে বসে আছে বিশাল এক ড্রাগন। স্থানীয়রা তাকে হত্যা করলে তার দেহাবশেষ একটি গর্তে পরিণত হয় এবং সেখান থেকে আগুনের ফুলকি ও ধোঁয়া বের হতে থাকে। একসময় সেই গর্তে পানি জমে বর্তমানের বগালেকে পরিণত হয়। এই লোককথা থেকেই এর নামকরণ ‘বগালেক’ হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।

আরও কথিত আছে যে, বগালেকটি ছিল একটি সমৃদ্ধ ম্রো গ্রাম। গ্রামের পাশে একটি সুড়ঙ্গে বড় আকারের সাপ থাকত। একদিন ওই সাপ গ্রামবাসী ধরে খেয়ে ফেলে। সাপ খাওয়ায় নাগরাজার প্রতিশোধের বসে গ্রামবাসীসহ গ্রামটি দেবে গিয়ে বগালেকের সৃষ্টি হয়। এখনো অনেক বম, ম্রোর বিশ্বাস হ্রদের গভীরে থাকা নাগরাজ লেজ নাড়ালে হ্রদের পানি ঘোলাটে হয়ে ওঠে।

স্থানীয়রা জানান, বগালেকের পানি অত্যন্ত সুপেয় এবং লেকের জলে প্রচুর শ্যাওলা, শালুক, শাপলা ও অন্যান্য জলজ উদ্ভিদ এবং প্রচুর মাছও রয়েছে। এই লেকের তিন দিকই পাহাড়বেষ্টিত। এর গভীরতা হচ্ছে ৩৮ মিটার (১২৫ ফুট)। এটি সম্পূর্ণ আবদ্ধ একটি লেক। এখান থেকে পানি বের হতে পারে না, আবার কোনো পানি ঢুকতেও পারে না। এর আশপাশে পানির কোনো দৃশ্যমান উৎসও নেই। তবে হ্রদ যে উচ্চতায় অবস্থিত তা থেকে ১৫৩ মিটার নিচে একটি ছোট ঝরনা আছে। যা বগাছড়া নামে পরিচিত।

বগালেকের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রহস্য হলো পানির রং বদলানো। অর্থাৎ বছরের বিভিন্ন সময়ে এই লেকের পানির রং বদলে যায়। কখনো ঘোলাটে, কখনো নীল, আবার কখনো সবুজ দেখায়। এর কারণ হলো হ্রদের তলদেশে থাকা উষ্ণ পস্রবন এবং বিভিন্ন খনিজের উপস্থিতি। এই প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্ট লেকটি পর্যটকদের কাছে একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। স্থানীয়দের ধারণা, এই হ্রদের আশপাশে দেবতারা বাস করেন। এজন্য তারা অনেকেই আবার পূজাও করেন।

রহস্যময় উপকথা এবং অকল্পনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা বগালেক বা বগাকাইন লেককে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থানে পরিণত করেছে। ট্রেকিং এবং ক্যাম্পিংয়ের জন্য দেশের সবচেয়ে পরিচিত একটি স্থান জনপ্রিয়তা লাভ করেছে লেকটি। রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, বগালেক বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে অন্যতম। যান্ত্রিক জীবন ছেড়ে যারা পাহাড়ি প্রাকৃতিক পরিবেশে এসে নিরিবিলি কিছুটা সময় কাটাতে চায় তাদের জন্য এই লেকটি। তবে অবশ্যই দিকনির্দেশনা মেনে গাইডকে সঙ্গে নিয়ে আসবেন।

যেভাবে যাওয়া যাবে

বগালেকে যাওয়ার জন্য কয়েকটি ধাপে ভ্রমণ করতে হয়। কারণ এটি একটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকা। প্রথমে দেশের যে কোনো স্থান থেকে বান্দরবান জেলা শহরে যেতে হবে। তারপর বান্দরবান শহর থেকে রুমা বাজারে যেতে হবে। লোকাল বাস, অথবা চান্দের গাড়ি (জিপ) ভাড়া করে যাওয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই রুমা বাজার থেকে নিবন্ধিত গাইড নিয়ে যেতে হবে এবং এটি বাধ্যতামূলক।

এছাড়া বগালেক যেতে হলে কিছু সতর্কতাও মানতে হবে। বর্ষাকালে রাস্তা খারাপ থাকলে গাড়ি সরাসরি বগালেক পর্যন্ত যেতে পারে না। সেক্ষেত্রে গাড়ির রাস্তা শেষ হওয়ার পর আপনাকে হেঁটে বগালেক যেতে হতে পারে, যা প্রায় ৬ ঘণ্টার ট্রেকিং। শুকনো মৌসুমে গাড়ি সরাসরি বগালেক পর্যন্ত যেতে পারে।

বগালেকে বিদ্যুৎ নেই, তাই মোবাইলের চার্জার বা পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে রাখতে হবে। রবি এবং টেলিটক ছাড়া অন্য কোনো নেটওয়ার্ক নেই। নিরাপত্তার জন্য আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি অনুলিপি সঙ্গে রাখুন। রাতে থাকার জন্য বগালেকে বেশ কিছু কটেজ বা রিসোর্ট আছে। চাইলে সেখানে থাকা যাবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Rajshahir Somoy

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ, ব্যালট বাক্সের নমুনা তৈরি

মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ, ব্যালট বাক্সের নমুনা তৈরি