খুলনায় টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত

আপলোড সময় : ০৮-০৭-২০২৫ ০৯:১৩:২৩ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৮-০৭-২০২৫ ০৯:১৩:২৩ অপরাহ্ন
খুলনায় টানা ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নগরীর অধিকাংশ সড়ক ও নিম্নাঞ্চল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি ঢুকে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী। জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতেও সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। এদিকে, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশনের নেওয়া প্রায় ৮২৪ কোটি টাকার প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) সূত্র জানায়, ‘খুলনা মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর একনেকে অনুমোদন পায়। ৮২৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার প্রকল্পের আওতায় গত সাত বছরে ১৯৮টি নালা পুননির্মাণ ও ময়ূর নদীসহ ১০টি খাল খনন করেছে সিটি করপোরেশন। ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত প্রকল্পে প্রায় ৬৩৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রকল্পের সব কাজ শেষ না হওয়া ও পরিকল্পনার ঘাটতির কারণে এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

নগরবাসীর অভিযোগ, পানি নিষ্কাশনের মূল মাধ্যম হিসেবে পরিচিত নগরীর ২২টি খাল এখনো দখলমুক্ত ও সংস্কার করা হয়নি। নালা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। অনেক জায়গায় রাস্তার চেয়ে নালা উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। জলাধার ভরাট হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর বিকে রায় রোড, ডাকবাংলো মোড়, শামসুর রহমান সড়কের বাইতিপাড়া মোড়, আহসান আহমেদ রোড, খানজাহান আলী সড়কের রয়্যাল মোড়, দোলখোলা মোড়, বয়রা পুলিশ লাইন, নতুন রাস্তা মোড়, নতুন বাজার, টুটপাড়া, লবণচরা এলাকা হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। যেসব সড়কে উন্নয়নকাজ চলছে, সেখানে ভোগান্তি আরো বেড়েছে। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কর্মজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে অফিসগামী মানুষ ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ছিল সবচেয়ে বেশি।

সরকারি সিটি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সৈকত হাসান বলেন, রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। রিকশা ভাড়া বেশি দিয়ে আসতে হয়েছে।

রিকশাচালক মিলন মিয়া বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই নগরীর বয়রা এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। টানা বৃষ্টির কারণে সোমবার থেকে রাস্তাঘাটে মানুষ খুব কম বের হচ্ছে। টাকা-পয়সা আয় না হওয়ায় এ দুইদিন খুব কষ্টে আছি।
খুলনা নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব বাবুল হাওলাদার বলেন, ভৈরব ও রূপসা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নদীতে নামতে পারছে না। উল্টো জোয়ারের সময় পানি শহরের দিকে উঠে আসছে। পানি নিষ্কাশনের মূল মাধ্যম হিসেবে পরিচিত নগরীর ২২টি খাল এখনো দখলমুক্ত বা সংস্কার হয়নি। নালা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। অনেক জায়গায় রাস্তার চেয়ে নালা উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। জলাধার ভরাট হওয়ায় দ্রুত জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে।

কেসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কোহিনুর জাহান বলেন, খুলনা শহর বেশ নিচু। জোয়ারের সময় পানি ঢোকে। আবার যেসব জায়গা দিয়ে পানি সরার কথা সেখানে পূর্ত বিভাগের কাজ চলছে। রাস্তার কাজের জন্য যেসব বাঁধ দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর কিছু কিছু তারা কেটে দিয়েছেন, যাতে পানি সরতে পারে। বৃষ্টির মধ্যে পূর্ত বিভাগের কাজ না করার বিষয়টি প্রশাসককে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নালার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পাম্প স্টেশন ও ¯øুইসগেট সংস্কারের কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে জলজট অনেকটা কমে যাবে।

খুলনা আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ মিজানুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে গত সোমবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত খুলনায় ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ বুধবার থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]