সন্তানের কি মন ভাল নেই! কীভাবে পাশে থাকবেন তার

আপলোড সময় : ১০-০৯-২০২৫ ০৭:১২:১৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১০-০৯-২০২৫ ০৭:১২:১৫ অপরাহ্ন
ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটির মতো বেশ কিছু মানসিক সমস্যা নিয়ে এখনও আমাদের সমাজে বেশ কিছু ছ্যুঁৎমার্গ রয়েছে। ‘আমাদের সময়ে তো এমন কিছু হত না’, ‘মনখারাপ তো আমাদেরও হয়, তাই বলে সেটা নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করি না তোদের মতো’, ‘তোদের জীবনে কীসের আবার সমস্যা!’ – এই চেনা কথাগুলো শুনে শুনে একটা গোটা প্রজন্ম রীতিমতো ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। একটা সময় পর সন্তান বাবা-মেয়ের কাছেও নিজের সমস্যার কথা খুলে বলা ছেড়ে দেয়।

কিন্তু বিশ্ব জুড়ে পরিসংখ্যান যা বলছে, তাতে এখন এই নিয়ে চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে। আজ ১০ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসে (World suicide prevention day 2025) আবার এই নিয়ে আমাদের সমাজে কথা বলার দরকার হয়ে পড়েছে।

সন্তান কি অস্বাভাবিক রকম চুপচাপ? কোনও অজানা কারণে হতাশ হয়ে পড়ছে? কিংবা কখনও মনে হয়েছে সে নিজের ক্ষতি করতে চাইছে? এ ধরনের পরিস্থিতি যে কোনও অভিভাবকের কাছে ভীষণ উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বলছেন, আত্মহত্যা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করাটাই আসলে বাঁচানোর প্রথম ধাপ।

নারায়ণা হেলথ এসআরসিসি চিলড্রেন’স হাসপাতালের শিশু ও কিশোর-কিশোরী মানসিক চিকিৎসক ডাঃ শোরুক মোটওয়ানি বলেন, “আত্মহত্যার চিন্তা মাঝেমধ্যেই মাথায় আসে। কিন্তু এ বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা করাই আসল চাবিকাঠি। কীভাবে কথোপকথন শুরু করতে হবে আর কীভাবে একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে, তা শিখলে তরুণ মনে প্রকৃত পার্থক্য গড়ে দেওয়া যায়।”

ডিপ্রেশন আর আত্মহত্যার ভাবনার মধ্যে পার্থক্য ঠিক কোথায়?
ডাঃ মোটওয়ানির মতে, ডিপ্রেশন একটি গুরুতর মানসিক অবস্থা। যদিও এর সঙ্গে আত্মহত্যার ভাবনাচিন্তা আসার যোগ আছে, তবুও দু’টি এক জিনিস নয়। কেউ ডিপ্রেশনে ভুগলেও আত্মহত্যার চিন্তা নাও করতে পারে। আবার কারও ডিপ্রেশনের উপসর্গ না থাকলেও আত্মহত্যার ভাবনা আসতে পারে। তাই পার্থক্যটা বোঝা খুব জরুরি।

শৈশব বা কৈশোরেই ডিপ্রেশন শুরু হতে পারে। এর পেছনে থাকে -
•    জীবনের কঠিন কোনও অভিজ্ঞতা বা ট্রমা
•    পরিবারের ভাঙন
•    বন্ধুদের সঙ্গে অশান্তি
•    বুলিং বা নির্যাতন
•    পরিবারের মধ্যে মানসিক সমস্যার ইতিহাস।

দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মেজাজ বা আচরণে পরিবর্তন, নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা বা মাদকে আসক্তির মতো লক্ষণ দেখলে অভিভাবকদের সতর্ক হওয়া উচিত। বিশেষ করে সন্তানের বয়স যখন কম, এই ধরনের পরিবর্তন বাবা-মাকেই লক্ষ্য করতে হবে, কারণ তারা নিজেরা অতকিছু বোঝার মতো অবস্থায় থাকে না।

আত্মহত্যার ভাবনার ইঙ্গিত হতে পারে যে লক্ষণগুলো
•    নিজেকে বোঝা ভাবা বা মাঝে মাঝেই নিরাশ ভাব প্রকাশ করা
•    মৃত্যু নিয়ে সরাসরি বা পরোক্ষে কথা বলা
•    পরিবার-বন্ধুর কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়া
•    হঠাৎ মেজাজ বদলে যাওয়া
•    প্রিয় জিনিসপত্র অন্যকে দিয়ে দেওয়া বা বিদায় নেওয়ার মতো আচরণ

নিজের ক্ষতি করা মানেই আত্মহত্যার চেষ্টা নয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা মানেই সবসময় আত্মহত্যা নয়, বরং তা সাহায্যের আর্তি। তবে বারবার ক্ষতির চেষ্টা করলে তা বিপজ্জনক হতে পারে। যেমন -

•    শরীরে বারবার একই ধরনের আঘাতের দাগ
•    হঠাৎ লম্বা জামাকাপড় পরতে শুরু করা
•    গোপন রাখার মতো আচরণ বা রাগী হয়ে যাওয়া
•    সামাজিক মেলামেশা এড়িয়ে চলা

এই পরিস্থিতিতে কী করবেন অভিভাবকরা?
যদি সন্দেহ হয় বা প্রমাণ পান যে সন্তানের মধ্যে এরকম কোনও লক্ষণ রয়েছে, তাহলে প্রথমেই আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং ওকে বিচার না করতে না বসে মন দিয়ে শুনুন সে কী বলতে চাইছে। খোলাখুলি কথা বলুন। সতর্কতার সংকেতগুলোর দিকে নজর রাখুন। সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন, ঝুঁকিপূর্ণ জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলুন। সন্তানের সঙ্গে কথা বলে পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। বাড়িতে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করুন, যোগাযোগ খোলা রাখুন এবং প্রয়োজনে স্কুলকেও সঙ্গে নিন।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]