৫ ব্যাংকের ভাগ্য এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে!

আপলোড সময় : ০৫-০৯-২০২৫ ০১:২০:০৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৫-০৯-২০২৫ ০১:২০:০৫ অপরাহ্ন
নজরুল ইসলাম মজুমদার ও এস আলমের হাতে থাকা ৫ ব্যাংকের ভাগ্য এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে। তবে এস আলমের লোপাট করা ৮৪ হাজার কোটি টাকা এসব ব্যাংকে ফেরানো প্রায় অসম্ভব বলে মনে করেন ব্যাংক ও আদালত সংশ্লিষ্টরা। ফলে যে দুই ব্যাংক এক হতে চায় না তাদের ইতিবাচক অবস্থায় ফেরা অসম্ভব। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, শেষ পর্যন্ত কটি ব্যাংক নিয়ে মার্জার হচ্ছে তা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ব্যাংকের টাকায় কেউ বিদেশে করেছেন হোটেল, কেউ এলসির আড়ালে আত্মসাৎ করেছেন নিজের দায়িত্বে থাকা ব্যাংকের অর্থ। এমন সব অভিযোগ ব্যাংক খাতকে সর্বস্বান্ত করা দুই মাফিয়া সাবেক এবিবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও ব্যাংক টাইকুন ব্যবসায়ী এস আলমের বিরুদ্ধে।
 
নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২৩-২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত ফ্ল্যামিংগো এন্টারপ্রাইজ নামের ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে দফায় দফায় ৬১৫ কোটি টাকা দেয় তারই ব্যাংক এক্সিম। যা ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নাসা গ্রুপ সংশ্লিষ্টরা উত্তোলন করে। এবিবির সাবেক চেয়ারম্যান থাকার সময় তার বিরুদ্ধে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এখন আদালতে।
 
ব্যাংকখাতের আরেক মাফিয়া এস আলম। তার নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে একীভূতকরণের তালিকায় থাকা ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ঋণ জালিয়াতির অংক ৮৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। বিদেশে পাচার করা এই অর্থ ব্যাংকে ফেরানো কঠিন বলে মনে করেন মামলা সংশ্লিষ্টরা।
 
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভুয়া কোম্পানি বানিয়ে এ ব্যাংকগুলো লুট করা হয়েছে। এই ব্যাংক লুটের মূল হোতা ছিলেন এস আলম ও নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির তদন্তও হচ্ছে দুর্বলভাবে। কেউ হয়ত ৪ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে, কিন্তু তদন্তে বের করা হচ্ছে মাত্র ৫০০ কোটি টাকার প্রমাণ। আবার আমাদের বিচার ব্যবস্থায় অনেকেই প্রসিডিউরাল ভুল বা পদ্ধতিগত ত্রুটি দেখিয়ে প্রকৃত দুর্নীতির মামলাগুলো থেকেও খালাস পেয়ে যাচ্ছে। এটি অত্যন্ত ভয়াবহ দুঃসংবাদ।’
 
এদিকে সম্প্রতি দুর্বল ৫ ব্যাংকে শুনানি শেষ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর প্রায় ৯০ থেকে ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন নামি বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে। ফলে এই অর্থ আদায় নিয়ে সন্দিহান সংশ্লিষ্টরা। তবে শেষে পর্যন্ত মার্জারে কটি ব্যাংক একীভূত হবে তা নিয়ে পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।

তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দৃষ্টিকোণ থেকে এই মুহূর্তে মার্জারই হলো দুর্বল ব্যাংকগুলোকে রক্ষার একমাত্র কার্যকর উপায়। আমরা যদি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় কাজ না করি-যেমন টিকা দিলে শিশুর জ্বর হতে পারে বলে ভয় পাই; তাহলে সেটি শিশুর জন্য মঙ্গলজনক হবে না। একইভাবে, মার্জার ছাড়া ব্যাংকগুলোর ভবিষ্যৎও নিরাপদ নয়।’
 
তবে একীভূত করার বিপক্ষে থাকা দুটি ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন খুব আশাব্যাঞ্জক নয় বলে মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক। মুখপাত্র বলেন, ‘তাদের অবস্থার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট যে পরিসংখ্যান সংগ্রহ করছে, সেখান থেকে এখনো কোনো ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত আমরা পাইনি। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ ব্যাংক এই মুহূর্তে কাউকে কোনো লিকুইডিটি সাপোর্ট দেবে না। ব্যাংকগুলোকেই নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে হবে। অতএব, যে ব্যাংকগুলো মার্জারের আওতায় আসতে চাইছে না, তারা যদি তাদের সূচকে ইতিবাচক পরিবর্তন এনে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সন্তুষ্ট করতে পারে, তবে বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্যই তাদের ব্যাপারে পুনর্বিবেচনা করবে।’
 
এদিকে মার্জারের প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানান, দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটতে সময় লাগবে আরও ১ থেকে দেড় বছর।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]