নাটোরের গুরুদাসপুরে নিজ বিদ্যালয়ের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া দুটি পৃথক মামলায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। অপহরণের দায়ে তাঁকে অতিরিক্ত ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর, ২০২৫) দুপুরে আদালতের বিচারক মোহাঃ মহিদুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন। দীর্ঘ তিন বছর পর ন্যায়বিচার পাওয়ায় রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১ অক্টোবর মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদ একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করেন। অপহরণের পর তাঁকে রাজশাহীর একটি বাসায় আটকে রেখে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মেয়েটির উপর কয়েক দফায় শারীরিক নির্যাতন চালান।
ওইদিনই রাতে পরীক্ষার্থীর মা অপহরণের অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও অভিযুক্ত ফিরোজ পালিয়ে যান। ঘটনার ১১ দিন পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে এবং আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর অভিযুক্ত ফিরোজ ভুক্তভোগীর পরিবার ও সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছিলেন।
স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় পুলিশ তদন্ত শেষে তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট প্রদান করে। চার্জ গঠনের সময় বিচারক দুইজনকে অব্যাহতি দিয়ে একমাত্র আসামি হিসেবে ফিরোজ আহমেদের বিচারকাজ শুরু করেন।
তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ, সাক্ষ্য গ্রহণ এবং যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মঙ্গলবার আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁকে কারাগারে নেওয়া হয়।
রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পি.পি.) মুন্সী আবুল কালাম আজাদ জানান, এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেঅন্যদিকে, আসামির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।