মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার ভয়াবহ শাস্তি

আপলোড সময় : ২৩-০৬-২০২৫ ০৪:২৩:৩১ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৩-০৬-২০২৫ ০৪:২৩:৩১ অপরাহ্ন
কোরআন-সুন্নাহর আলোকে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া সম্পূর্ণ হারাম। ইসলামে সাক্ষ্য দেয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আদালত ও সামাজিক বিচার-আচারে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে যেকোনো বিষয়ের সমাধান করা হয়। বর্তমানে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। অথচ এটি এক জঘন্য অপরাধ।

রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামাম বলেন, আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় কবিরা গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না?’ এ কথাটি তিনি তিনবার বললেন, (সবাই বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, অবশ্যই বলেন। তিনি বললেন, ‘আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা, মা-বাবার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। (বুখারি: ২৬৫৪) 

মিথ্যা সাক্ষ্য ভয়াবহ গুনাহের কাজ
মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার কারণে ব্যক্তিকে জাহান্নামে যেতে হবে। হজরত ইবনে ওমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামাম বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন মিথ্যা সাক্ষ্যদাতার জন্য আল্লাহ তাআলা জাহান্নামের ফয়সালা না দেয়া পর্যন্ত, সে তার পা দুটি নড়াতে পারবে না। (ইবনে মাজাহ: ২৩৭৩)
 
মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার কারণে ব্যক্তির নেক আমল নষ্ট হয়ে যায়। রসুলুল্লাহ রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা এবং সে অনুযায়ী আমল করা আর মূর্খতা পরিহার করল না; আল্লাহর কাছে তার পানাহার বর্জনের কোনো প্রয়োজন নেই। (বুখারি: ১৯০৩)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামাম বলেন, ‘কিয়ামতের আগে ব্যক্তিবিশেষকে নির্দিষ্ট করে সালাম দেয়ার প্রচলন ঘটবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। ফলে স্বামীর ব্যবসায় স্ত্রীও সহযোগিতা করবে। রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়তা ছিন্ন করা হবে। মিথ্যা সাক্ষ্যদানের প্রচলন হবে এবং সত্য সাক্ষ্য গোপন করা হবে, লেখনীর প্রসার ঘটবে। (মুসনাদে আহমদ: ৩৮৭০)

অন্য আরেক হাদিসে আছে, নবী মুহাম্মদ রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামাম বলেছেন, হে মানুষ! জেনে রেখো, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়াকে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করার মতো গণ্য করা হয়েছে। অতঃপর তিনি কোরআনের এ আয়াতেন অংশটি পড়েন, ‘তোমরা মূর্তিপূজার মতো গর্হিত কাজ এবং মিথ্যা বলা পরিহার কর।’ (তিরমিজি)

মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া যেমন অপরাধ, প্রয়োজনে সত্য সাক্ষ্য গোপন করাও তেমন অপরাধ। এজন্য পবিত্র কোরআনে সত্য সাক্ষ্য গোপন না করার নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না। যে ব্যক্তি তা গোপন করবে, তার অন্তর পাপী সাব্যস্ত হবে। তোমরা যা করো, আল্লাহ তার খবর রাখেন। (সুরা আল বাকারা : ২৮৩) 

সত্য সাক্ষ্য গোপন করা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ারই নামান্তর। যেহেতু উভয়টিই নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে। যখন কোনো ব্যক্তি মিথ্যা সাক্ষ্যের কারণে অন্যায়ভাবে ফেঁসে যায়, তখন সত্য সাক্ষ্য দিয়ে তাকে উদ্ধার করা নৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য পবিত্র কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে,
 
হে ইমানদাররা, তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে নিজেদের সত্যের সাক্ষী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করো- যদিও তা তোমাদের নিজেদের, তোমাদের মা-বাবার কিংবা তোমাদের নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে যায়- চাই সে ধনী হোক কিংবা গরিব হোক (তা দেখার বিষয় নয়)। কারণ আল্লাহর সন্তুষ্টি তাদের চেয়ে বড় বিষয়। সুতরাং তোমরা ন্যায়বিচারের সময় নিজেদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করো না। যদি তোমরা পেঁচানো কথা বল কিংবা (সত্য সাক্ষ্য দেওয়া থেকে) বিরত থাকো- তাহলে জেনে রেখো, তোমরা যা কিছু কর আল্লাহর তার খবর রাখেন।’ (সুরা আন নিসা: ১৩৫)

মিথ্যা সাক্ষ্যের মাধ্যমে দুনিয়াতে কিছু সুযোগ-সুবিধা হয়তো লাভ করা যাবে, কিন্তু আখিরাতে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হবে। যারা সামান্য মূল্যের বিনিময়ে আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার এবং নিজেদের শপথকে বিক্রি করে দেয়, আখেরাতে তাদের কোনো অংশ থাকবে না। আল্লাহতায়ালা কিয়ামতের দিন তাদের দিকে তাকবেন না। তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না এবং তাদের গোনাহ থেকে পবিত্র করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সুরা আল ইমরান: ৭৭)

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]