মহানবী (সা.)-এর দুধ মা ছিলেন যে দুই নারী সাহাবি

আপলোড সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০৩:৪০:১৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০৩:৪০:১৫ অপরাহ্ন
তৎকালীন আরবে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুদের দুধ মায়ের কাছে রেখে লালন-পালনের প্রচলন ছিল। উদ্দেশ্য ছিল, শিশুরা যেন গ্রামের সবুজ-শ্যামল পরিবেশে, স্নিগ্ধ হাওয়া ও দূষণমুক্ত পরিবেশে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে পারে। 

মহানবী (সা.) জন্মের পর প্রথমে নিজের মা আমিনার দুধ পান করেন। কিন্তু স্বামী হারানোর শোক এবং সন্তান লালন-পালনের চিন্তায় কিছুদিন পর তার বুকের দুধে স্বল্পতা দেখা দেয়। এ সময় শিশু মুহাম্মদ (সা.)-কে এক সপ্তাহ দুধ পান করিয়েছিলেন আবু লাহাবের আজাদকৃত দাসি সুয়াইবিয়াহ। 

ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। রাসুল (সা.) তাকে অত্যন্ত সম্মান করতেন। মাঝেমধ্যে তার কাছে যেতেন, তার অবস্থা জানতেন এবং প্রয়োজনমতো তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করতেন। হিজরতের পর যখন রাসুল (সা.) মদিনায় চলে যান, তখনো প্রায় সময় তার কাছে নানা জিনিস হাদিয়া পাঠাতেন।

এর কিছুদিন পর রীতি অনুযায়ী শহরের দুধের শিশুদের গ্রহণের জন্য মক্কায় আগমন করেন বনু সাদ গোত্র ধাত্রীরা। ধাত্রীদের একটি কাফেলায় ছিলেন হালিমা সাদিয়া নামের এক নারী। পরবর্তীতে তিনি ইতিহাসে খ্যাতি লাভ করেন মহানবী (সা.)-এর দুধ মা হিসেবে।

দুধ শিশু হিসেবে মুহাম্মদ (সা.)-কে গ্রহণের বিষয়টি নিজেই বর্ণনা করেছেন হালিমা সাদিয়া (রা.)। বলেছেন—

এ বছরটি ছিল দুর্ভিক্ষের। আমি একটি গাধার পিঠে সওয়ার হয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছিলাম। সঙ্গে একটি বয়স্ক উটও। কিন্তু উটের ওলানে কোনো দুধ ছিল না। আমার স্তনেও দুধ ছিল না। তাই আমার দুধের শিশুটি ক্ষুধার জ্বালায় এতো কান্না করছিল যে, এ কারণে আমাদের পুরো রাত নির্ঘুম কাটাতে হয়েছিল।  আমাদের গাধাটিও চলছিল ধীরগতিতে। কাফেলার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছিলাম না আমরা। এভাবেই এক সময় মক্কায় পৌঁছে দুধ শিশু খুঁজতে লাগলাম। 

আমাদের কাফেলার সবাইকে শিশু মুহাম্মদকে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো, কিন্তু এতিম শিশু হওয়ায় কেউ আগ্রহ দেখালো না তাঁকে নিতে। সব ধাত্রীই শিশুর বাবার কাছ থেকে ভালো উপঢৌকন আশা করছিল। তাই সবার ধারণা ছিল, পিতৃহীন এই শিশুর মা, দাদা তেমন কোনো উপঢৌকন দিতে পারবে না। তাই সবাই শিশু মুহাম্মদকে এড়িয়ে যাচ্ছিল।

এদিকে আমার সঙ্গে আসা ধাত্রীদের সবাই নিজের পছন্দমতো দুধ শিশু পেয়ে গেল। কিন্তু আমি কোনো শিশু পেলাম না। খালি হাতেই বাড়িতে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। হঠাৎ, আমি আমার সিদ্ধান্ত বদলে আমার স্বামীকে বললাম, সহযাত্রীদের সঙ্গে একেবারে খালি হাতে ফিরে যেতে আমার খারাপ লাগছে। একেবারে শূন্য হাতে ফিরে যাবার থেকে ওই এতিম শিশুটাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চাই।

আমার স্বামী বললেন, কোনো আপত্তি নেই। নিতে পারো। বলা যায় না, আল্লাহ তায়ালা তার মাঝে হয়তো কল্যাণ রেখেছেন। 

হালিমা বলেন, অন্য কোনো শিশু না পাওয়ার কারণে স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করে আমি শিশু মুহাম্মদকে কোলে নিলাম। এরপর থেকেই শুরু হলো বরকত।

হালিমা সাদিয়া রা.-এর বর্ণনায়, শিশু মুহাম্মদকে কোলে নেওয়ার পর আমার স্তন দুধে ভরে উঠলো। সে নিজে পেটভরে পান করলো। তার দুধভাই আমার নিজের কোলের শিশুটিও দুধ পান করে তৃপ্ত হলো। এরপর তারা দুজনেই ঘুমিয়ে পড়লো। অথচ মক্কায় আসার পথে আমাদের এই সন্তানের ক্ষুধা নিবারণ করতে না পারার কারণে আমরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]