ক্যানসার শরীরে ছড়িয়ে পড়ার আগেই আটকানো সম্ভব!

আপলোড সময় : ১১-০৯-২০২৫ ০৩:৪৫:২৮ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১১-০৯-২০২৫ ০৩:৪৫:২৮ অপরাহ্ন
ক্যানসার শব্দটা শুনলেই মনে একটা ভয় কাজ করে। তবে সব ক্যানসারের ধরা পড়ার ধরন একরকম নয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে সবচেয়ে ভুল বোঝাবুঝির যে কয়েকটি ‘টার্ম’ রয়েছে, তার মধ্যে একটি হল ‘স্টেজ জিরো’ ক্যানসার, যাকে কারসিনোমা ইন সিটু-ও বলা হয়।

এটি আসলে ক্যানসারের শুরুর দিকের, একদম প্রাথমিক ধাপ, যেখানে অস্বাভাবিক কোষ ধরা পড়ে, তবে তা তখনও পর্যন্ত আশপাশের টিস্যু বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ছড়াতে পারেনি।

অ্যাপোলো ক্যানসার সেন্টার, হায়দরাবাদের মেডিক্যাল অনকোলজির ডিরেক্টর ডাঃ নিখিল সুরেশ ঘাদিয়ালপাটিল জানিয়েছেন, “স্টেজ জিরো ক্যানসার মানে যেন বাগানে আগাছার বীজ পড়েছে, কিন্তু এখনও আগাছা গজায়নি। খুব শুরুতেই ধরা পড়েছে, ছড়িয়ে পড়ার আগেই।”

এই পর্যায়ে কোষগুলো ক্যানসারাস হলেও মূল জায়গাতেই সীমাবদ্ধ থাকে। তাই চিকিৎসার সুযোগ সবচেয়ে বেশি থাকে, অনেক সময় তুলনামূলক কম আক্রমণাত্মক চিকিৎসাতেই সম্পূর্ণ সেরে ওঠা সম্ভব।

স্টেজ জিরো ক্যানসার নিয়ে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা
মিথ ১: এটা নাকি আসল ক্যানসার নয়।
সত্য: বাস্তবে এগুলো ক্যানসার কোষই, তবে নন-ইনভেসিভ বা ছড়িয়ে পড়েনি তখনও। চিকিৎসা না শুরু হলে অনেক ক্ষেত্রেই আক্রমণাত্মক ক্যানসারে পরিণত হতে পারে।

মিথ ২: উপসর্গ থাকলে তো বুঝতে পারতাম।
সত্য: স্টেজ জিরো প্রায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যথা, গুটি বা দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটায় না। ম্যামোগ্রাম, প্যাপ স্মিয়ার, কোলোনোস্কোপি বা স্কিন চেকের মতো রুটিন টেস্টেই ধরা পড়ে।

মিথ ৩: এটা নাকি সবসময় আক্রমণাত্মক ক্যানসারে রূপ নেবে।
সত্য: সব ক্ষেত্রেই তা নয়। তবে ঝুঁকি থাকায় চিকিৎসকরা সাধারণত চিকিৎসা বা ঘন ঘন পর্যবেক্ষণ পরামর্শ দেন।

কীভাবে ধরা পড়ে স্টেজ জিরো ক্যানসার?
এটি সাধারণত স্ক্রিনিং টেস্ট এর মাধ্যমে ধরা পড়ে—
•    ম্যামোগ্রাম: স্তনে ডাক্টাল কারসিনোমা ইন সিটু (DCIS) শনাক্ত করে।
•    প্যাপ স্মিয়ার: ইউটেরাসের কোষে প্রি-ক্যানসার বা ক্যানসার শনাক্ত করে।
•    কোলোনোস্কোপি: অস্বাভাবিক কোষসহ পলিপ সরিয়ে দেয়।
•    স্কিন চেক: নন-ইনভেসিভ স্কিন ক্যানসার ধরতে সাহায্য করে।
সব পরীক্ষারই চূড়ান্ত নিশ্চিতকরণ হয় বায়োপসির মাধ্যমে।

চিকিৎসার বিকল্প
স্টেজ জিরো মানেই আক্রমণাত্মক চিকিৎসা নয়। ক্যানসারের ধরন ও অবস্থানের ওপর চিকিৎসা নির্ভর করে।

•    সার্জারি: অস্বাভাবিক কোষ অপসারণ।
•    রেডিয়েশন থেরাপি: অবশিষ্ট কোষ ধ্বংস করতে।
•    হরমোন থেরাপি: হরমোন-সংবেদনশীল ক্যানসারে পুনরাবৃত্তির ঝুঁকি কমাতে।
•    অ্যাকটিভ সার্ভেইলেন্স: ঝুঁকি কম হলে ঘন ঘন পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণই যথেষ্ট।

কেন প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়া জরুরি?
ডাঃ ঘাদিয়ালপাটিলের মতে, “স্টেজ জিরো প্রমাণ করে যে নিয়মিত স্ক্রিনিং জীবন বাঁচায়। যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে, তত ভালোভাবে চিকিৎসা সম্ভব।” এই সময় ধরা পড়লে কম আক্রমণাত্মক চিকিৎসা দরকার হয়, দ্রুত সেরে ওঠা যায় এবং সুস্থ স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।

তিনি আরও যোগ করেন, “রোগীরা আতঙ্কিত হলেও আমি বলি, সময়মতো ধরা পড়েছে। এটি মৃত্যুদণ্ড নয়, বরং জেগে ওঠার ঘণ্টা। এখন সঠিক চিকিৎসায় সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।”

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]