পর্যটন ও বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের এক সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র

আপলোড সময় : ১৮-০৮-২০২৫ ০৬:৫৪:২৮ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৮-০৮-২০২৫ ০৬:৫৪:২৮ অপরাহ্ন
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যটন এমন এক ধরনের ভ্রমণ যেখানে মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঘুরে দেখেন শিক্ষাগত, বিনোদনমূলক, সাংস্কৃতিক বা ঐতিহাসিক উদ্দেশ্যে। এতে সাধারণত ক্যাম্পাস, একাডেমিক প্রোগ্রাম, ছাত্রজীবন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গাইডেড ট্যুর অন্তর্ভুক্ত থাকে।

আমরা প্রায়ই শুনি, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ইটেই জ্ঞান নিহিত।” তাই যারা ভ্রমণ থেকে জ্ঞান আহরণ করতে চান, তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পর্যটন একেবারে যথার্থ।

বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যটন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় পর্যটন ক্ষেত্র হতে পারে। যেমন:
১. শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার 
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যটনের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ, একাডেমিক মান, সুযোগ- সুবিধা, ছাত্রজীবনের রূপ নিয়ে দৃশ্যমান ধারণা পেতে পারে যা শিক্ষাগত সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক।
২. শিক্ষাপ্রেমী ও সংস্কৃতি উৎসাহী বৃন্দ
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব অনেক; এর সুন্দর স্থাপত্য ও প্রাচীন ভবনগুলো পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় হয়ে দাঁড়ায়।
৩. একাডেমিক মর্যাদা ও গবেষণা আগ্রহ
কিছু বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ একাডেমিক মান ও গবেষণায় সমৃদ্ধ যা শিক্ষার প্রতি আগ্রহী মানুষকে আকৃষ্ট করে।
৪. ছাত্রজীবন ও ক্যাম্পাস অভিজ্ঞতা
জীবন্ত ছাত্রজীবন, স্পোর্টস ইভেন্ট, ক্যাম্পাস ক্যাফে, আয়োজিত ক্লাব কার্যক্রম এসব উপভোগ করতে বিশ্ববিদ্যয়গুলো পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠে।
৫. শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম
বিশেষ ভাষা কোর্স, সাংস্কৃতিক সম্পৃক্ততা প্রোগ্রাম ইত্যাদি বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যটকদের জন্য শিক্ষামূলক সুযোগ হতে পারে যা দেশের সংস্কৃতি ও জীবনধারা এক্সপ্লোর করার সুযোগ দেয়।
অধিকন্তু, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বড় শহরে বা জনপ্রিয় পর্যটনস্থলের আশেপাশে অবস্থিত, ফলে ভ্রমণকারীরা সহজেই বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনের সাথে শহর ঘুরেও দেখতে পারেন।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা, বিশেষত ২ থেকে ৩ দিনের ছুটিতে, বন্ধু বা সিনিয়রদের সাথে অন্যবিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রমণে যায়। তারা হলে থাকে, ক্যাম্পাস ঘুরেবেড়ায়, আশপাশের এলাকা দেখে, সেখানে অনেক আনন্দ অনুভব ও জ্ঞান অর্জন করে।
অনেকে গবেষণা, সেমিনার বা ক্লাব প্রোগ্রাম অংশগ্রহণের জন্য অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় উদাহরণ স্বরূপ জটগটঘঅ-এর মতো ক্লাব। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাই নয়, স্কুল- কলেজ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয় মানুষ দিনের পর দিন বিকেলে ক্যাম্পাসে এসে অবসর কাটায়। এছাড়া বিদেশি পর্যটকরাও যদি বাংলাদেশে ভ্রমণে আসেন, তারা দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
নিরাপত্তা ও শিষ্টাচার
* বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করলে অবশ্যই শিক্ষার্থী, কর্মী ও ক্যাম্পাস সম্প্রদায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।
* বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মনীতি মেনে চলা প্রয়োজন এবং ক্যাম্পাসে আপনার উপস্থিতি ও আচরণ পুরো সম্প্রদায়ের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক পর্যটনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব
* চাকরি সৃষ্টিতে সহায়ক: স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উত্তরণ বাড়াতে পারে।
* সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বোঝাপড়া: বিভিন্ন মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য ও বোঝাপড়া তৈরি হয়।
* ঐতিহ্য সংরক্ষণ: দেশের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধারণ করে রাখতে সাহায্য করে।
* শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান ও শিল্পপ্রশিক্ষণ: পর্যটন শিল্প সম্পর্কে ধারণা তৈরি ও ভবিষ্যতের সুযোগ সৃষ্টি।
* বাংলার ইতিহাস ও সংস্কৃতির আন্তর্জাতিক প্রচার: দর্শনার্থীদের মাধ্যমে দেশের মৌলিক বৈশিষ্ট্য বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরা যায়।
সমস্যা:
* সচেতনতার অভাব: বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে এই ধারনাটি কম
প্রচারিত।
* দৃঢ় অবকাঠামো সমস্যা: সড়ক, পরিবহন, থাকা-খাওয়ার সুবিধা উন্নত করা প্রয়োজন।
* নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনপ্রণয়ন ও
প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।
কী করা উচিত? (সরকার ও পর্যটনখাতের জন্য পরামর্শ)
* সচেতনতা তৈরি: মার্কেটিং ক্যাম্পেইন, শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম ও প্রচারণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যটনের গুরুত্ব প্রচার করা।
* অবকাঠামো উন্নয়ন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আশপাশে উন্নত পরিবহন ও থাকার জায়গা তৈরি করা।
* নিরাপত্তা নিশ্চিত করা: আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

যদি এই সমস্যাগুলো মোকাবিলা করা যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যটনকে দেশের পর্যটন শিল্পের অংশ হিসেবে গৃহীত করা হয়, তাহলে এটি বাংলাদেশের অর্থনীতি, সাংস্কৃতিক বিনিময়, প্রতিভা বিকাশ এবং আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির জন্য এক বড় ভ‚মিকা রাখতে পারে।
“প্রতিভা বিকাশের সম্ভাবনায় পর্যটনের বিকল্প নেই।#

মোসাঃ মিতু খাতুন 
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট
সেশন-২০২০/২১

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]