
একজন মা শুধু একজন সন্তানের জন্মদাত্রী নন; বরং তিনি হলেন জাতি গঠনের প্রথম কারিগর, প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তার কোলে গড়ে ওঠে ভবিষ্যতের নেতা, আলেম, বিচারক, দাঈ, বিজ্ঞানী কিংবা বিপ্লবী। তাই ইসলাম মায়ের কোলকে শুধুই আবেগের জায়গা নয়, বরং শিক্ষা ও নৈতিকতার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দেখেছে। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, জান্নাত রয়েছে মায়ের পায়ের নিচে। (সুনানুন নাসায়ি: ৩১০৪)
ইসলাম কীভাবে মায়ের মর্যাদা তুলে ধরেছে?
আল্লাহ বলেন,
وَوَصَّيْنَا الإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْنًا عَلَى وَهْنٍ আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণ করতে নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। (সুরা লুকমান:১৪)
এই আয়াতে আল্লাহ নিজে মায়ের কষ্টের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সন্তানকে দায়িত্ববান হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এক সাহাবি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন,
আমার ওপর সবচেয়ে বেশি হক কার? তিনি বললেন, তোমার মা। আবার বললেন, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। আবার বললেন, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। এরপর বললেন, তারপর তোমার বাবা। (সহিহ বুখারি:৫৯৭১; সহিহ মুসলিম:২৫৪৮) তিনবার মা-তারপর বাবা। এতেই বোঝা যায়, মা শুধু সন্তান নয়, সমাজেরও ভিত্তি।
মায়ের কোল কীভাবে জাতি গঠনের ভিত্তি?
মা-ই প্রথম শিক্ষা দেয়ার কেন্দ্র। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক শিশু ইসলামি ফিতরাত (প্রকৃতি)-এর ওপর জন্মগ্রহণ করে। পরে তার বাবা-মা তাকে ইহুদি, খ্রিস্টান বা অগ্নিপূজক বানায়। (সহিহ মুসলিম:২৬৫৮) অর্থাৎ, সন্তান যে পথে চলবে,তা নির্ভর করে মূলত মা-বাবার, বিশেষ করে মায়ের গাইডলাইনের ওপর।
ইতিহাসের গুণী সন্তানদের পেছনে ছিলেন মায়ের ভূমিকা
ইমাম মালিক রহ.- এর মা তাঁর সন্তানকে কুরআনের হিফজ ও ইলমের জন্য আলেমদের কাছে পাঠানোর সময় বলেছিলেন,
اذهب إلى ربيعة فخذ من أدبه قبل علمه তুমি রাবিআহ -এর কাছে যাও, কিন্তু তার জ্ঞানের আগে তার আদব শেখো। (তারিখ বাগদাদ ৮/৪৮১)
(আল-ইন্তিকা ইবনু আব্দিল বার:৪৩) এই কথা থেকে বোঝা যায়, ইমাম মালিকের মা কেবল একজন সন্তানপ্রেমিক মা ছিলেন না, বরং একজন (দূরদর্শী) মুমিনা ছিলেন, যিনি জানতেন আদব ছাড়া ইলম ফলপ্রসূ হয় না।
তিনি প্রথমে ছেলেকে আদব শেখালেন, তারপর জ্ঞানার্জনের পথে এগিয়ে দিলেন। এই শিক্ষার ফলেই ইমাম মালিক রহ. হয়ে উঠেছিলেন ইমাম দারুল হিজরা (মদিনার প্রধান ইমাম) এবং তাঁর মুআত্তা শরিফ আজও ইসলামের শ্রেষ্ঠ হাদিস সংকলনগুলোর অন্যতম। মুহাম্মদ আল ফাতেহ-এর মা,তিনি ছোটবেলা থেকেই ছেলেকে বলতেন, তুমি সেই বীর হবে, যে কনস্টান্টিনোপল জয় করবে! সেই মা-ই গড়ে তুলেছেন এক বিজয়ী জাতির ভবিষ্যৎ।
আদর্শ মা হলে সমাজ কী পায়?
নৈতিক, দ্বীনদার প্রজন্ম। একজন সৎ মা তার সন্তানকে হালাল-হারামের পার্থক্য শেখান, নামাজে অভ্যস্ত করেন, এবং তাকওয়ার পথে চালান। ফলে ভবিষ্যতে সে হয় সৎ নাগরিক, ইমানদার নেতা।
পরিবার হয় শান্তির ঘর
আদর্শ মায়ের ত্যাগ, মমতা ও ইসলামি শিক্ষা একটি পরিবারের মাঝে ভালোবাসা, সহানুভূতি ও নৈতিকতা সৃষ্টি করে, যা জাতি গঠনের মজবুত ভিত্তি। আখিরাতমুখী সমাজ। যে মা সন্তানকে জান্নাতের পথের দিকনির্দেশনা দেন, সেই সন্তানই সমাজে সৎ আমল, দাওয়াত ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে।
কুরআন ও সুন্নাহ মাকে সমাজ গঠনের কারিগর হিসেবে চিত্রায়িত করেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো। (সুরা তাহরিম:৬) এটি একটি সরাসরি নির্দেশ প্রথম দায়িত্ব পরিবার গঠনের, আর তার কেন্দ্রবিন্দু হলো মা।
একজন মা যদি আদর্শ হন,তাঁর জীবনে যদি তাকওয়া, ধৈর্য, জ্ঞান, আদর্শচর্চা ও দ্বীনি ভাবনা থাকে,তাহলে তাঁর কোল থেকেই জন্ম নেবে ভবিষ্যতের আলেম, দাঈ, চিকিৎসক, নেতা, শিক্ষক,যারা হবে ইসলাম, সমাজ ও মানবতার দীপ্ত প্রতিনিধি। তাই বলা যা, একজন মায়ের কোলেই জন্ম নেয় একটি জাতির ভবিষ্যৎ এটা শুধু একটি বাক্য নয়, বরং জাতি গঠনের মূল। একটি আদর্শ মা গড়তে পারলেই একটি প্রজন্ম ভালো হয়। আর একটি ভালো প্রজন্মই একটি জাতিকে জান্নাতমুখী করতে পারে।
ইসলাম কীভাবে মায়ের মর্যাদা তুলে ধরেছে?
আল্লাহ বলেন,
وَوَصَّيْنَا الإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْنًا عَلَى وَهْنٍ আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণ করতে নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। (সুরা লুকমান:১৪)
এই আয়াতে আল্লাহ নিজে মায়ের কষ্টের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সন্তানকে দায়িত্ববান হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এক সাহাবি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন,
আমার ওপর সবচেয়ে বেশি হক কার? তিনি বললেন, তোমার মা। আবার বললেন, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। আবার বললেন, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। এরপর বললেন, তারপর তোমার বাবা। (সহিহ বুখারি:৫৯৭১; সহিহ মুসলিম:২৫৪৮) তিনবার মা-তারপর বাবা। এতেই বোঝা যায়, মা শুধু সন্তান নয়, সমাজেরও ভিত্তি।
মায়ের কোল কীভাবে জাতি গঠনের ভিত্তি?
মা-ই প্রথম শিক্ষা দেয়ার কেন্দ্র। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক শিশু ইসলামি ফিতরাত (প্রকৃতি)-এর ওপর জন্মগ্রহণ করে। পরে তার বাবা-মা তাকে ইহুদি, খ্রিস্টান বা অগ্নিপূজক বানায়। (সহিহ মুসলিম:২৬৫৮) অর্থাৎ, সন্তান যে পথে চলবে,তা নির্ভর করে মূলত মা-বাবার, বিশেষ করে মায়ের গাইডলাইনের ওপর।
ইতিহাসের গুণী সন্তানদের পেছনে ছিলেন মায়ের ভূমিকা
ইমাম মালিক রহ.- এর মা তাঁর সন্তানকে কুরআনের হিফজ ও ইলমের জন্য আলেমদের কাছে পাঠানোর সময় বলেছিলেন,
اذهب إلى ربيعة فخذ من أدبه قبل علمه তুমি রাবিআহ -এর কাছে যাও, কিন্তু তার জ্ঞানের আগে তার আদব শেখো। (তারিখ বাগদাদ ৮/৪৮১)
(আল-ইন্তিকা ইবনু আব্দিল বার:৪৩) এই কথা থেকে বোঝা যায়, ইমাম মালিকের মা কেবল একজন সন্তানপ্রেমিক মা ছিলেন না, বরং একজন (দূরদর্শী) মুমিনা ছিলেন, যিনি জানতেন আদব ছাড়া ইলম ফলপ্রসূ হয় না।
তিনি প্রথমে ছেলেকে আদব শেখালেন, তারপর জ্ঞানার্জনের পথে এগিয়ে দিলেন। এই শিক্ষার ফলেই ইমাম মালিক রহ. হয়ে উঠেছিলেন ইমাম দারুল হিজরা (মদিনার প্রধান ইমাম) এবং তাঁর মুআত্তা শরিফ আজও ইসলামের শ্রেষ্ঠ হাদিস সংকলনগুলোর অন্যতম। মুহাম্মদ আল ফাতেহ-এর মা,তিনি ছোটবেলা থেকেই ছেলেকে বলতেন, তুমি সেই বীর হবে, যে কনস্টান্টিনোপল জয় করবে! সেই মা-ই গড়ে তুলেছেন এক বিজয়ী জাতির ভবিষ্যৎ।
আদর্শ মা হলে সমাজ কী পায়?
নৈতিক, দ্বীনদার প্রজন্ম। একজন সৎ মা তার সন্তানকে হালাল-হারামের পার্থক্য শেখান, নামাজে অভ্যস্ত করেন, এবং তাকওয়ার পথে চালান। ফলে ভবিষ্যতে সে হয় সৎ নাগরিক, ইমানদার নেতা।
পরিবার হয় শান্তির ঘর
আদর্শ মায়ের ত্যাগ, মমতা ও ইসলামি শিক্ষা একটি পরিবারের মাঝে ভালোবাসা, সহানুভূতি ও নৈতিকতা সৃষ্টি করে, যা জাতি গঠনের মজবুত ভিত্তি। আখিরাতমুখী সমাজ। যে মা সন্তানকে জান্নাতের পথের দিকনির্দেশনা দেন, সেই সন্তানই সমাজে সৎ আমল, দাওয়াত ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে।
কুরআন ও সুন্নাহ মাকে সমাজ গঠনের কারিগর হিসেবে চিত্রায়িত করেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো। (সুরা তাহরিম:৬) এটি একটি সরাসরি নির্দেশ প্রথম দায়িত্ব পরিবার গঠনের, আর তার কেন্দ্রবিন্দু হলো মা।
একজন মা যদি আদর্শ হন,তাঁর জীবনে যদি তাকওয়া, ধৈর্য, জ্ঞান, আদর্শচর্চা ও দ্বীনি ভাবনা থাকে,তাহলে তাঁর কোল থেকেই জন্ম নেবে ভবিষ্যতের আলেম, দাঈ, চিকিৎসক, নেতা, শিক্ষক,যারা হবে ইসলাম, সমাজ ও মানবতার দীপ্ত প্রতিনিধি। তাই বলা যা, একজন মায়ের কোলেই জন্ম নেয় একটি জাতির ভবিষ্যৎ এটা শুধু একটি বাক্য নয়, বরং জাতি গঠনের মূল। একটি আদর্শ মা গড়তে পারলেই একটি প্রজন্ম ভালো হয়। আর একটি ভালো প্রজন্মই একটি জাতিকে জান্নাতমুখী করতে পারে।