
অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। অটোমেশন খুবই জটিল ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। দীর্ঘ মেয়াদি এই প্রক্রিয়ায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা পছন্দমত মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে শিক্ষার্থীরা মেডিকেলে ভর্তিতে আগ্রহ হারাচ্ছে। ডাক্তারী পেশার মতো মহৎ পেশায় আসতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন তারা । এতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা হতাশ ও সংক্ষুব্ধ। বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর অনেক আসনই ফাঁকা থেকে যাচ্ছে অটোমেশন ভর্তি প্রক্রিয়ায়। অটোমেশনের নামে বেসরকারি মেডিকেল খাতকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে দাবি করেছেন সচেতন অভিভাবক ও বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন। ফলে অটোমেশন পদ্ধতিতে ভর্তি পক্রিয়া বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
চলতি ২০২৪-২৫ শিক্ষা বর্ষে সব মিলিয়ে ৪৬৭টি আসন ফাঁকা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন। শিক্ষার্থী না পেয়ে অনেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজকে লোকসান গুনতে গুনতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। তারা বলছে, অটোমেশনের কারণে বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তি হতে চার থেকে ছয় মাস লেগে যাচ্ছে। ২০২২-২৩ শিক্ষা বর্ষে অটোমেশন পদ্ধতি চালু করলেও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ কিংবা চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের কোনো মতামত নেয়া হয়নি। অটোমেশন চালু হওয়ার পর ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ২১৭ টি, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ১৪২ টি আসন ফাঁকা ছিল। অটোমেশন পদ্ধতি চালুর আগে দেশের কোন বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন ফাঁকা থাকতো না।
বেসরকারি মেডিকেলে শিক্ষার্থীরা নিজস্ব অর্থায়নে লেখাপড়া করেন, কিন্তু সেই শিক্ষার্থীদেরই পছন্দের মূল্যায়ন হয় না। এ কারণেও বেসরকারি মেডিকেলে কলেজে পড়ার আগ্রহ হারাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শুধু দেশীয় শিক্ষার্থী নন, বিদেশী শিক্ষার্থীরাও অটোমেশন জটিলতায় বাংলাদেশের মেডিকেল শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষ। অভিভাবকদের দাবি, অটোমেশনের নামে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণ করা হচ্ছে।
অন্য দিকে অভিভাবকরা বলছেন, অর্থ খরচ করেন তারা, পছন্দ ঠিক করে দেয় সরকার- এটি হতে পারে না। অটোমেশনের কারণে অর্থ থাকলেও পছন্দের কলেজে অনেকেই ভর্তি হতে পারছেন না। অটোমেশন পদ্ধতি বাতিল করে আগের ব্যবস্থায় ফিরে গেলে শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সুবিধা হবে।
প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, এসব ছাড়াও বেসকারি মেডিকেল কলেজ রিকগনিশন কমিটি (বিএমএন্ডডিসি, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়) পৃথকভাবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনের নামে ঝামেলা করে। তাদেরকে উৎকোচ না দিলে ঝামেলা মেটানো যায় না, শেষ পর্যন্ত উৎকোচ দিতেই হয়।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো আরো অভিযোগ করছে, অটোমেশনের কারণে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৈরি ‘ভর্তি হতে ইচ্ছুক’ তালিকায় শিক্ষার্থীদের পছন্দকে গুরুত্ব না দেয়ায় অনেকে শেষ পর্যন্ত এমবিবিএস কোর্স শেষ করতে পারেন না, ঝরে পড়েন। যেমন রাজধানীতে বেড়ে ওঠা শিক্ষার্থীরা রাজধানীতেই থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু যারা ঢাকার বাইরে গ্রামের দিকে চলে যেতে বাধ্য হন তারা অনেক সময় ঝরে পড়েন। তা ছাড়া নিজেদের পছন্দ উপেক্ষিত হয় বলেও শেষ পর্যন্ত মানিয়ে নিতে পারেন না বলে ঝরে পড়েন অনেকে।
এছাড়া বেসরকারি মেডিকেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, চিকিৎসা শিক্ষা খাতে এক দেশে দুই নীতি। আর্মি মেডিকেল কলেজ গুলো অটোমেশনের বাইরে রয়েছে। তারা সরকারী নীতিমালার বাইরে থেকে মেডিকেল কলেজ পরিচালনা করছেন। সুতরাং অটোমেশনরে নামে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ গুলো বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে। আর বেসরকারি মেডিকেল কলেজ গুলো ব্যক্তিগত বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত হলেও সরকার এই খাতে পৃষ্ঠপোষকতা না করে উল্টো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে সরকার। হঠাৎ হঠাৎ সরকারী নীতিমালায় উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। অটোমেশনের নামে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ সেক্টর ধ্বংস করার নীলনকশা করা হয়েছে। এতে বেসরকারি স্বাস্থ্য শিক্ষা খাতে বিনিয়োগকারীরা নিরুত্সাহিত হচ্ছে।
বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ সেক্টর ধ্বংস করার নীলনকশা করা হয়েছে। মনে রাখতে হবে প্রতিষ্ঠান গড়া কঠিন, ধ্বংস করা সহজ। প্রাইভেট সেক্টরে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা নিজের চয়েজমতো ভর্তি হবেন। কিন্তু অটোমেশনের কারণে তারা তা পারছেন না। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবাই হতাশ। হাত-পা বেঁধে পানিতে সাঁতার কাটতে দেয়ার মতো অবস্থায় অটোমেশন। যার জন্য এই পেশায় আসতে শিক্ষার্থীরা নিরুত্সাহিত হচ্ছেন। অটোমেশনের নামে এই সেক্টরকে ধ্বংস করার অপপ্রয়াস চলছে।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছেন, আসন শূন্য থাকায় ২০২২-২৩, ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ শিক্ষা বর্ষে অটোমেশনে ৪ থেকে ৬ বার মেধা তালিকা পাঠানো হলেও অনেকেই তাদের পছন্দের কলেজ না পেয়ে ভর্তি হয়নি। এ ছাড়া প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে অনেক শিক্ষার্থী মেডিকেল না পড়ে অন্যত্র চলে গেছে। এমনকি বিনা খরচে দরিদ্র ও মেধাবী কোটায় থাকার পরও পছন্দমতো কলেজ না পেয়ে লেখাপড়া শেষ করেননি অনেকে। অটোমেশন চালু হওয়ায় ক্লাসও বিলম্বে শুরু করতে হয়। কয়েকবার মেধা তালিকা প্রকাশের পরও আসন খালিই থাকছে। আবার এই বার বার মেধা তালিকা প্রকাশের কারণে ভর্তি হওয়া অনেক শিক্ষার্থী অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। বিদেশী শিক্ষার্থীরাও আগের মতো ভর্তি হচ্ছে না বাংলাদেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত বিদেশী শিক্ষার্থীদের আসন ৪৫ শতাংশ পূরণ হয়েছিল। কিন্তু ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ২৫ শতাংশ, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ২২ শতাংশ এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষাবর্ষে ২৩ শতাংশ বিদেশী শিক্ষার্থীদের আসন ফাঁকা রয়েছে। ফলে বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষাখাতে সরকার কাঙিখত বৈদেশিক মুদ্রা পাচ্ছে না।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. শেখ মহিউদ্দীন বলেন, দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষায় বেসরকারি খাতের অবদান অপরিসীম। কিন্তু সরকার বেসরকারি স্বাস্থ্য শিক্ষার সহজীকরণে নজর না দিয়ে নতুন নতুন নীতিমালা তৈরি করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বেসরকারি স্বাস্থ্য শিক্ষা খাতে বিনিয়োগকারী ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতামতকে উপেক্ষা করে সরকার বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে অটোমেশন চালু করেছে।
তিনি আরো বলেন, অটোমেশন একটি জটিল প্রক্রিয়া। যা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বান্ধব না। এ কারণে শিক্ষার্থীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। যেমন চট্টগ্রামের শিক্ষার্থী বরিশালে গিয়ে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে চায় না। বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তিচ্ছুরা অধিকাংশ ধনী পরিবারের। তারা নিজেদের পছন্দ মতো মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে চায়। অটোমেশনের নামে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সুতরাং বেসরকারি মেডিকেল কলেজ গুলোকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে এখনই অটোমেশন প্রক্রিয়া বন্ধ করা প্রয়োজন।
চলতি ২০২৪-২৫ শিক্ষা বর্ষে সব মিলিয়ে ৪৬৭টি আসন ফাঁকা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন। শিক্ষার্থী না পেয়ে অনেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজকে লোকসান গুনতে গুনতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। তারা বলছে, অটোমেশনের কারণে বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তি হতে চার থেকে ছয় মাস লেগে যাচ্ছে। ২০২২-২৩ শিক্ষা বর্ষে অটোমেশন পদ্ধতি চালু করলেও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ কিংবা চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের কোনো মতামত নেয়া হয়নি। অটোমেশন চালু হওয়ার পর ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ২১৭ টি, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ১৪২ টি আসন ফাঁকা ছিল। অটোমেশন পদ্ধতি চালুর আগে দেশের কোন বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন ফাঁকা থাকতো না।
বেসরকারি মেডিকেলে শিক্ষার্থীরা নিজস্ব অর্থায়নে লেখাপড়া করেন, কিন্তু সেই শিক্ষার্থীদেরই পছন্দের মূল্যায়ন হয় না। এ কারণেও বেসরকারি মেডিকেলে কলেজে পড়ার আগ্রহ হারাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শুধু দেশীয় শিক্ষার্থী নন, বিদেশী শিক্ষার্থীরাও অটোমেশন জটিলতায় বাংলাদেশের মেডিকেল শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষ। অভিভাবকদের দাবি, অটোমেশনের নামে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণ করা হচ্ছে।
অন্য দিকে অভিভাবকরা বলছেন, অর্থ খরচ করেন তারা, পছন্দ ঠিক করে দেয় সরকার- এটি হতে পারে না। অটোমেশনের কারণে অর্থ থাকলেও পছন্দের কলেজে অনেকেই ভর্তি হতে পারছেন না। অটোমেশন পদ্ধতি বাতিল করে আগের ব্যবস্থায় ফিরে গেলে শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সুবিধা হবে।
প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, এসব ছাড়াও বেসকারি মেডিকেল কলেজ রিকগনিশন কমিটি (বিএমএন্ডডিসি, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়) পৃথকভাবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনের নামে ঝামেলা করে। তাদেরকে উৎকোচ না দিলে ঝামেলা মেটানো যায় না, শেষ পর্যন্ত উৎকোচ দিতেই হয়।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো আরো অভিযোগ করছে, অটোমেশনের কারণে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৈরি ‘ভর্তি হতে ইচ্ছুক’ তালিকায় শিক্ষার্থীদের পছন্দকে গুরুত্ব না দেয়ায় অনেকে শেষ পর্যন্ত এমবিবিএস কোর্স শেষ করতে পারেন না, ঝরে পড়েন। যেমন রাজধানীতে বেড়ে ওঠা শিক্ষার্থীরা রাজধানীতেই থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু যারা ঢাকার বাইরে গ্রামের দিকে চলে যেতে বাধ্য হন তারা অনেক সময় ঝরে পড়েন। তা ছাড়া নিজেদের পছন্দ উপেক্ষিত হয় বলেও শেষ পর্যন্ত মানিয়ে নিতে পারেন না বলে ঝরে পড়েন অনেকে।
এছাড়া বেসরকারি মেডিকেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, চিকিৎসা শিক্ষা খাতে এক দেশে দুই নীতি। আর্মি মেডিকেল কলেজ গুলো অটোমেশনের বাইরে রয়েছে। তারা সরকারী নীতিমালার বাইরে থেকে মেডিকেল কলেজ পরিচালনা করছেন। সুতরাং অটোমেশনরে নামে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ গুলো বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে। আর বেসরকারি মেডিকেল কলেজ গুলো ব্যক্তিগত বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত হলেও সরকার এই খাতে পৃষ্ঠপোষকতা না করে উল্টো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে সরকার। হঠাৎ হঠাৎ সরকারী নীতিমালায় উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। অটোমেশনের নামে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ সেক্টর ধ্বংস করার নীলনকশা করা হয়েছে। এতে বেসরকারি স্বাস্থ্য শিক্ষা খাতে বিনিয়োগকারীরা নিরুত্সাহিত হচ্ছে।
বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ সেক্টর ধ্বংস করার নীলনকশা করা হয়েছে। মনে রাখতে হবে প্রতিষ্ঠান গড়া কঠিন, ধ্বংস করা সহজ। প্রাইভেট সেক্টরে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা নিজের চয়েজমতো ভর্তি হবেন। কিন্তু অটোমেশনের কারণে তারা তা পারছেন না। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবাই হতাশ। হাত-পা বেঁধে পানিতে সাঁতার কাটতে দেয়ার মতো অবস্থায় অটোমেশন। যার জন্য এই পেশায় আসতে শিক্ষার্থীরা নিরুত্সাহিত হচ্ছেন। অটোমেশনের নামে এই সেক্টরকে ধ্বংস করার অপপ্রয়াস চলছে।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছেন, আসন শূন্য থাকায় ২০২২-২৩, ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ শিক্ষা বর্ষে অটোমেশনে ৪ থেকে ৬ বার মেধা তালিকা পাঠানো হলেও অনেকেই তাদের পছন্দের কলেজ না পেয়ে ভর্তি হয়নি। এ ছাড়া প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে অনেক শিক্ষার্থী মেডিকেল না পড়ে অন্যত্র চলে গেছে। এমনকি বিনা খরচে দরিদ্র ও মেধাবী কোটায় থাকার পরও পছন্দমতো কলেজ না পেয়ে লেখাপড়া শেষ করেননি অনেকে। অটোমেশন চালু হওয়ায় ক্লাসও বিলম্বে শুরু করতে হয়। কয়েকবার মেধা তালিকা প্রকাশের পরও আসন খালিই থাকছে। আবার এই বার বার মেধা তালিকা প্রকাশের কারণে ভর্তি হওয়া অনেক শিক্ষার্থী অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। বিদেশী শিক্ষার্থীরাও আগের মতো ভর্তি হচ্ছে না বাংলাদেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত বিদেশী শিক্ষার্থীদের আসন ৪৫ শতাংশ পূরণ হয়েছিল। কিন্তু ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ২৫ শতাংশ, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ২২ শতাংশ এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষাবর্ষে ২৩ শতাংশ বিদেশী শিক্ষার্থীদের আসন ফাঁকা রয়েছে। ফলে বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষাখাতে সরকার কাঙিখত বৈদেশিক মুদ্রা পাচ্ছে না।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. শেখ মহিউদ্দীন বলেন, দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষায় বেসরকারি খাতের অবদান অপরিসীম। কিন্তু সরকার বেসরকারি স্বাস্থ্য শিক্ষার সহজীকরণে নজর না দিয়ে নতুন নতুন নীতিমালা তৈরি করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বেসরকারি স্বাস্থ্য শিক্ষা খাতে বিনিয়োগকারী ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতামতকে উপেক্ষা করে সরকার বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে অটোমেশন চালু করেছে।
তিনি আরো বলেন, অটোমেশন একটি জটিল প্রক্রিয়া। যা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বান্ধব না। এ কারণে শিক্ষার্থীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। যেমন চট্টগ্রামের শিক্ষার্থী বরিশালে গিয়ে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে চায় না। বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তিচ্ছুরা অধিকাংশ ধনী পরিবারের। তারা নিজেদের পছন্দ মতো মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে চায়। অটোমেশনের নামে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সুতরাং বেসরকারি মেডিকেল কলেজ গুলোকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে এখনই অটোমেশন প্রক্রিয়া বন্ধ করা প্রয়োজন।