
পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফকে সরাসরি সহযোগিতা করছে ভারত। সেখানে অবস্থিত অন্তত ছয়টি ঘাঁটি থেকে বাংলাদেশ বিরোধী সশস্ত্র কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্যের সীমান্তবর্তী দুর্গম অঞ্চলে স্থাপিত এসব ঘাঁটি থেকে নিয়মিতভাবে অস্ত্র ও সশস্ত্র সদস্য প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। যা দেশের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত বৈঠকে এসব ঘাঁটির বিষয়ে বাংলাদেশ বারবার আপত্তি জানালেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এতে সাড়া দেয়নি জানিয়েছে একাধিক নিরাপত্তা সূত্র।
শুধু তাই নয়, এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন পার্বত্য এলাকায় বছরে চাঁদাবাজি করছে তিন শতাধিক কোটি টাকা। ওই টাকায় সংগঠনের শীর্ষ নেতা প্রসীত খীসাসহ নেতাদের অনেকের সেখানে বাড়ি ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এপারে খুন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে বিনা বাধায় ভারতে ঢুকে পড়ছে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা। এই ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা দিচ্ছে বিএসএফ।
গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানায়, ভারতে ত্রিপুরা রাজ্যের ধলাই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ইউপিডিএফ-এর ছয়টি প্রধান ঘাঁটি চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ঘাঁটি হচ্ছে, খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষীছড়ি ও দীঘিনালার সংলগ্ন ভারতীয় এলাকায় রতন নগর ক্যাম্প, দীঘিনালা সীমান্তের কাছাকাছি ধলাই জেলার ভিতরে টুইচামা ক্যাম্প, দীঘিনালা লাগোয়া ধলাই অঞ্চলে নারায়ণপুর ক্যাম্প, দীঘিনালা ও লক্ষীছড়ি সীমান্তসংলগ্ন ধলাই এলাকায় পঞ্চ রতন ক্যাম্প, মহালছড়ি ও দীঘিনালা ঘেঁষা ধলাই জেলার অংশে নারিকেল বাগান ক্যাম্প এবং রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির বাঘাইছড়ি ও দীঘিনালা সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত, ভারতের ভেতরে ফেনী সীমান্তের কাছে পূর্ব সাবরুম ক্যাম্প। এই ঘাঁটিগুলো থেকে চোরাপথে অস্ত্র, প্রশিক্ষিত সদস্য ও লজিস্টিক সহায়তা বাংলাদেশে পাচার করা হচ্ছে অভিযোগ রয়েছে।
ইউপিডিএফ-এর এসব ঘাঁটি থেকে পরিচালিত তৎপরতার প্রমাণ মিলেছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানে। এর মধ্যে গত ১৭ জানুয়ারি মিজোরামের মামিত জেলায় অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ছয়টি একে-৪৭ রাইফেল, ১০ হাজার ৫০টি কার্তুজ ও ১৩টি ম্যাগাজিনসহ একটি বড় অস্ত্রের চালান আটক করে। ভারতীয় গণমাধ্যমের মতে, এই অস্ত্রগুলো ইউপিডিএফ (মূল) ও মিয়ানমারের চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (সিএনএফ) এর যৌথ চোরাচালান পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাঠানো হচ্ছিলো। অভিযানে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়, যাদের মধ্যে সিএনএফ এর এক শীর্ষ নেতা ছিলেন।
গত ২২ জানুয়ারি আগরতলার আদর্শ পল্লী এলাকা থেকে ইউপিডিএফ এর সশস্ত্র কমান্ডার সমাজ প্রিয় চাকমাকে দুই রাউন্ড তাজা কার্তুজ, বাংলাদেশি ২৫ হাজার টাকা এবং ভারতীয় দুই লাখ রুপিসহ আটক করে আগরতলা পুলিশ। ২৩ জানুয়ারি ভারতের অরুণাচল প্রদেশে ইউপিডিএফ-এর সশস্ত্র সদস্য রাজু চাকমাকে একে-৪৭ রাইফেল, দুটি ম্যাগজিন, ৪৫ রাউন্ড গুলি ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ আটক করা হয়।
তিন পার্বত্য জেলা থেকে বছরে ৩৫০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি করছে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইউপিডিএফ। ব্যবসায়ী, কৃষি, যানবাহন, ঠিকাদার, কাঠ, বাঁশ, সাধারণ ও অপহরণ খাত থেকে আসে এই বিপুল অংকের টাকা। তার বিরাট অংশ ব্যয় করছে অস্ত্র গোলাবারুদ কেনায়। পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করতে সীমান্ত পথে আসছে ভারী যুদ্ধাস্ত্র আর গোলাবারুদ। এসব অস্ত্রের উৎসও ভারত। সাম্প্রতিককালে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির হাত ধরেও ভারী আগ্নেয়াস্ত্র আসছে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হাতে। ভারতেই বাংলাদেশ বিরোধী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানা রয়েছে এ অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিনের। তবে সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে কথিত একটি ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইউপিডিএফের নজিরবিহীন সন্ত্রাসী তাণ্ডবের পর এ বিষয়টি ফের আলোচনায় এসেছে।
ইউপিডিএফ-এর ভারতের ঘাঁটি থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র ও সদস্য প্রবেশের বিষয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে বিজিবি ও বিএসএফ-এর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ একাধিকবার উদ্বেগ ও আপত্তি জানিয়েছে। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো প্রতিক্রিয়া বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলছে নিরাপত্তা সূত্রগুলো। শুধু তাই নয় অনেক সময় ইউপিডিএফ সদস্যরা বিএসএফ সদস্যদের সামনেই সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করলেও, ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা সেগুলো ‘দেখেও না দেখার ভান’ করে থাকেন।
স্থানীয়রা বলছেন, কথিত ধর্ষণের ঘটনাটি ছিল মূলত অজুহাত। আর ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ইউপিডিএফ। মারমা কিশোরীকে অপহরণের ঘটনায় শয়ন শীল নামে এক যুবক ধরা পড়ে। আর যে পাঁচ জনের নাম এসেছে তাদের মধ্যে দুই জন চাকমা, দুই জন মারমা এবং এক জন হিন্দু। তাছাড়া ওই কিশোরীকে উদ্ধারের পর মেডিকেল টেস্টে ধর্ষণেরও কোনো আলামত মেলেনি। কিশোরী মারমা সম্প্রদায়ের হলেও মারমা জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ওই ঘটনা নিয়ে কোনোরকম রাজনীতি না করার আহ্বান জানানো হয়।
অথচ কথিত ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে পাহাড়ি বাঙালি দাঙ্গা সৃষ্টির সব অপচেষ্টা চালিয়েছে ইউপিডিএফ। তারা ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’র ব্যানারে অবরোধসহ নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। পরে দেখা যায় জুম্ম ছাত্র জনতার নেতা মূলত তারাই। খাগড়াছড়িতে সহিংসতার সময় ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা সাধারণ উপজাতিদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। অথচ এ নৈরাজ্যের সাথে গুটিকয়েক অপরাধী ছাড়া উপজাতিদের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না।
ওদিকে, বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বাংলাদেশ অংশের সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রয়েছে কাঠামোগত দুর্বলতা। সীমান্ত চৌকিগুলোর (বর্ডার আউটপোস্ট) একটির সঙ্গে আরেকটির দূরত্ব অনেক বেশি, যা সাধারণত ৭ থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফলে মাঝখানের বিশাল অরক্ষিত অংশ দিয়ে অবাধে সীমান্ত পেরিয়ে যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছে, যা ইউপিডিএফসহ অন্যান্য চোরাচালানকারী গোষ্ঠীগুলোর জন্য সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি করছে।
এ প্রেক্ষিতে সামরিক বিশেষজ্ঞরা সীমান্ত এলাকায় দ্রুত সীমান্ত সড়ক (বর্ডার রোড) নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। যাতে পাহাড়ি ও দুর্গম অঞ্চলগুলোতেও দ্রুততর টহল ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়।
এ প্রসঙ্গে নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. এমদাদুল ইসলাম বললেন,পার্বত্য এলাকায় জাতিগত বিরোধের সুযোগ নিয়ে বাইরের শক্তির ইন্ধনের কারণে মাঝে মাঝে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। ভারতের অভ্যন্তরে ইউপিডিএফ-এর ঘাঁটি থেকে পরিচালিত কার্যক্রম দুই দেশের নিরাপত্তা সহযোগিতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে এই ধরনের সশস্ত্র তৎপরতা মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এ পরিস্থিতিতে সীমান্ত নজরদারি বৃদ্ধি, গোয়েন্দা সহযোগিতা এবং রাজনৈতিক স্তরে কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
শুধু তাই নয়, এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন পার্বত্য এলাকায় বছরে চাঁদাবাজি করছে তিন শতাধিক কোটি টাকা। ওই টাকায় সংগঠনের শীর্ষ নেতা প্রসীত খীসাসহ নেতাদের অনেকের সেখানে বাড়ি ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এপারে খুন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে বিনা বাধায় ভারতে ঢুকে পড়ছে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা। এই ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা দিচ্ছে বিএসএফ।
গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানায়, ভারতে ত্রিপুরা রাজ্যের ধলাই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ইউপিডিএফ-এর ছয়টি প্রধান ঘাঁটি চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ঘাঁটি হচ্ছে, খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষীছড়ি ও দীঘিনালার সংলগ্ন ভারতীয় এলাকায় রতন নগর ক্যাম্প, দীঘিনালা সীমান্তের কাছাকাছি ধলাই জেলার ভিতরে টুইচামা ক্যাম্প, দীঘিনালা লাগোয়া ধলাই অঞ্চলে নারায়ণপুর ক্যাম্প, দীঘিনালা ও লক্ষীছড়ি সীমান্তসংলগ্ন ধলাই এলাকায় পঞ্চ রতন ক্যাম্প, মহালছড়ি ও দীঘিনালা ঘেঁষা ধলাই জেলার অংশে নারিকেল বাগান ক্যাম্প এবং রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির বাঘাইছড়ি ও দীঘিনালা সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত, ভারতের ভেতরে ফেনী সীমান্তের কাছে পূর্ব সাবরুম ক্যাম্প। এই ঘাঁটিগুলো থেকে চোরাপথে অস্ত্র, প্রশিক্ষিত সদস্য ও লজিস্টিক সহায়তা বাংলাদেশে পাচার করা হচ্ছে অভিযোগ রয়েছে।
ইউপিডিএফ-এর এসব ঘাঁটি থেকে পরিচালিত তৎপরতার প্রমাণ মিলেছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানে। এর মধ্যে গত ১৭ জানুয়ারি মিজোরামের মামিত জেলায় অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ছয়টি একে-৪৭ রাইফেল, ১০ হাজার ৫০টি কার্তুজ ও ১৩টি ম্যাগাজিনসহ একটি বড় অস্ত্রের চালান আটক করে। ভারতীয় গণমাধ্যমের মতে, এই অস্ত্রগুলো ইউপিডিএফ (মূল) ও মিয়ানমারের চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (সিএনএফ) এর যৌথ চোরাচালান পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাঠানো হচ্ছিলো। অভিযানে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়, যাদের মধ্যে সিএনএফ এর এক শীর্ষ নেতা ছিলেন।
গত ২২ জানুয়ারি আগরতলার আদর্শ পল্লী এলাকা থেকে ইউপিডিএফ এর সশস্ত্র কমান্ডার সমাজ প্রিয় চাকমাকে দুই রাউন্ড তাজা কার্তুজ, বাংলাদেশি ২৫ হাজার টাকা এবং ভারতীয় দুই লাখ রুপিসহ আটক করে আগরতলা পুলিশ। ২৩ জানুয়ারি ভারতের অরুণাচল প্রদেশে ইউপিডিএফ-এর সশস্ত্র সদস্য রাজু চাকমাকে একে-৪৭ রাইফেল, দুটি ম্যাগজিন, ৪৫ রাউন্ড গুলি ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ আটক করা হয়।
তিন পার্বত্য জেলা থেকে বছরে ৩৫০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি করছে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইউপিডিএফ। ব্যবসায়ী, কৃষি, যানবাহন, ঠিকাদার, কাঠ, বাঁশ, সাধারণ ও অপহরণ খাত থেকে আসে এই বিপুল অংকের টাকা। তার বিরাট অংশ ব্যয় করছে অস্ত্র গোলাবারুদ কেনায়। পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করতে সীমান্ত পথে আসছে ভারী যুদ্ধাস্ত্র আর গোলাবারুদ। এসব অস্ত্রের উৎসও ভারত। সাম্প্রতিককালে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির হাত ধরেও ভারী আগ্নেয়াস্ত্র আসছে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হাতে। ভারতেই বাংলাদেশ বিরোধী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানা রয়েছে এ অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিনের। তবে সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে কথিত একটি ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইউপিডিএফের নজিরবিহীন সন্ত্রাসী তাণ্ডবের পর এ বিষয়টি ফের আলোচনায় এসেছে।
ইউপিডিএফ-এর ভারতের ঘাঁটি থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র ও সদস্য প্রবেশের বিষয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে বিজিবি ও বিএসএফ-এর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ একাধিকবার উদ্বেগ ও আপত্তি জানিয়েছে। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো প্রতিক্রিয়া বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলছে নিরাপত্তা সূত্রগুলো। শুধু তাই নয় অনেক সময় ইউপিডিএফ সদস্যরা বিএসএফ সদস্যদের সামনেই সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করলেও, ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা সেগুলো ‘দেখেও না দেখার ভান’ করে থাকেন।
স্থানীয়রা বলছেন, কথিত ধর্ষণের ঘটনাটি ছিল মূলত অজুহাত। আর ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ইউপিডিএফ। মারমা কিশোরীকে অপহরণের ঘটনায় শয়ন শীল নামে এক যুবক ধরা পড়ে। আর যে পাঁচ জনের নাম এসেছে তাদের মধ্যে দুই জন চাকমা, দুই জন মারমা এবং এক জন হিন্দু। তাছাড়া ওই কিশোরীকে উদ্ধারের পর মেডিকেল টেস্টে ধর্ষণেরও কোনো আলামত মেলেনি। কিশোরী মারমা সম্প্রদায়ের হলেও মারমা জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ওই ঘটনা নিয়ে কোনোরকম রাজনীতি না করার আহ্বান জানানো হয়।
অথচ কথিত ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে পাহাড়ি বাঙালি দাঙ্গা সৃষ্টির সব অপচেষ্টা চালিয়েছে ইউপিডিএফ। তারা ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’র ব্যানারে অবরোধসহ নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। পরে দেখা যায় জুম্ম ছাত্র জনতার নেতা মূলত তারাই। খাগড়াছড়িতে সহিংসতার সময় ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা সাধারণ উপজাতিদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। অথচ এ নৈরাজ্যের সাথে গুটিকয়েক অপরাধী ছাড়া উপজাতিদের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না।
ওদিকে, বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বাংলাদেশ অংশের সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রয়েছে কাঠামোগত দুর্বলতা। সীমান্ত চৌকিগুলোর (বর্ডার আউটপোস্ট) একটির সঙ্গে আরেকটির দূরত্ব অনেক বেশি, যা সাধারণত ৭ থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফলে মাঝখানের বিশাল অরক্ষিত অংশ দিয়ে অবাধে সীমান্ত পেরিয়ে যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছে, যা ইউপিডিএফসহ অন্যান্য চোরাচালানকারী গোষ্ঠীগুলোর জন্য সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি করছে।
এ প্রেক্ষিতে সামরিক বিশেষজ্ঞরা সীমান্ত এলাকায় দ্রুত সীমান্ত সড়ক (বর্ডার রোড) নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। যাতে পাহাড়ি ও দুর্গম অঞ্চলগুলোতেও দ্রুততর টহল ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়।
এ প্রসঙ্গে নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. এমদাদুল ইসলাম বললেন,পার্বত্য এলাকায় জাতিগত বিরোধের সুযোগ নিয়ে বাইরের শক্তির ইন্ধনের কারণে মাঝে মাঝে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। ভারতের অভ্যন্তরে ইউপিডিএফ-এর ঘাঁটি থেকে পরিচালিত কার্যক্রম দুই দেশের নিরাপত্তা সহযোগিতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে এই ধরনের সশস্ত্র তৎপরতা মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এ পরিস্থিতিতে সীমান্ত নজরদারি বৃদ্ধি, গোয়েন্দা সহযোগিতা এবং রাজনৈতিক স্তরে কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।