তৃতীয় ব্যক্তিকে শরীর দেওয়া যায়, মন দিলেই অন্যায়! কাজল-টুইঙ্কলের বক্তব্যে বিতর্ক

আপলোড সময় : ২৮-১০-২০২৫ ০৭:২৭:৩৩ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৮-১০-২০২৫ ০৭:২৭:৩৩ অপরাহ্ন
প্রেমে মন আগে, না কি শরীর? মন ছাড়া প্রেম যেমন অসম্পূর্ণ, তেমনই শরীরী দেওয়া-নেওয়াও তীব্রতর করে সেই প্রেমকে, এগিয়ে দেয় কয়েক ধাপ। যুগের পর যুগ ধরে এটাই প্রেমের চেনা ছক। তবে সমাজ যত এগিয়েছে, ততই নানা রং মিশেছে এই সমীকরণে। এই মুহূর্তে সমাজমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রে একটি চর্চা। একটা সম্পর্কে কোনটার মূল্য বেশি— মন না কি শরীর? এদের মধ্যে কোনটা বিশ্বাসঘাতকতা করলে সম্পর্ক ভাঙবে? টুইঙ্কল খন্না ও কাজলের একটি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এই বিতর্ক ভেসে উঠেছে চারদিকে। দুই সঞ্চালিকা তথা অভিনেত্রীর দাবি, কোনও সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি এসে পড়লে তাকে মন দেওয়া যাবে না কোনও ভাবেই। তবে শরীর দিলে তাতে আপত্তি বা প্রতারণার কিছু দেখছেন না তাঁরা।

এখানেই ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন জাহ্নবী কপূর। ওই আলোচনায় উপস্থিত শ্রীদেবী-কন্যা অভিনেত্রীর মতে, প্রতারণার আবার শারীরিক-মানসিক কী? শরীর ও মন দুই-ই গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গী যদি শারীরিক ভাবেও প্রতারণা করেন, সেটাও ক্ষমার অযোগ্য। এই শুনে টুইঙ্কল ও কাজলের বক্তব্য, তাঁরা পঞ্চাশের কোঠায় বলেই আজ এই উপলব্ধি। বয়স বাড়লে জাহ্নবীও তাঁদের যুক্তি বুঝবেন। কাজল ও টুইঙ্কলকে সম্মতি জানিয়েছিলেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত আর এক তারকা— কর্ণ জোহর।

‘শরীর শরীর, তোমার মন নাই কুসুম?’ ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ উপন্যাসে শশীর এই সংলাপ বা স্বগতোক্তি নিয়ে আলোচনা হয় বিভিন্ন প্রসঙ্গে। এই সংলাপেও শরীরের থেকে মনকে কয়েক ধাপ এগিয়ে রেখেছিল মানিকের গড়া চরিত্র শশী। কিন্তু এত সহজে কি ছাড়পত্র দেওয়া যায় সম্পর্কে শারীরিক প্রতারণাকে? শারীরিক সম্পর্কে কি শুধুই রক্তমাংসের শরীর উপস্থিত থাকে? ক্ষণিকের ভাললাগা বা টানও কি সেখানে থাকে না? এমন নানা প্রশ্ন উঠছে।

যদিও দাবি করা হয়, নতুন প্রজন্ম মন ও শরীরের মাঝে গণ্ডি টানতে শিখেছে। প্রেমে যৌনতা থাকবেই, বা যৌনতায় প্রেম থাকতেই হবে— এমন কোনও নিয়ম নেই তাদের অভিধানে। ‘ফ্রেন্ড্‌স উইথ বেনিফিট্‌স’ থেকে ‘অ্যাসেক্সুয়াল প্রেম’— এমন নানাবিধ পোশাকি নাম রয়েছে তাদের অভিধানে। একই ভাবে বিবাহিত সম্পর্ক বা প্রেমের সম্পর্কের বাইরে শুধুই শরীরী সুখের সন্ধানও আজ বিচিত্র ঘটনা নয়। এটা কি অন্যায়, না কি আধুনিক সম্পর্কের আর এক ছকভাঙা রূপ? পুরনো এক সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন ক্যাটরিনা কইফ। অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, তিনি প্রেমে থাকতে ভালবাসেন। তাই সম্পর্ক বা বিয়ের বহু বছর কেটে গেলেও, মন ও শরীর সমান প্রাধান্য পাবে। কোনও রকমের বিশ্বাসঘাতকতা তিনি সহ্য করবেন না।

কাজল ও টুইঙ্কল ওই অনুষ্ঠানে বার বার বয়সের যুক্তি দেখিয়েছেন। তা হলে কি দাম্পত্যের বয়স বাড়লে শারীরিক টান আর থাকে না? শুধুই মনের টান? এ কি কেবলই ‘ফিক্স়ড ডিপোজ়িট’-এর মতো নিজের সঙ্গীকে পাশে রেখে দেওয়া? স্বামী বা স্ত্রী কেবলই যেন বিপদে আপদে পাশে থাকার সঙ্গী! তাঁকে স্থায়ী জায়গায় রেখে সমাজের চোখে ‘সুখী দম্পতি’র তকমা নিয়ে বাইরে রোমাঞ্চের খোঁজে বেরোনো কি প্রতারণা নয়? সৃজিত মুখোপাধ্যায় তাঁর ছবি ‘বাইশে শ্রাবণ’-এ ডালভাত ও বিরিয়ানির তুলনা টেনেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে স্ত্রী বা স্বামীকে ডালভাত বানিয়ে বাইরে বিরিয়ানির খোঁজে বেরোনো কতটা সম্মানজনক, সেই প্রশ্নও ওঠে এই প্রসঙ্গে।

বিশ্বাসঘাতকতা, প্রতারণা এই বিষয়গুলির কি কোনও ধরাবাঁধা সংজ্ঞা রয়েছে? প্রেমের বিষয়ে রাধা-কৃষ্ণের উদাহরণ টানা হয়। তাঁদের প্রেমও তো তথাকথিত ‘বৈধ’ নয়। তা হলে তাঁরা কী ভাবে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠলেন? রাধিকা আপ্তে অবশ্য মনে করেন, সম্পর্কে বহু ধূসর রং থাকে। সাদা-কালো চোখে সবটা বিচার করা যায় না। তিনি নিজে সম্পর্কে কখনও প্রতারণা করেননি। কিন্তু তা বলে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে নারাজ তিনি।

বলিউডে এই বিষয় নিয়ে চর্চা এখন তুঙ্গে। অথচ এই বলিউ়ডেই রয়েছে অসংখ্য বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের দৃষ্টান্ত। সেই ঝলক উঠে এসেছে আরিয়ান খানের ‘দ্য ব্যাডস অফ বলিউড’ সিরিজ়েও। প্রেমিক-প্রেমিকা এক সময়ে গিয়ে জানতে পারেন তাঁরা আসলে বৈমাত্রেয় ভাইবোন। বলিউডে নাকি বাস্তবেও এমন ঘটনা রয়েছে।

বিপাশা বসু এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, শুধুই বলিউড নয়। যে কোনও দুনিয়াতেই সম্পর্কে প্রতারণার মতো বিষয় রয়েছে। বিপাশা বলেছিলেন, “সম্পর্কে বা দাম্পত্যে প্রতারণার ঘটনা সর্বত্র রয়েছে। শুধুই আমাদের জগতে নয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, শারীরিক সম্পর্ককে হাতিয়ার করে অনেকে কর্মজগতের উন্নতির রাস্তা খুঁজছেন। আমার জন্য যে কোনও ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা অন্যায়। সম্পর্কে এক বার কেউ প্রতারণা করলে, আর আগের অবস্থায় পৌঁছোনো যায় না।”

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]