ট্রাম্প অকৃতজ্ঞ, আমি না থাকলে নির্বাচনে হেরে যেতেন: মাস্ক

আপলোড সময় : ০৬-০৬-২০২৫ ০৩:৪২:০১ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৬-০৬-২০২৫ ০৩:৪২:০১ অপরাহ্ন
সরকারি একটি বিলকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রীতিমতো ঝগড়া শুরু হয়েছে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলে সমালোচনা করেছেন তিনি।

সেই সঙ্গে মার্কিন এই ধনকুবের ব্যবসায়ী-শিল্পপতি দাবি করেছেন, তিনি যদি আর্থিক সহায়তা না দিতেন তাহলে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যেতেন ট্রাম্প।

নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় মাস্ক বলেন, “আমি না থাকলে ট্রাম্প নির্বাচনে হেরে যেতেন, রিপ্রেজেন্টেটিভের (মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ) নিয়ন্ত্রণ থাকত ডেমোক্র্যাটদের দখলে আর সিনেটে (কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ) রিপাবলিকান-ডেমোক্র্যাটদের অনুপাত থাকত ৫১-৪৯।”

আরেক বার্তায় তিনি লেখেন- “কী অকৃতজ্ঞতা!“

প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের ঘনিষ্ঠতার শুরু ২০২৪ সালের জুলাই থেকে। সে সময় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চলছিল। রিপাবলিকান পার্টির ট্রাম্পের বিভিন্ন প্রচারণা সভায় তখন মাস্ককে নিয়মিত দেখা গেছে। এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা তহবিলে কমপক্ষে ২৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার চাঁদা দিয়েছেন মাস্ক।

নির্বাচনে জয়ী হয়ে শপথ নেওয়ার পর সরকারি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও সরকারি ব্যয় সংকোচন করতে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বা ডজ নামের একটি দপ্তর খোলে ট্রাম্প প্রশাসন। সেই দপ্তরের প্রধান করা হয় মাস্ককে।

মাস্ক ডজের প্রধান নির্বাহী হওয়ার পর কয়েক মাস ধরে সরকারি অর্থ অপচয় রোধের নামে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও বিভাগের হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়, স্থগিত করা হয় প্রায় সব ধরনের বৈদেশি সহায়তা প্রদান, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন বিভিন্ন গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থাতেও সরকারি ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ফলে স্বাভাবিকভাবেই জনপ্রিয়তা কমতে থাকে ট্রাম্পের। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে একাধিক আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেন চাকরিচ্যুত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ সহায়তা প্রদান স্থগিত করায় দেশের ভেতরেও সমালোচনায় বিদ্ধ হতে থাকে ট্রাম্প প্রশাসন।

মাস্কের নিয়োগ নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসের এমপিদের একাংশ এবং ট্রাম্পের রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পার্টির নেতা-কর্মীদের একাংশ অসন্তুষ্ট ছিলেন। কংগ্রেস এখনও ডজকে সরকারি বিভাগ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।

এসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল মাস্কের। এর মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাম্প্রতিক একটি বিল স্বাক্ষরকে ঘিরে নতুন তিক্ততার সৃষ্টি হয় ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে।

গত মাসে কর হ্রাস সংক্রান্ত ‘জনকল্যাণমূলক’ বিলে অনুমোদন দেওয়ার পরে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘এটি একটি বড় এবং সুন্দর বিল’ (ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট)। তার পরেই ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে।

মাস্ক দাবি করেন, তিনি এবং তার সহকারীরা ট্রাম্প প্রশাসনের অন্দরে থেকে এত দিন ‘অপ্রয়োজনীয় ব্যয়’ কমাতে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, সেসব ব্যর্থ হয়ে যাবে ওই একটি বিলের কারণে। বিলটি তাকে দেখানোর আগেই ট্রাম্প মার্কিন কংগ্রেসে পাশ করানোর জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেও সমাজমাধ্যমে অভিযোগ করেছিলেন মাস্ক।

সরকারি বিল নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে বর্তমান ডজ তথা মার্কিন প্রশাসন থেকে বিদায় নেন মাস্ক। ট্রাম্প এই বিদায়কে স্বাগত জানান।

এদিকে সরকারি পদ থেকে বিদায় নেওয়ার পর বিলটি বাতিলের জন্য আরও তৎপর হয়ে উঠেছেন মাস্ক। আটকানোর জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জনগণকে মাঠে নামার আহ্বানও জানিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী এই ব্যবসায়ী-শিল্পপতি।

মাস্কের এ আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয় তিনি ব্যক্তিগত কারণে এ বিলের বিরোধিতা করছেন। কারণ পর্যায়ক্রমে কর সংস্কারের এ বিলের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে তার মালিকানাধীন কোম্পানি টেসলার ওপর।” সূত্র: এএফপি

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]