জুমার দিনের সেরা জিকির কী?


ইসলামীক ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 04-02-2022

জুমার দিনের সেরা জিকির কী?

জুমার দিন জিকিরের নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ। এ জন্য তিনি সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যখনই জুমার নামাজের জন্য আহ্বান করা হবে তখনই আল্লাহর জিকিরে দ্রুত যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশ থেকে বুঝা যায়, জুমার দিন আল্লাহর জিকিরের সেরা দিন। আবার এ জিকিরের জন্য দুনিয়াবি সব কর্মতৎপরতায় তথা ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তাহলে আল্লাহর নির্দেশ দেওয়া এ জিকির কী?

আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে ঈমানদার বান্দাদের উদ্দেশ্য করে এমর্মে নির্দেশ দেন-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

‘হে ঈমানদারগণ! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয় তখন তোমরা আল্লাহর জিকিরে দ্রুত ধাবিত হও এবং কেনা-বেচা বন্ধ কর। এটাই (জিকিরই) তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা : আয়াত ৯)

জুমার দিনের এ জিকির কী?

জুমার দিনের সেরা জিকির হলো ‘জুমার নামাজ’ আদায় করা। এ নামাজ আদায়ে দ্রুত মসজিদে যাওয়া। এ দিন জুমার নামাজের সব প্রস্তুতিই সওয়াব ও কল্যাণের কাজ

এ দিনের বিশেষ জিকির ‘নামাজ’-এর উদ্দেশ্যে মসজিদে পায়ে হেঁটে যাওয়া এবং সবার আগে মসজিদে প্রবেশেও রয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ ফজিলত ও সওয়াব। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দুইটি ঘোষণায় তা ফুটে ওঠেছে-

১. কদমে কদমে সওয়াব

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন (মাথা) ধুয়ে যথা নিয়মে গোসল করে, সকাল-সকাল ও আগে-আগে (মসজিদে যাওয়ার জন্য) প্রস্তুত হয়, (যানবাহনে) না ওঠে পায়ে হেঁটে (মসজিদে) যায়, ইমামের কাছাকাছি বসে মনোযোগ সহকারে (খুতবা) শুনে এবং কোনো অসার ক্রিয়া-কলাপ করে না, সে ব্যক্তির প্রত্যেক কদমে কদমে এক বছরের নেক আমল ও তার (সারা বছরের) রোজা ও নামাজের সওয়াব লাভ হয়!’ (মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ)

২. কোরবানির সওয়াব

রাসুলুল্লাহ সা বলেছেন, ‘জুমা দিন মসজিদের প্রতিটি দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করে এবং (জুমার নামাজের) আগমনকারীদের নাম ক্রমানুসারে লিখতে থাকে। এরপর ইমাম যখন (মিম্বরে) বসে, তারা লেখাগুলো গুটিয়ে নেয় এবং খুতবা শোনার জন্য চলে আসে। মসজিদে যে সবার আগে আসে, তার উদাহরণ সে ব্যক্তির মতো, যে একটি উটনি কোরবানি করেছে। তার পরবর্তী জনের দৃষ্টান্ত তার মতো, যে একটি গাভি কোরবানি করেছে। তার পরবর্তী জনের দৃষ্টান্ত তার মতো, যে একটি ভেড়া কোরবানি করেছে এবং তার পরবর্তী জনের দৃষ্টান্ত তার মতো, যে একটি মুরগি দান করেছে। পরবর্তী জনের দৃষ্টান্ত তার মতো, যে একটি ডিম দান করেছে।’ (মুসলিম)

জুমার দিনের বৈশিষ্ট্য

জুমার দিন মুসলিম উম্মাহর সমাবেশের দিন। তাই এই দিনকে ইয়াওমুল জুমআ’ বা একত্রিত হওয়ার দিন বলা হয়। দিনটির বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন হাদিসে ওঠে এসেছে-

> ‘আল্লাহ তাআলা নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও সমস্ত জগৎকে ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন। এই ছয়দিনের শেষ দিন ছিল জুমার দিন।’ (মুসলিম)

> ‘যে দিনগুলোতে সূৰ্য উঠে তন্মধ্যে সবচেয়ে উত্তম দিন হচ্ছে জুমার দিন। এই দিনেই আদম আলাইহিস সালাম সৃষ্টি হন, এই দিনেই তাকে জান্নাতে দেওয়া হয় এবং এই দিনেই জন্নাত থেকে পৃথিবীতে নামানো হয়। আর কেয়ামতও এই দিনেই সংঘটিত হবে।’ (মুসলিম)

> ‘(বিশেষ) এই দিনে এমন একটি মুহুর্ত আছে, যাতে মানুষ যে দোয়া-ই করে, তাই কবুল হয়।’ (বুখারি, মুসলিম)

জুমার দিনের নামাজ আল্লাহর সেরা জিকির। জুমার নামাজের প্রস্তুতিতে এ দিনের প্রতিটি ভালো কাজ জিকির হিসেবে গণ্য। এ কারণেই জুমার দিন আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার স্মরণে (জিকিরে) দ্রুত নামাজ পড়তে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, এ দিন ধীরস্থির ভাবে আল্লাহর জিকির তথা জুমার নামাজে এসে কোরবানি ও বছরজুড়ে নফল রোজা ও নামাজের সওয়াব অর্জনে অন্য কোনো কাজে দেরি না করে মসজিদে চলে আসা। মনোযোগ সহকারে নিশ্চুপ থেকে ইমামের খুতবাহ শোনা এবং জুমার নামাজ আদায় করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিনের সেরা জিকির জুমার নামাজ যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা ও উপদেশ অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

রাজশাহীর সময় / এফ কে


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]