ভুলে যাওয়ার রোগ সারতে পারে হাঁটাহাঁটিতে!

আপলোড সময় : ০৪-১১-২০২৫ ০২:২২:০৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৪-১১-২০২৫ ০২:২২:০৭ অপরাহ্ন
অ্যালঝাইমার্সের মতো দুরারোগ্য রোগ সারানোর ওষুধ এখনও আসেনি। শুধু রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার নানা পদ্ধতি নিয়েই গবেষণা চলছে বিশ্ব জুড়ে। বয়সকালে স্মৃতি হারিয়ে যাওয়া বা অ্যালঝাইমার্সের মতো দুরারোগ্য ব্যাধির ঝুঁকি কমানো সম্ভব কি না, তা নিয়েই গবেষণা চলছে। দাবি করা হয়েছে, মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং তা থেকে অ্যালঝাইমার্সের মতো স্মৃতিনাশক রোগের কারণ অনেক রকমই হতে পারে। অ্যালঝাইমার্স হওয়ার নেপথ্যে যেমন ভাইরাস যোগ খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, তেমনই এর পিছনে জিনগত কারণও থাকতে পারে। আবার জীবনযাপনের পদ্ধতিও এর কারণ হতে পারে। ওষুধ বা নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসাপদ্ধতি যেহেতু নেই, তাই জীবনযাপনে নিয়ন্ত্রণ এনেই অ্যালঝাইমার্স বা স্মৃতিনাশের মতো মানসিক সমস্যাকে বশে রাখার চেষ্টা করতে হবে। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকেরা এই বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মতামত জানিয়েছেন।

বয়স ৪০ থেকে ৭৯ এমন ৭৮ হাজার মানুষজনকে নিয়ে হার্ভার্ডের গবেষকেরা একটি সমীক্ষা চালান। প্রত্যেককে পরিয়ে দেওয়া হয় ফিটনেস ট্র্যাকার। প্রতি দিন নিয়ম করে তাঁদের ৩,৮০০ থেকে ৫,০০০ পা হাঁটতে বলা হয়। সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে পাঁচ দিন এই অভ্যাস চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। মাসখানেক পরে দেখা যায়, যাঁরা নিয়ম মেনে হেঁটেছিলেন তাঁদের মস্তিষ্কের সক্রিয়তা অনেক বেড়েছে। হাঁটলে মস্তিষ্কে রক্তসঞ্চালন ভাল হয়, মস্তিষ্কের পেশির সক্রিয়তা বাড়ে, অক্সিজেন সরবরাহ হয় এবং স্মৃতিলোপের ঝুঁকি কমে। হাঁটলে এন্ডরফিন ও সেরোটোনিন হরমোনের ক্ষরণ হয় যা মনকে খুশি রাখে, অনিদ্রার সমস্যা দূর করে। এতে স্মৃতিশক্তিও উন্নত হয়।

‘জামা নিউরোলজি’ জার্নালে এই গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, অ্যালঝাইমার্সের মতো অসুখে শ্বাসপ্রশ্বাসের স্বাভাবিক হার অনেক বেড়ে যায়। এই রোগে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের প্রবাহ কমতে থাকে, সে কারণে গোলমাল বাধে। অ্যালঝাইমার্স রোগের নানা স্তর রয়েছে। দীর্ঘকালীন অবসাদ, বাইপোলার ডিজঅর্ডার থেকে অ্যালঝাইমার্স হতে পারে। অত্যধিক মানসিক চাপের কারণে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে গেলে তা মস্তিষ্কের কোষগুলির উপর প্রভাব ফেলে। ‘কগনিটিভ ডিসফাংশন’ হতে পারে। তখন ভুলে যাওয়ার সমস্যা বাড়ে। অ্যালঝাইমার্সের রোগীদের যে কেবল স্মৃতিনাশ হয়, তা নয়। যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে কোনও কিছুর পরিকল্পনা করা, যুক্তি দিয়ে বিচার করার ক্ষমতা, সমাজে মেলামেশা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন তাঁরা। কথাবার্তাও অসংলগ্ন হয়ে যায়। নিজের মনের ভাব ভাষায় ব্যক্ত করতে পারেন না। এই সব সমস্যারই সমাধান হতে পারে নিয়ম মেনে হাঁটলে।

হার্ভার্ড এজিং ব্রেন স্টডি (এইচএবিএস) নামক একটি সমীক্ষায় গবেষকেরা ২৯৬ জনকে নিয়ে একটি নিরীক্ষা চালান। তাঁদের বয়স ছিল ৫০ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে এবং প্রত্যেকেই অ্যালঝাইমার্স বা স্মৃতিনাশের মতো ব্যাধিতে ভুগছিলেন। গবেষকেরা ১৪ বছর ধরে সমীক্ষাটি চালান এবং দেখেন যাঁরা নিয়ম মেনে দিনে তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার পা হেঁটেছেন, তাঁদের রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আসলে স্মৃতিনাশের মতো রোগের একটা বড় কারণ হল অ্যামাইলয়েড ও টাও প্রোটিন। মস্তিষ্কে এই দুই প্রোটিন বেশি পরিমাণে জমা হতে থাকলেই স্মৃতির পাতা ধূসর হতে থাকে। যদি শারীরিক কসরত বাড়িয়ে দেওয়া যায়, তা হলে এই দুই প্রোটিন জমাট বাঁধতে পারে না। তখন স্মৃতিলোপের মতো অসুখ হওয়ার আশঙ্কাও থাকে না।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]