তানোরে নিষিদ্ধ চায়না রিং ও কারেন্ট জালে ধ্বংস হচ্ছে দেশীয় মাছ

আপলোড সময় : ১৮-০৭-২০২৫ ০৮:৫০:৫৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৮-০৭-২০২৫ ০৮:৫০:৫৭ অপরাহ্ন
রাজশাহীর চায়না দুয়ারী,রিং ও কারেন্ট জাল দিয়ে নির্বিচারে ছোট-বড় দেশীয় মাছ ধরা হচ্ছে।এতে ধ্বংস হচ্ছে দেশীয় মাছ।‘আমরা মাছে-ভাতে বাঙালি’—এই প্রবাদ এখন যেন শুধুই বইয়ের পাতায়। বাস্তব চিত্র তার উল্টো। দেশের নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয়ে একসময় প্রাচুর্য ছিল দেশীয় প্রজাতির মিঠাপানির মাছের। জলবায়ু পরিবর্তন, খাল-বিল ভরাট, অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার,মাছের আবাসস্থল ধ্বংসসহ নানা কারণে সেই মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। এরসঙ্গে যোগ হয়েছে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি, রিং ও কারেন্ট জালের ভয়াবহ ব্যবহার। বর্তমান বর্ষা মৌসুমে উপজেলার শীব নদী ও অন্যান্য জলাশয়ে অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে এসব জাল। মাছের প্রজনন মৌসুমে মা মাছ ও পোনাসহ সব ধরনের জলজ প্রাণি নিধনে চলছে একপ্রকার ‘মহোৎসব’। এতে দেশীয় মাছের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। 

স্থানীয়রা জানান, লোহার রিংয়ের সঙ্গে মিহি সুতো দিয়ে তৈরি এই জালে আটকা পড়ে শুধু মাছ নয়, শামুক-ঝিনুক, ব্যাঙ, কাঁকড়া, সাপ, কুচিয়াসহ বহু জলজ প্রাণি মারা যাচ্ছে। ফলে মিঠাপানির মাছসহ জীববৈচিত্র্য ভয়াবহ সংকটে পড়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার শীব নদীর গোকুলমথুরা, শীতলীপাড়া, কুঠিপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নদীতে অন্তত ২০-৩০টি চায়না দুয়ারি জাল দিনে-রাতে বসানো হচ্ছে। ৫০-৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই জাল পানির নিচে পাতা থাকায় তা সহজে চোখে পড়ে না। তবে অগভীর পানিতে বসানো জাল ও পুঁতে রাখা খুঁটির মাধ্যমে তার উপস্থিতি বোঝা যায়। মৎস্যজীবী অনিল ও সুকেন বলেন, চায়না দুয়ারী জাল দিয়ে প্রতিদিন যেভাবে বোয়াল, টেংরা,পুঁটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছের পোনা ধরা হচ্ছে, দ্রুত তা বন্ধ করা না হলে এসব দেশীয় মাছ অচিরেই হারিয়ে যাবে।

প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, এসব জালের খোপে আটকা পড়ে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণি আর বের হতে পারে না। পরে জাল তুলে মাছ সংগ্রহের সময় ডিমওয়ালা মাছ, পোনা এবং অন্যান্য প্রাণিও শুকনো ডাঙায় পড়ে মারা যাচ্ছে। এতে করে পুরো বাস্তুতন্ত্রে ধস নামছে।

স্থানীয় এক সময়ের পেশাদার মৎস্যজীবী  মহন্ত বলেন, ‘আগে নদীতে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। এখন চায়না জালের কারণে নদীতে আর মাছ নেই। বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করে ঝালমুড়ি বিক্রি করছি।’

সচেতন মহলের অভিযোগ, উপজেলা মৎস্য বিভাগের নজরদারি নেই বললেই চলে। তারা বলেন, মা মাছের প্রজননকালে অবাধে এই জাল ব্যবহার প্রকৃতিকভাবে মাছের বংশবৃদ্ধিতে বড় বাধা। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল হোসেন বলেন, ‘দেশে মিঠাপানির ২৬০ প্রজাতির মাছ রয়েছে, এর মধ্যে ৬৪টি প্রজাতি হুমকির মুখে। নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জাল ব্যবহারে প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা জাল জব্দ ও ধ্বংসে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি। তবে বেশির ভাগ জাল রাতে বসানো হয় বলে ধরা কঠিন হয়ে পড়ে।তিনি এবিষয়ে সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]