ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫ , ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রাজশাহী জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে বাগমারায় নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত রাণীনগরে রেলের উঁচু-নিচু রাস্তায় ঘটছে দুর্ঘটনা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় জিম্মি, শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টা’র অভিযোগে ভুক্তভোগী’র সংবাদ সম্মেলন! ট্রাভেল এজেন্সি আইনের বিতর্কিত ধারা সংশোধনের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন লালপুরের দিয়ার বাহাদুরপুর ও ঈশ্বরর্দীর সাড়াঘাটে অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগ রাকাব-এর (ডিজিএম) আবুল কালামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তে নেমেছে দুদক স্ত্রীর পিঁড়ির আঘাতে স্বামীর মৃত্যু আনসার বাহিনীর জন্য ১৭ হাজার শর্টগান কিনছে সরকার দেড় বছরে এত সাফল্য কোনো সরকার করতে পারেনি: প্রেস সচিব গণভোটের ব্যালটে কী ধরনের প্রশ্ন থাকবে, তার খসড়া প্রকাশ সব্জি কাটার কাঠের বোর্ডটি পরিষ্কার করার সময় ৫ জিনিস ভুলেও ব্যবহার করবেন না রান্নার একটি ভুলেই ঝুঁকি বাড়ছে ক্যানসারের! লিথুয়ানিয়াকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে ডাচরা রাখাইনে আরাকান আর্মির হামলায় ৩০ জান্তা সেনা নিহত অক্টোবরে সড়কে ঝরেছে ৪২৩ প্রাণ: বিআরটিএ রাজধানীতে মাসে গড়ে ২০টি হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি রাজশাহী মহানগরীতে ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট সহ ইব্রাহিম গ্রেফতার নগরীতে পুলিশের অভিযানে আটক ২৪ আবুধাবি টি–টেনের প্রথম দিনেই মাঠে নামছেন তাসকিন পাঁচবিবিতে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

রায় শুনে অশ্রুসিক্ত আবু সাঈদের বাবা-মা, দ্রুত কার্যকরের দাবি

  • আপলোড সময় : ১৮-১১-২০২৫ ০২:০৪:৫৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৮-১১-২০২৫ ০২:০৪:৫৯ অপরাহ্ন
রায় শুনে অশ্রুসিক্ত আবু সাঈদের বাবা-মা, দ্রুত কার্যকরের দাবি রায় শুনে অশ্রুসিক্ত আবু সাঈদের বাবা-মা, দ্রুত কার্যকরের দাবি
পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রাম। প্রতিদিনের মতো আজ সকালেও ঘুম থেকে উঠে মাটির ঘরের মেঝে এবং উঠোন ঝাড়ু দিচ্ছিলেন জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম। বারবার আনমনা হচ্ছিলেন তিনি। অন্যদিকে, আবু সাঈদের কবরের পাশে বসে আনমনে কি যেন ভাবছিলেন তার বাবা এবং ভাইয়েরা। জুলাই বিপ্লবের প্রথম মামলার রায় হবে, সেই ভাবনাই যেন ঘুরপাক খাচ্ছিল তাদের মনে। রায় উপলক্ষ্যে সকাল থেকে অনেক সহযোদ্ধা এবং ভিড় ভিড় জমান কবরের পাশে। 

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডাদেশ শোনার সাথে সাথেই যেন বুকটা কিছুটা হালকা হল বাবা-মায়ের। সেইসাথে, খুশির অশ্রু ঝড়লো পরিবার, এলাকাবাসী এবং সহযোদ্ধাদের। তবে এ রায়ে সন্তুষ্ট হলেও, কার্যকর করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে রায় ঘোষণার সাথে সাথে প্রতিক্রিয়া জানান আবু সাঈদের বাবা-মা, পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী ও সহযোদ্ধারা। 

শহীদ আবু সাইদের মা মনোয়ারা বেগম জানান, আমার সন্তান না থাকার যে শূন্যতা সেটা হয়তো পূরণ হবে না। কিন্তু শেখ হাসিনার ফাঁসির যে হুকুম হল, তাতে আমি খুশি। শুনেছি হাসিনা ভারত পালিয়ে গেছে। সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে। আমি যদি সেটা দেখে যেতে পারি, তাহলেই আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে। যদি ফাঁসি কার্যকর করা না হয়, তাহলে আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে না।

শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন জানান, শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের অন্য এমপি মন্ত্রীরা যে শুধু আমার ছেলেকে খুন করেছে সেটা নয়। দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে তারা গুলি করে হত্যা করেছে। ১৭ বছরে হাজার হাজার মানুষ গুম-খুন করেছে। শুধু ফাঁসির রায় দিলে হবে না। আমি চাই দ্রুতগতিতে ভারত থেকে তাকে সরকার ফিরিয়ে আনুক এবং ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করুক। তাহলে হাজার হাজার শহীদ পরিবারে কিছুটা হলেও স্বস্তি আসবে। 

শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন জানান, আমরা কয়েক দিনে আওয়ামী লীগের তাণ্ডব দেখেছি। তারা বিভিন্ন স্থানে বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে। বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করেছে। তারা আগুন সন্ত্রাস থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট। এই রায় হওয়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের লোকজন শহীদ আহত এবং জুলাইযোদ্ধাদের পরিবারগুলোর প্রতি আরো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। তারা তাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালাতে পারে। আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছি। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, শহীদ ও আহত জুলাইযোদ্ধাদের এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। 

শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার বাদী বড় ভাই রমজান আলী জানান, শুধু রায় ঘোষণা করলেই চলবে না। রায় কার্যকর করতে হবে। রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আমরা এভাবে খুশি হতে পারব না। এই রায় ঘোষণার পর আমাদের শহীদ আহত এবং জুলাই যোদ্ধা পরিবারের সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। কারণ এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের লোকজন বিভিন্ন জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ ধ্বংস এবং উপদেষ্টাদের বাসার সামনে নাশকতার চেষ্টা করেছে। সংগত কারণে তারা শহীদ পরিবার গুলোর প্রতি খুবই ক্ষুব্ধ। তাই আমরা চাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের ওপর বিশেষ নজর দিক। তা না হলে তারা নানাভাবে আমাদের জীবন অনিরাপদ করে তুলবে। 

অপরদিকে, রায় ঘোষণার পর পীরগঞ্জের বাবনপুরে আবু সাঈদের কবরের পাশে মিষ্টি বিতরণ করেছে এলাকাবাসী। 

এলাকাবাসী ও শহীদ আবু সাঈদের সহযোদ্ধা মাসুম বিল্লাহ জানান, রায় ঘোষণার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। তাদের টার্গেট জুলাইযোদ্ধা, শহীদ এবং আহতদের পরিবারগুলো। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার না গেলে আওয়ামী লীগ গুপ্তভাবে সংগঠিত হয়ে বড় ধরনের অঘটন ঘটাতে পারে।

রায় ঘোষণার পর সন্তোষ প্রকাশ করে আনন্দ মিছিল এবং মিষ্টি বিতরণ হয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায়। সেখানেও সন্তুষ্টি প্রকাশ করে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানানো হয়। 

শহীদ আবু সাইদের সাথে আন্দোলনকারী রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন জানান, এই রায়ে আমরা তখন খুশি হব যখন হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা হবে। যদি সেটা সরকার করতে ঢিলামি করেন তাহলে আবু সাঈদের সহযোদ্ধারা আবারও মাঠে নামতে বাধ্য হবে।

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডা. শওকত আলী জানান, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রথম রায়। আমরা চাই অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা হোক। এই রায় কার্যকর করা না গেলে আবারও দেশ বড় ধরনের সংকটে পড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। 

তবে রায়ে সন্তুষ্ট হলেও নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন আবু সাঈদের পরিবার। এখনো আওয়ামী লীগের লোকজন এবং দোসররা সক্রিয় বলে জানান তারা। সেইসাথে, রায় হওয়ার কারণে তারা তারা জুলাইয়ে আহত শহীদ এবং আহত যোদ্ধাদের ওপর আরো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বলে মনে করছেন তারা। তাই আহত ও শহীদ পরিবারগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারকে যথাযথ উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান সকলেই। 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Admin News

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
ট্রাভেল এজেন্সি আইনের বিতর্কিত ধারা সংশোধনের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন

ট্রাভেল এজেন্সি আইনের বিতর্কিত ধারা সংশোধনের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন