নওগাঁর বদলগাছীতে গর্ভবতী গাভী জবাই করে মাংস বিক্রি করলো কসাই!

আপলোড সময় : ২১-০৯-২০২৫ ১০:০৩:২৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২১-০৯-২০২৫ ১০:০৩:২৭ অপরাহ্ন
নওগাঁর বদলগাছীর কোলা হাটে গর্ভবতী গাভী জবাই করে মাংস বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একাধিক  কসাইয়ের  বিরুদ্ধে। কোন রকম পরীক্ষা ছাড়াই গরু জবাই করার বিষয়টি জানার পরেও কোলা হাটের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত এআই টেকনিশিয়ান রাজু বিষয়টি প্রশাসনকে না জানিয়ে স্থানীয় ভাবে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করেন। গর্ভবতী গাভীর মাংস বিক্রি হয়ে যাবার পর রাতে জবাই করার স্থানে বাছুর পড়ে থাকলে বিষয়টি নিয়ে এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এ রকম ঘটনা বারবার কোলাহাটে ঘটলে জরিতরা ধরাছোঁয়ার বাহিরে থাকে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন। 

জানাগেছে, গত ১৯শে সেপ্টেম্বর শুক্রবারে বদলগাছীর ঐতিহ্যবাহী গরুর হাট নামে পরিচিত কোলা হাটে গর্ভবতী গাভী জবাই করে মাংস বিক্রি করার পরে গরু জবাই করার স্থানে একটি বাছুর পড়ে থাকে। শুক্রবার রাতে শিয়াল,কুকুর বাছুরটিকে নিয়ে টানাহ্যাঁচড়ে করতে লাগলে বিষয়টি কোলাবাসীর নজরে আসে। গতকাল ২০শে সেপ্টেম্বর শনিবার গর্ভবতীগাভী জবাই করার পর গাভীর পেটে থাকা বাছুর টি জবাইকৃত স্থানে পড়ে থাকার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চারিদিকে নিন্দার ঝড় শুরু হয়। বিষয়টি জানার পরে কোলাহাটের ইজরাদার জুয়েল ও কোলা বণিক সমিতি মিলে কোলা হাটের মাংস বিক্রয় কেন্দ্রের সেডে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। 

স্থানীয় কোলাবাসী বলেন, বারবার কোলাহাটে এ রকম ঘৃণিত কাজ করে কিছু কসাই। বিষয়টি জানার পরে তেমন কোন ব্যবস্থা হয় না কসাইদের। এর আগেও একাধিক কসাই অসুস্থ গরু,মৃতপ্রায় গরু বেশি লাভের আশায় অল্প দামে কিনে জবাই করে কোলা এবং ভান্ডারপুর হাটে বিক্রি করে।

স্থানীয় রুহেল, বলেন, গত ১৯শে সেপ্টেম্বর শুক্রবার কোলাহাটে অনেক গুলো গুরু জবাই হয় এবং সকল গরুর মাংস বিক্রি হয়ে যায়। রাতে জবাই করার স্থানে গেলে একটু মৃত গরুর বাচ্চা দেখতে পাওয়া যায়। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। বারবার কসাইরা এমন অপরাধ করার সাহস যেন না পায়।

 তিনি আরও বলেন,কম দামে কোলা হাটে মাংস বিক্রি হওয়া ব্যাপারটা সবাই জানে তাই দূর দূরান্ত থেকে লোকজন এসে থেকে মাংস নিয়ে যায়। এবার এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। 

কোলা হাটের গরু জবাইয়ের দ্বায়িত্বে থাকা এআই টেকনিশিয়ান রাজু বলেন,  সেদিন আমি অনেক আগেই গেছি, সকাল ৮টার দিকে মনে করলাম যে আমি ভাত খেয়ে আসি সেই টাইমে গরুটি জবাই করেছে। আমার কাছে থেকে কাগজও নায়নি গরু পরীক্ষাও করে নি। কারা জবাই করেছে জানতে চাইলে এআই টেকনিশিয়ান রাজু বলেন, স্থানীয় এক  কসাই এই গরু জবাই করেছে । বিষয়টি কি প্রশাসনকে জানাইছেন কিনা জানতে চাইলে এআই রাজু বলেন, এটা স্থানীয় ভাবে সাগর ভাইকে বলেছি, স্থানীয় ভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছি এছাড়া কাউকে বিষয়টি জানান নি।

এ ব্যপারে স্থানীয় নেতা সাগর জানান, গর্ভবতী গাভী জবাইয়ের ব্যপারে আমাকে কেউ জানাই নি। শুক্রবার রাতে বিষয়টি জানার পরেও আমরা তল্লাশি করছি কে এই কাজ করেছে। আমরা স্থানীয়ভাবে এর বিচার চাই। 

এ ব্যপারে চাইলে কসাই দুলালের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেস্টা করলে মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ দেখায়।

এ ব্যাপারে ঐ কসাই বলেন, সবচেয়ে বড় কথা ইয়া আমি গরুটা যে জবাই করিচ্ছে যে চোর পালে যাওয়ার পর রাত বারোটার দিকে বলতেছে ইংকা ইংকা গরুটা গাবিন। আমি ফোন দিচ্ছি তোরা ফ্রিজে থুলু না কা বাচ্চা থুলুনা কান আমি দেখতাম তোরা কি করলু মোবাইলে ছবি তুলে থুলু। গরু তো জবাই হয়েছে ১৫টা।কে করলো কাংকাকরে কবো।

এ ব্যপারে কোলা বাজারের বণিক সমিতির সভাপতি রুনজু জানান, বিষয়টি জানার পরে মাংস বিক্রির স্থানে তালা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় কসাই দুলাল ও সোহেল গায়ের জোরে এরকম কাজ করে আসছে আর দায়িত্বপ্রাপ্ত এ আই টেকনিশিয়ান তাদেরকে কিছু বলে না। আজকে বিষয়টি নিয়ে বসার কথা আছে।

এ ব্যপারে কোলা হাট ইজারাদার জুয়েল আমান জানান, গর্ভবতীগাভী জবাই করে মাংস বিক্রি করার বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে ব্যপক সমালোচনা শুরু হলে গতকাল সন্ধায় বনিক সমিতি ও হাট ইজারাদার মিলে মাংস বিক্রির শেডে তালা মেরে বন্ধ করা হয়েছে।বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কোলাহাটে সকল প্রকার গরু জবাই ও মাংস বিক্রি বন্ধ থাকিবে। 

এ ব্যপারে কোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও হাট কমিটির সভাপতি শাহীনুর ইসলাম জানান, এ ব্যপারে শুনেছি। ঘটনার দিন আমাকে কেউ জানায় নি। 

এ ব্যপারে জানতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের প্রাণীসম্পদ অফিসার রিপা রাণী জানান, যদি এআই টেকনিশিয়ানের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।স্থানীয় ভাবে এর ব্যবস্থা নিতে আগে নিতে হবে, আমরা যথেষ্ট পরিমানে তদারকি করি। কেউ যদি গরু জবাইয়ের সার্টিফিকেট ছাড়া গোপনে জবাই করে এটা আমাদের একার পক্ষে বন্ধ করা অসম্ভব। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বাজার কমিটি,ইজারাদারদের  এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে। গরুজবাইয়ের সময় লক্ষ রাখতে হবে।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান ছনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রাণীসম্পদের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]