স্ট্রেস ও অ্যাংজাইটির ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ছে তরুণদের ওপর

আপলোড সময় : ১৩-০৮-২০২৫ ০২:২৩:০০ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৩-০৮-২০২৫ ০২:২৩:০০ অপরাহ্ন
দ্রুতগামী আধুনিক জীবনে বাড়তে থাকা স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি তরুণ প্রজন্মের হৃদযন্ত্র তো বটেই, সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলছে। তাই মানসিক স্বাস্থ্যের মান বজায় রাখতে সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। গুরুত্ব দিয়ে এই বিষয়টি ভাবার সময় এটাই, এমনটাই মনে করছেন মনোবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা।

স্ট্রেস ও উদ্বেগের বোঝা কিন্তু শারীরিক সমস্যার থেকে কম কিছু নয়
স্ট্রেস সাধারণত মনের ওপর বাইরে থেকে আসা নানারকম চাপের প্রতিক্রিয়া, যা আসতে পারে পড়াশোনা সংক্রান্ত বিষয়, সোশ্যাল মিডিয়া, পারিবারিক দায়িত্ব কিংবা সমবয়সীদের সঙ্গে তুলনা থেকেও। অপরদিকে উদ্বেগ কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী দুশ্চিন্তা বা ভয়, যা দৈনন্দিন জীবনকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। যা অনেক সময় সাধারণ জীবনযাপনের পথেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

ফর্টিস হেলথকেয়ারের সিনিয়র ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট (মনোবিদ) ড. কামনা ছিব্বর বলছেন, “কিছুটা স্ট্রেস থাকা ভাল। সেটা তরুণদের পারফরম্যান্সে সেরাটুকু দিতে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু অতিরিক্ত স্ট্রেস ক্ষতিকর।”

ড. ছিব্বরের মতে, স্ট্রেস ও উদ্বেগের ফলে শরীরে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা দিতে পারে -
•    হার্টবিট বৃদ্ধি: পরীক্ষার সময় বা অনেকের সামনে কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে হার্টবিট হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে।
•    রক্তচাপ বৃদ্ধি: দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস উচ্চ রক্তচাপ ডেকে আনতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে হার্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
•    বুকে ব্যথা বা চাপ: অ্যাংজাইটি হলে এমন কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যা অনেক সময় হৃদরোগ ভেবে ভুল হয়।

মানসিক স্বাস্থ্যেও এর প্রভাব বেশ চিন্তার
•   ডিপ্রেশন: দীর্ঘমেয়াদি স্ট্রেস অনেককে ডিপ্রেশনের দিকে ঠেলে দেয়।
•   ঘুমের সমস্যা: অ্যাংজাইটি হলে অনিদ্রা বা ঘুমের প্যাটার্নে পরিবর্তন দেখা দেয়, ঠিক করে ঘুম হয় না যা ক্লান্তির কারণ এবং আরও উদ্বেগ বাড়ায়।
•   সামাজিক বিচ্ছিন্নতা: বন্ধু বা পরিবারের থেকে দূরে সরে যাওয়া, সহায়তার অভাব তৈরি করে।

সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব
সোশ্যাল মিডিয়া তরুণদের জন্য যেমন সংযোগের মাধ্যম, তেমনই স্ট্রেসেরও উৎস, মনোবিদরা অন্তত তাই মনে করেন। সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া এই যুগ অচল, তেমনই অনেক সমস্যার মূলে জড়িয়ে রয়েছে এই ডিজিটাল আসক্তি।

•    তুলনার সংস্কৃতি: অন্যের সাজানো-গোছানো জীবন দেখে হীনমন্যতা বাড়তে পারে।
•    সাইবারবুলিং: অনলাইনে নেতিবাচক অভিজ্ঞতা মানসিক স্বাস্থ্যে তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।
•    তথ্যের চাপ: বিশ্বের নানা কোণ থেকে আসা অতিরিক্ত ইনফরমেশনের চাপ মানসিক অস্থিরতা বাড়ায়।

মানসিক ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার উপায়ও জানাচ্ছেন মনোবিদরা -
•    আবেগ চিনতে শেখা ও প্রকাশ করা: ডায়েরি লেখা, আঁকাআঁকি বা শিল্পচর্চা আবেগ সামলাতে সাহায্য করে।
•    স্বাস্থ্যকর অভ্যাস: নিয়মিত ব্যায়াম, ধ্যান, বা শখের কাজে যুক্ত হওয়া মানসিক চাপ কমায়।
•    সহায়তার নেটওয়ার্ক: স্কুল কাউন্সিলর, পরিবার বা মেন্টরের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রয়োজনে পেশাদার সহায়তা
যদি স্ট্রেস ও অ্যাংজাইটি অসহনীয় হয়ে ওঠে, তাহলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তা নেওয়া জরুরি। থেরাপির মাধ্যমে উদ্বেগের কারণ চিহ্নিত করা যায়, কার্যকর মোকাবিলা কৌশল শেখা যায়। ফলে আত্মবিশ্বাস ও নিজেকে নিজের মতো করে চেনা, আর সেই অনুযায়ী নিজেকে তৈরি করতে পারা যায়, নিজেকে নিজের মতো করে গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তরুণদের মানসিক ও হৃদস্বাস্থ্য রক্ষায় সময়মতো সচেতনতা ও সহায়তা নিশ্চিত করাই সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি। স্কুল বা এলাকায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়ার্কশপ সেশন দরকার। পারস্পরিক সহায়তাও এখানে বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ইতিবাচক বার্তা প্রচার ও এই সংক্রান্ত ট্যাবু নিয়ে খোলাখুলি কথা বলারও প্রয়োজন রয়েছে।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]