ধৈর্যের বিনিময় আল্লাহর ভালোবাসা

আপলোড সময় : ০৩-১১-২০২৫ ০৩:০৬:০৯ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৩-১১-২০২৫ ০৩:০৬:০৯ অপরাহ্ন
আমাদের দৈনন্দিন চলা ফেরায় যেসব গুণ ও সামর্থ্য আমাদের প্রয়োজন হয় সবর বা ধৈর্য সেগুলোর অন্যতম। ধৈর্য্য আমাদের জীবনে একটি বড় সম্পদ। আমি বলবো ধৈর্য হলো একটি কারেন্ট লিকুয়েড এসেট। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কত চমৎকারভাবে বলে গিয়েছেন, ধৈর্য্যের চেয়ে উত্তম ও বড় কোনো সম্পদ কাউকে দেওয়া হয়নি। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

তার মানে যে ধৈর্যের গুণ অর্জন করে ফেলল সে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ অর্জন করল। 

জীবনের প্রতিটি বাঁকে, প্রতিটি ক্ষণে এই সম্পদের প্রয়োজন হয়। আমাদের জীবনের পরতে পরতে কত উত্থান-পতন ঘটে, কত পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়, কত দুশ্চিন্তার মোকাবেলা করতে হয়, পারিবারিক জীবনে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মতপার্থক্য, অসংখ্য আবদার রক্ষা করা, মনোমালিন্য, মা-বাবা ও শশুর-শাশুড়ি সবাইকে মানিয়ে চলা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই ধৈর্য্য অমূল্য সম্পদ।

ধৈর্য জীবনের আলো
ধৈর্য এমন ইনভেস্ট যার ফলাফল সবসময় লাভজনক হয়, জীবন আলোকিত করে। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ধৈর্য হলো আলো।‌ (সহিহ মুসলিম) আলো সবসময় চারপাশের অন্ধকার দূর করে আমাদের সঠিক পথের দিশা দেয়। যে নিজের জীবনে যত বেশি ধৈর্য্যের সম্পদ ইনভেস্ট করবে, সে তত বেশি সফল হবে, আলোকিত হবে।

ধৈর্যের বিনিময় আল্লাহর ভালোবাসা
ইসলামে ধৈর্যের অতুলনীয় মূল্যায়ন করা হয়েছে। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে একাধিক আয়াতে ধৈর্যশীলদের জন্য তার ভালোবাসা ও সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, ‘আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন’ ‘আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের ভালোবাসেন’ ‘ধৈর্যশীলদের জান্নাতের সুসংবাদ দাও’।

ধৈর্য মানুষকে শক্তিশালী করে
আমাদের সমাজে যারা ধৈর্য্য ধরে, নীরবে সয়ে নেয়, অন্যের সুবিধা বিবেচনা করে ছাড় দেয়, তাদেরকে আমরা বোকা ভাবি, দূর্বল ভাবি। অথচ তারাই প্রকৃত বুদ্ধিমান ও শক্তিশালী। আশপাশের লোকজন ভাবে লোকটি দূর্বল তাই মেনে নিচ্ছে, অথচ হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী সেই প্রকৃত শক্তিশালী। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, সে শক্তিশালী নয় যে রাগের মাথায় হুট করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে বরং প্রকৃত শক্তিশালী ওই ব্যক্তি যে রাগের সময়ও ধৈর্য্য ধরতে পারে। (সহিহ বুখারি: ৬১১৪)

এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, পেশিশক্তি আসল শক্তি নয়, বরং নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার শক্তি হলো আসল শক্তি। যে কোনো পরিস্থিতিতে যে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সেই প্রকৃত শক্তিশালী ও বুদ্ধিমান।

ধৈর্য নিরাপত্তা দেয়
মানুষ যত বেশী ধৈর্য্যশীল হবে সমাজ তত বেশী নিরাপদ হবে, ক্ষতি থেকে বাঁচবে। কোরআনের সুরা আসরে আল্লাহ তাআলা কত চমৎকারভাবে বলেছেন, মহাকালের শপথ! মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু তারা নয়, যারা ইমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্য ধারণে পরস্পরকে উদ্ধুদ্ধ করে। (সুরা আসর: ১-৩)

অর্থাৎ সমগ্র মানবজাতি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও যারা আমলে মশগুল থাকে, যারা সমাজে সত্য ও ধৈর্যের উপদেশ দেয় একে অপরকে, তারা নিরাপদ থাকে।

আর ওপরে যেমন বলেছি, ধৈর্যশীলদের সঙ্গে থাকেন আল্লাহ তাআলা। আল্লাহ তাআলা যাদের সঙ্গে থাকেন, চলা, ফেরা, ওঠা, বসা সর্বক্ষেত্রে তারা আল্লাহর সাহায্য পায়। তাই একজন ধৈর্যশীল ব্যক্তি সব ক্ষেত্রে ক্ষতি থেকে বেঁচে যায়, নিরাপদ থাকে।

লেখক: খতিব, মকিম বাজার জামে মসজিদ, বংশাল, ঢাকা

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]