তানোরে যাঁতাকল শিল্প বিলুপ্তপ্রায়

আপলোড সময় : ১৭-০৭-২০২৫ ০১:৫৯:০১ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৭-০৭-২০২৫ ০১:৫৯:০১ অপরাহ্ন
রাজশাহীর তানোরে কালের বিবর্তন ও আধুনিকতায় বিলুপ্তপ্রায় এক সময়ের জনপ্রিয় যাঁতাকল শিল্প। অথচ একটা সময় গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরে  যাতাঁকলের ব্যবহার হতো। রবি শস্যের বিভিন্ন ডাল যেমন মসুর ডাল, খেসারি ডাল,মুগ ডাল, জব,গমের ছাতু ও চালের আটা ইত্যাদি ভাঙ্গা হতো এই যাঁতাকল দিয়ে। এছাড়াও গম-কালাই ও ছোলা গুড়া করা হতো এই যাতাঁকলের সাহায্যে। যাতাঁকল হলো দুটি গোলাকার পাথর। একটি পাথরের উপর আরেকটি বসিয়ে ঘোরানো হয়।মাঝখানে একটি ছিদ্র থাকে। এই ছিদ্রে ডাল,কালাই, ছোলা ইত্যাদি দিয়ে ঘুরালে এসব ভেঙে যেতো।এরপর কুলো দিয়ে খোসা থেকে এসব আলাদা করে নেওয়া হয়।

যাতাঁকলের ব্যবহার বয়োজৈষ্ঠদের কাছে শোনা যায় এক সময় গ্রামের ভিতর ঢুকলেই প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই শোনা যেতো যাঁতাকলে রবিশস্য ভাঙ্গার শব্দ। প্রতিটি বাড়িতেই ছিল যাতাঁকল। কিন্তু এখন আধুনিক যুগে আর এইরকম শব্দ শোনা যায় না। যেখানে মানুষের বসতি ছিল সেখানেই ছিল এই রবিশস্য ভাঙ্গার যাতাঁকল। আগেকার দিনে নববধূরা স্বামীর ঘরে এসেই শাশুড়ির কথায় ডাল ভাঙতে বসতো। কিন্তু এখন আর এই রকম যাতার ব্যবহার নেই। যাতাঁকল শিল্প এখন শুধুই স্মৃতি।

বিলুপ্তর পথে ঐতিহ্যবাহী যাতাঁকল একসময় গ্রামের প্রতিটি ঘরে যাতার ব্যবহার থাকলেও এখন আর এই রকম যাতাঁকলের ব্যবহার দেখা যায় না। প্রযুক্তির প্রসার ও আধুনিকতার ছোয়ায় ঐতিহ্যবাহী এই যাতাঁকল শিল্প বিলুপ্তিপ্রায়। আগে ডাল, ছোলা, কালাই, গম ইত্যাদি ভাঙ্গার জন্য কোনো ইলেকট্রিক যন্ত্র বা মেশিন ছিল না। কিন্তু আধুনিক যুগে ডাল গম ভাঙ্গার জন্য বিভিন্ন রকম ইলেকট্রিক মেশিন ও রাইস মিল গড়ে উঠেছে। যার সাহায্য অল্প সময়েই রবিশস্য ভাঙ্গা হয়।

জানা গেছে, যাতাঁকল এক প্রকার হস্ত চালিত যন্ত্র। জাতাঁকলের ব্যবহার ছিল কষ্টসাধ্য।যাতাঁকলে ডাল গম ভাঙ্গার জন্য প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হতো।শত শত নারী শ্রমিক এই যাতাঁকল শিল্পের  উপর নির্ভরশীল ছিল। প্রাচীন কালে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বিকেল বেলা যাতাঁকল এর ঘ্যাড় ঘ্যাড় শদ্ব শুরু হতো।শুধু ডাল গম এই নয় সেসময় চাউলও গুড়া করে হতো। যাতায় গুড়ো চাউলের গুড়া খেতেও অনেক সুস্বাদু। প্রাচীনকালে বিভিন্ন মেলার আয়োজন করা হতো। আর এই সব গ্রাম্য মেলায় যাতাঁ কিনতে পাওয়া যেত। প্রাচীনকালে যাতাঁকলের ব্যবহার সর্বাধিক থাকলেও আজ এই যাতাঁকল বিলুপ্তপ্রায়। তবে এখানো গ্রামের বিত্তবান শ্রেণির পরিবারগুলো চালের আটা, ছাঁতু, ছোলা-কালাই ডালসহ বিভিন্ন খাদ্যশস্যর প্রাকৃতিক ও নির্ভেজাল স্বাদ নিতে বাড়িতে যাতাঁকল রেখেছেন।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]