কল্যাণময় জীবনের জন্য যে দোয়া পড়বেন

আপলোড সময় : ১৭-০৬-২০২৫ ০২:৫৮:৪২ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৭-০৬-২০২৫ ০২:৫৮:৪২ অপরাহ্ন
একজন মুসলমানের যেমন দুনিয়াদার হওয়ার সুযোগ নেই, শুধু দুনিয়ার জীবন-সর্বস্ব চিন্তা ভাবনা, কাজকর্ম করার সুযোগ নেই, দুনিয়াবিরাগী হওয়ার শিক্ষাও ইসলাম দেয় না। ইসলাম আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বলে, পাথেয় সংগ্রহ করতে বলে দুনিয়ায় উত্তমরূপে জীবন যাপনের মাধ্যমে, দুনিয়া ত্যাগ করে বা দুনিয়ার জীবনে, সংসারে অমনোযোগী হওয়ার মাধ্যমে নয়। দুনিয়ার জীবনে দায়িত্বশীলতা, স্ত্রী-সন্তানদের প্রতি ভালোবাসা, তাদের ভরণ-পোষণের ব্যয় নির্বাহের জন্য মানুষ যে পরিশ্রম করে, উপার্জন করে আল্লাহর কাছে তাও নেক কাজ হিসেবেই গণ্য হয়।

তাই দোয়া করার সময়ও আখেরাতের কল্যাণের পাশাপাশি দুনিয়ার কল্যাণও প্রার্থনা করা উচিত। এটাই সুন্নত ও নবিজির (সা.) শিক্ষা।

আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ‘জাওয়ামে’ অর্থাৎ দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ বা সব মুসলমানদের কল্যাণ প্রার্থনা অন্তর্ভুক্ত থাকে এমন দোয়া পছন্দ করতেন এবং এ রকম দোয়া ছাড়া অন্যান্য দোয়া পরিহার করতেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১৪৮২)

নবিজি (সা.) থেকে বর্ণিত এমন অনেক দোয়া আছে যেগুলোতে তিনি আখেরাত ও দুনিয়ার জীবনের কল্যাণ চেয়েছেন। এখানে আমরা এ রকম একটি দোয়া উল্লেখ করছি:

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দোয়া করতেন,

اللَّهُمَّ أَصْلِحْ لِي دِينِي الَّذِي هُوَ عِصْمَةُ أَمْرِي وَأَصْلِحْ لِي دُنْيَايَ الَّتِي فِيهَا مَعَاشِي وَأَصْلِحْ لِي آخِرَتِي الَّتِي فِيهَا مَعَادِي وَاجْعَلِ الْحَيَاةَ زِيَادَةً لِي فِي كُلِّ خَيْرٍ وَاجْعَلِ الْمَوْتَ رَاحَةً لِي مِنْ كُلِّ شَرٍّ

আল্লাহুম্মা আস্‌লিহ লী দীনিল্লাযী হুওয়া ইস্‌মাতু আম্‌রী ওয়া আস্‌লিহ লী দুন্ইয়ায়া ইয়াল্লাতী ফীহা মা’আশী ওয়া আস্‌লিহ লী আখিরাতিল্লাতী ফীহা মা’আদী ওয়াজ্’আলিল হায়াতা যিয়াদাতান লী ফী কুল্লি খয়রিন ওয়াজ্’আলিল মাওতা রাহাতান লী মিন কুল্লি শাররিন।

অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আমার দীনকে ঠিক করে দিন, যা ঠিক করে দেবে আমার কার্যাবলী। আপনি ঠিক করে দিন আমার দুনিয়া, যাতে রয়েছে আমার (বর্তমান) জীবন। আপনি ঠিক করে দিন আমার আখেরাত, যেখানে আমি ফিরে যাবো। আমার হায়াত বা আয়ুষ্কাল প্রত্যেক কল্যাণকর কাজের জন্য বাড়িয়ে দিন, আর আমার মৃত্যুকে আমার জন্য প্রত্যেক অকল্যাণ থেকে শান্তিস্বরূপ করুন। (সহিহ মুসলিম: ২৭২০)

নবিজির (সা.) শেখানো এই দোয়াটি আমরা বেশি বেশি পড়তে পারি দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ, হায়াত বৃদ্ধি ও সুন্দর মৃত্যুর জন্য।

আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা, প্রার্থনা করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। দোয়ার মাধ্যমে যেমন আল্লাহর আনুগত্য ও রহমত লাভ করা যায়, আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচা যায়, শয়তানের ধোঁকা ও দুনিয়াবি বিপদ-আপদ থেকে বেঁচে থাকা যায়, একইভাবে দোয়ার মাধ্যমে ঈমানও প্রকাশ পায়। আল্লাহর প্রতি বান্দার ভরসা ও নির্ভরতা প্রকাশ পায়। বান্দার বিনয় ও অহংকারহীনতা প্রকাশ পায়। আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেছেন, তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমার কাছে দোয়া কর, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব। যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত হতে বিমুখ তারা অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে। (সুরা গাফির: ৬০)

মুমিন আল্লাহ তাআলার কাছে যে কল্যাণকর দোয়া করে, তা কখনও ব্যর্থ হয় না। দোয়ার বদলা আল্লাহ তাআলা অবশ্যই দান করেন। তবে বিভিন্ন সময় দোয়ার প্রতিদান বিভিন্ন রকম হয়। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যখন কোনো মুমিন ব্যক্তি এমন দোয়া করে যে দোয়াতে কোনো পাপ ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয় নেই, তাহলে আল্লাহ তিন পদ্ধতির কোনো এক পদ্ধতিতে তার দোয়া কবুল করে নেন; হয়তো যে দোয়া সে করেছে তা ওইভাবেই কবুল করেন, তার দোয়ার প্রতিদান আখেরাতের জন্য সংরক্ষণ করেন অথবা এ দোয়ার মাধ্যমে তার ওপর আগত কোনো বিপদ তিনি দূর করে দেন।

এ কথা শুনে সাহাবিরা বললেন, আমরা তাহলে অধিক পরিমাণে দোয়া করতে থাকবো। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা যত দোয়াই করবে আল্লাহ তার চেয়ে অনেক বেশি কবুল করতে পারেন। (বুখারি ফিল আদাবিল মুফরাদ)

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]