রাবিতে রেজিস্ট্রার ও রাকসু জিএসের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়

আপলোড সময় : ১০-১১-২০২৫ ০৬:৪৫:৩৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১০-১১-২০২৫ ০৬:৪৫:৩৭ অপরাহ্ন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মারের মধ্যে তীব্র বাগবিতণ্ডা ও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। 

রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুরে রেজিস্ট্রারের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত। জানা যায়, প্রায় ২৩ দিন ধরে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব চেয়ারম্যানকে অপসারণের আদেশে স্বাক্ষর করে সেটি রেজিস্ট্রার দপ্তরে পাঠান। কিন্তু রোববার পর্যন্ত চিঠিটি বিভাগীয় দপ্তরে না পৌঁছানোয় শিক্ষার্থীরা রাকসু জিএসের শরণাপন্ন হন।

জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার জানান, রোববার দুপুরে ২টার দিকে তিনি ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে রেজিস্ট্রারের দপ্তরে যান। এসময় রেজিস্ট্রারের ব্যক্তিগত সচিব তাকে জানান, রেজিস্ট্রার ভেতরে রাজশাহী মহানগর বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন এবং তাকে পরে আসতে বলা হয়েছে।

আম্মারের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের জরুরি বিষয়টি একটি রাজনৈতিক বৈঠকের জন্য আটকে রাখা হচ্ছে, এটা ভেবে তিনি রেজিস্ট্রারের কক্ষে প্রবেশ করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, আম্মার কক্ষে প্রবেশ করে রেজিস্টারকে জিজ্ঞাসা করেন, স্যার, আমি ভেতরে আসব না? উত্তরে রেজিস্ট্রার বলেন, তোমাকে আমি বাইরে ১০ মিনিট ওয়েট করতে বলেছি। এরপর আম্মার অভিযোগ করেন, আপনি স্যার চিঠি (ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সভাপতি অপসারণের চিঠি) আটকায় রাখছেন। এই কথায় রেজিস্ট্রার উত্তেজিত হয়ে বলেন, এই বেয়াদব ছেলে, কিসের চিঠি আটকায় রাখছি আমি? উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে রেজিস্ট্রার আম্মারকে গেট আউট বলে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এর প্রত্যুত্তরে আম্মার বলেন, কেন গেট আউট? তিনি নিজেকে শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং রাকসুর জিএস হিসেবে নিজের প্রবেশের অধিকারের কথা বলেন।

আম্মার অভিযোগ করে বলেন, রেজিস্ট্রার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভাগের চেয়ারম্যানকে অপসারণের চিঠিটি আটকে রেখেছিলেন, কারণ ওই চেয়ারম্যান রেজিস্ট্রারের প্রত্যক্ষ সমর্থনে পদে এসেছিলেন। তিনি আরও বলেন, তাকে জানানো হয়েছিল রেজিস্ট্রার বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, শিক্ষার্থীদের জরুরি প্রয়োজনের চেয়েও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছিল। তার মতে, শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে তাদের অধিকারের কথা বলতে যাওয়ায় তাকে অপমান করা হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মাসউদ তার বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের বিষয়টি আইনগত প্রক্রিয়াধীন ছিল এবং দাপ্তরিক কাজ সারতে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা সময় লাগছিল। তিনি জানান, আম্মারকে মাত্র দুই মিনিট অপেক্ষা করতে বলা হলেও তিনি অনুমতি ছাড়াই কক্ষে প্রবেশ করে ফুটেজবাজি ও মিথ্যাচার শুরু করেন। অধ্যাপক মাসউদ আরও স্পষ্ট করেন, তিনি বিএনপির কোনো নেতার সঙ্গে নয়, বরং ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত সৌজন্য সাক্ষাতে ছিলেন।

এনসিপি’র রাজশাহী মহানগরের আহ্বায়ক মোবাশ্বের রাজ নিশ্চিত করেছেন, তারা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছিলেন এবং সেখানে বিএনপির কেউ উপস্থিত ছিল না। তিনি মনে করেন, রেজিস্ট্রারের একান্ত সচিব সম্ভবত তাদের ভুল করে বিএনপি নেতা ভেবেছিলেন, যা থেকেই এই ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত হয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে। রাকসুর পক্ষ থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে রেজিস্ট্রারের আচরণের জন্য প্রশাসনের কাছে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা ও তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]