অতিরিক্ত ঘুম রোগবালাই তো বটেই, মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে!

আপলোড সময় : ২৭-০৭-২০২৫ ০২:২১:৪৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৭-০৭-২০২৫ ০২:২১:৪৭ অপরাহ্ন
রাতে ঘুম কম হলে পরের দিন সকাল থেকে চোখেমুখে তার স্পষ্ট ছাপ পড়ে। চোখের নীচে কালি জমে, মাথা ভার হয়ে থাকে, অল্প কাজেই আসে ক্লান্তি। কম ঘুমের এই সমস্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আমাদের জানা। কিন্তু ঘুম যদি বেশি হয়?

মানুষের ঘুমের সময়সূচি নিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক দিন ধরেই কৌতূহলী। সারা দিনে ঠিক কত ক্ষণ ঘুমোনো উচিত, তা নিয়ে অনেকে অনেক রকম মতামত দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি তেমনই একটি গবেষণায় উঠে এসেছে নতুন ধরনের তথ্য। বিজ্ঞানীদের দাবি, কম ঘুমের চেয়েও শরীরের বেশি ক্ষতি করতে পারে বেশি ঘুম! এমনকি, ঘুমের পরিমাণ অত্যধিক হয়ে গেলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে! দীর্ঘ দিন ধরে ঘুম সংক্রান্ত নানা পরিসংখ্যান ঘেঁটে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষণায় কী উঠে এল: সাম্প্রতিক গবেষণায় ঘুম সংক্রান্ত আরও ৭৯টি সমীক্ষার ফলাফল খতিয়ে দেখা হয়েছে। গবেষকেরা অন্তত এক বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের, বিভিন্ন বয়সের মানুষের ঘুমের সূচি নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁরা দেখেছেন, যে সমস্ত মানুষ কম ঘুমোন (এ ক্ষেত্রে রাতে সাত ঘণ্টার কম ঘুমের কথা বলা হয়েছে), তাঁদের মধ্যে মৃত্যুর সম্ভাবনা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ১৪ শতাংশ বেশি। কিন্তু যাঁরা বেশি ঘুমোন (রাতে ন’ঘণ্টারও বেশি ঘুম), তাঁদের মধ্যে মৃত্যুর সম্ভাবনা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৪ শতাংশ বেশি। স্বাভাবিক বলতে এখানে প্রতি রাতে অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমের কথা বলা হয়েছে। ২০১৮ সালেও ঘুম নিয়ে এই ধরনের একটি গবেষণা হয়েছিল। সেখানে ফলাফল প্রায় অনুরূপ ছিল। গবেষকেরা ৭৪টি সমীক্ষার ফল খতিয়ে দেখে জানিয়েছিলেন, রাতে ন’ঘণ্টার বেশি ঘুমোলে মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে ১৪ শতাংশ।

কী কী সমস্যা: মনে রাখতে হবে, বেশি ঘুমোনোর সঙ্গে সরাসরি মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক নেই। তবে ঘুম বেশি হলে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা নিয়ে গবেষকেরা সতর্ক করেছেন। প্রথমত, বেশি ঘুম মানসিক অবসাদের অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে। এ ছাড়া, শরীরে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, হজমের অসুবিধা হতে পারে অতিরিক্ত ঘুমের কারণে। সবচেয়ে বেশি যেটা চোখে পড়ে, তা হল ওজন বৃদ্ধি। ঘুম বেশি হলে শরীরে বাড়তি মেদ জমে এবং ওজন বেড়ে যায়। তা বিভিন্ন জটিল রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অর্থাৎ, বেশি ঘুম মৃত্যুর কারণ নয়। বেশি ঘুম আসলে রোগব্যাধির কারণ, যা ভবিষ্যতে মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে।

ঘুম এবং রোগব্যাধি: যাঁরা বেশি ঘুমোন, তাঁদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে। তা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ওষুধের প্রভাবে তাঁদের অতিরিক্ত ঘুম পেতে পারে। সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য তাঁদের বাড়তি ঘুম প্রয়োজন হতে পারে। আবার, অসুস্থ ব্যক্তিদের ঘুম কম হওয়াও স্বাভাবিক। হয়তো শারীরিক অসুস্থতার কারণেই অনেকে রাতে ঠিকমতো ঘুমোতে পারেন না। অতিরিক্ত ঘুম হতে পারে অসুস্থতার কারণ নয়, অসুস্থতার লক্ষণ।

কতটা ঘুম দরকার: গবেষকদের মতে, কারও স্বাভাবিক ঘুমের পরিমাণ বেশি এবং কারও কম হতে পারে। ঘুম ব্যক্তিবিশেষের অভ্যাসের উপর নির্ভরশীল হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই বয়স হয়ে ওঠে অন্যতম বড় কারণ। গবেষণা অনুযায়ী, কৈশোরে তুলনামূলক বেশি ঘুম প্রয়োজন হয়। যাঁদের বয়স ১৩ থেকে ১৯, তাঁদের রাতে আট থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক যে কোনও মানুষের সাধারণ ভাবে প্রতি দিন সাত থেকে ন’ঘণ্টা ঘুম দরকার। বেশি বয়সে অনেকে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ঘুমোন। তবে শারীরিক সমস্যা না থাকলে বাড়তি ঘুমের প্রয়োজন পড়ে না। শুধু ঘুমের পরিমাণ নয়, কী রকম ঘুম হচ্ছে, তাতেও গুরুত্ব দেওয়া দরকার বলে মনে করেন গবেষকেরা। পরিমিত গাঢ়, গভীর ঘুম শরীরের পক্ষে উপযোগী।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]