হাশরের মাঠে যেসব প্রশ্নের উত্তর দিতেই হবে!


ধর্ম ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 15-10-2022

হাশরের মাঠে যেসব প্রশ্নের উত্তর দিতেই হবে!

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোন বান্দার দুই পা (কেয়ামত দিবসে) এতটুকুও সরবে না, তাকে এ কয়টি বিষয় সম্পর্কে যে পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ না করা হবে? কিভাবে তার জীবনকালকে অতিবাহিত করেছে; তার অর্জিত জ্ঞান অনুযায়ী কী আমল করেছে; কোথা থেকে তার ধন-সম্পদ উপার্জন করেছে ও কোন কোন খাতে তা ব্যয় করেছে এবং কি কি কাজে তার শরীর বিনাশ করেছে।’ (তিরমিজি ২৪১৭)

মানুষকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দুনিয়ার জীবনই মানুষের জন্য শেষ নয়। পরকালের সীমাহীন জীবন তার জন্য অপেক্ষা করছে। সেখানে বিচার ফয়সালার পর জান্নাত-জাহান্নাম নির্ধারিত হবে। তার আগে প্রতিটি আদম সন্তানকেই পাঁচটি প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। যে প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া ছাড়া কাউকে এক কদমও নড়তে দেওয়া হবে না। সে প্রশ্নগুলো কী?


হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

لاَ تَزُولُ قَدَمَا ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ عَنْ عُمْرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَا أَبْلاَهُ وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ


কেয়ামতের দিন পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগ পর্যন্ত আদম সন্তানের পাদ্বয় আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে সরাতে পারবে না। তাহলো-

১. তার জীবনকাল সম্পর্কে, কীভাবে তা অতিবাহিত করেছে?

২. তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কি কাজে তা বিনাশ করেছে?

৩. তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা থেকে তা উপার্জন করেছে? এবং

৪. তা কি কি খাতে খরচ করেছে? এবং

৫. সে যত টুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল সে মুতাবিক কি কি আমল করেছে?’ (তিরমিজি ২৪১৬)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একাধিক হাদিসে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। প্রত্যেক ব্যক্তিকেই মরতে হবে। মহান আল্লাহ তাআলা সবাইকে হাশরের ময়দানে একত্রিত করবেন। আর সেখানে তার জীবনকাল, যৌবনকাল, ধন-সম্পদ আয় এবং ব্যয়ের পাশাপাশি অর্জিত ইলম বা জ্ঞান অনুযাযী আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।


হাদিসের শিক্ষা

১. কেয়ামত একটি কঠিন ও ভয়াবহ দিন। সমগ্র সৃষ্টি ওই দিন আল্লাহর কাছে হাজির হবে। ন্যায় ও অন্যায়ের বিষয়ে বিচার শেষে জান্নাতি ও জাহান্নামি কারা তা ঘোষণা হবে।

২. হাশরের মাঠে যে প্রশ্ন করা হবে। এর প্রস্তুতি দুনিয়ার জীবন থেকে মৃত্যুর আগেই শেষ করতে হবে। তা না করতে পারলে তখন আফসোস করে কোনো লাভ হবে না।

৩. মানুষের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান এবং মহান আল্লাহর সেরা দান। একে অপচয় না করে সঠিক পথে ব্যয় করতে হবে।

৪. যৌবনকালকে ইবাদতের জন্য জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান অংশ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। যাবতীয় সীমা লঙ্ঘন ও পাপাচার থেকে দূরে থাকতে হবে।

৫. দুনিয়ার জীবন পরিচালনায় হালাল রুজি অন্বেষণ করা গুরুত্বপূর্ণ ফরজ। হারাম পথে আয়া-রোজগার ছেড়ে দিয়ে হালাল পথে উপার্জন করতে হবে। কোনো অবস্থায় হারামের পথে মাল-সম্পদের এক কণাও ব্যয় করা যাবে না।

৬. শুধু জ্ঞান অর্জন করাই সার্থকতা নয় বরং অর্জিত জ্ঞানকে আমলে রূপান্তর করাই সফলতা। সফলতার ফায়সালা হবে আমলের ওপর।


আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত বিষয়গুলোর প্রতি যথাযথ খেয়াল রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]