রাজশাহীতে চাহিদার বিপরীতে ঘাটতি ২ কোটি ৩০ লাখ লিটার পানি, অপচয় ৩ কোটি লিটার

আপলোড সময় : ১৩-১০-২০২৫ ০২:০৪:৩৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৩-১০-২০২৫ ০২:০৪:৩৭ অপরাহ্ন
ওয়াসার পানি সরবারহের পাইপ ফেটেছে মাটির নিচে। সেখান থেকে পানি বেরিয়ে দ্রুত গতিতে প্রবাহিত হচ্ছে পাশের ড্রেনে। রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল ৯ টায় সেখান থেকে ড্রেনে (নহর) পানি প্রবাহের পাঁচ ফুট দূরে আধা লিটারের প্লাস্টিকের বোতল ধরলে দেড় মিনিটে ভর্তি হয়েছে। তাহলে এক ঘণ্টায় ২০ লিটার। এমনভাবে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় ২৪০ লিটার পানি অপচয় হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি- পানি অপচয় বন্ধে ভ্রুক্ষেপ নেই ওয়াসার।

রাজশাহী নগরীর বুধপাড়া গণির মোড়ের নাজমুল ও আলম হোসেনের বাড়ির সড়কের পাশে এমন চিত্র দেখা গেছে। স্থানীয়রা জানায়- তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে প্রায় তিন বছর আগে পাকা সড়ক হয়। সড়কের নিচে পড়ে যায় ওয়াসার পানির পাইপ। সে সময় পাইপটি ফেটে যায়। ওয়াসার লোকজন এসে মেরামত করে গিয়েছিল, কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। বরং ফাটল প্রসারিত হয়েছে। স্থানীয়রা ওয়াসায় কয়েক দফা অভিযোগও জানায় তাতে কাজ হয়নি। ফলে এক বছরের বেশি সময় ধরে এইভাবে পানি ড্রেনে পড়ছে।

রাজশাহী ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে- প্রতিদিন ৩ কোটি লিটার পানি অপচয় হয়। এরমধ্যে চুরি সংযোগ ছাড়াও পাইপ লিকেজের বিষয় অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া অনেক বস্তি এলাকায় ওয়াসার পানি ব্যবহার হয়। সেই পানির বিল পাই না ওয়াসা। বিল না পাওয়া পানিকে অপচয় বলছে ওয়াসা। যা মোট পানির সরবরাহের ২৮ শতাংশ। প্রতিদিন সকাল ৬ টায় ওয়াসার পানি সরবরাহ পাম্প চালু করা হয়। চলে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত। ওয়াসার কর্মকর্তাদের দাবি ১২ ঘণ্টা চলে পানি সরবরাহের পাম্প।
 
রাজশাহী সিটি করপোরেশনে (রাসিক) ওয়াসার পানির চাহিদা ১৩ কোটি লিটার। তার বিরপরীতে ওয়াসা পানি সরবরাহ করে ১০ কোটি ৭০ লাখ লিটার। এরমধ্যে ৩ কোটি লিটার বিল না পাওয়া পানির মধ্যে লাইন লিকেজ, চুরি করে পানি ব্যবহার ইত্যাদি রয়েছে। যাকে অপচয় বলছে ওয়াসা। যা মোট সরবরাহের ২৮ শতাংশ পানি।

ওয়াসার দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে- চাহিদার ১৩ কোটি লিটারের বিপরীতে সরবরাহ হয় ১০ কোটি ৭০ লাখ লিটার পানি। সেখানে ঘাটতি ২ কোটি ৩০ লাখ লিটার। এরমধ্যে মোট সরবরাহের ২৮ শতাংশ পানি বিভিন্নভাবে অপচয় হয়। তা থেকে ওয়াসা কোন মূল্য পায় না। এমন পানি ৩ কোটি লিটার। তাহলে রাসিকের ৪০ হাজার গ্রাহক পায় ৫ কোটি ৪০ লাখ লিটার পানি।

রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে গিয়ে দেখা গেছে- সেখানে জমে থাকা পানিতে খুনসুটিতে মেতেছে পাতিহাঁসের ঝাঁক। কাছে যেতেই পালিয়ে গেল। পানি নেমে যাওয়ার পুরো জায়গাজুড়ে শেওলা জমে গেছে। ফুটে আছে দীর্ঘদিনের পানি নামার ছাপ। স্থানীয় বাসিন্দা পারভেজ ইসলাম বললেন- দীর্ঘদিন থেকে এইভাবে পানি বের হয়। ফাটা পাইপের পানি ড্রেনে পড়ে। এখানে ড্রেন না থাকলে পানি সড়কে জমে থাকত।  কিন্তু প্রতিদিন প্রচুর পানি অপচয় হয়।

রিজভী ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এমন অবস্থা। সব সময় পানি বের হয়ে নহরে (ড্রেনে) পড়ে। এক বছরের বেশি সময় ধরে এমন অবস্থা। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ওয়াসা একবারও মেরামত করতে আসেনি।
একই এলাকার গুলু ইসলামের বাড়ির সামনের নহরের উপর দিয়ে যাওয়া ওয়াসার স্টিল পাইপের জয়েন্টে সমস্যা থেকে দীর্ঘদিন থেকে পানি বের হয়। এনিয়ে তারা ওয়াসায় অভিযোগ দিয়েছেন। চারমাস আগে ওয়াসার কর্মীরা মেরামত করে গেছেন। কিন্তু পানি বন্ধ করতে পারেন নি তারা।

এ বিষয়ে রাজশাহী ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী পারভেজ মামুদ বলেন, রাজশাহী নগরীতে প্রতিদিন পানির চাহিদা ১৩ কোটি লিটার। ওয়াসা সরবারহ করে ১০ কোটি ৭০ লাখ লিটার। এরমধ্যে ৩ কোটি লিটার বিল পায় না ওয়াসা। সেগুলো লাইন লিকেজ ছাড়াও চুরি হয়। যাকে অপচয় বলা হয়। যা মোট সরবরাহের ২৮ শতাংশ পানি। অর্থাৎ ৩ কোটি লিটার। নগরীর বুধপাড়ায় পাইপ থেকে পানি বের হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন- বিষয়টি শুনলাম। দ্রুত লোক পাঠিয়ে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]