তিন ওয়াক্তের নামাজে কেরাত উচ্চস্বরে পড়া হয় কেন?


ধর্ম ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 16-10-2022

তিন ওয়াক্তের নামাজে কেরাত উচ্চস্বরে পড়া হয় কেন?

ইমাম নববি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘সুন্নত হচ্ছে- ফজর, মাগরিব ও এশার প্রথম দুই রাকাতে এবং জুমার নামাজে উচ্চস্বরে কেরাত পড়া। আর জোহর ও আসরের নামাজে এবং মাগরিবের তৃতীয় রাকাতে এবং এশার তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে চুপেচুপে তেলাওয়াত করা। সুস্পষ্ট সহিহ হাদিসের সঙ্গে মুসলিম উম্মাহর ঐকমত্যের ভিত্তিতে এসব বিধান সাব্যস্ত।’ (আল-মাজমু, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৮৯)

সাধারণত রাতের নামাজের কেরাত উচ্চস্বরে পড়া হয় আর দিনের নামাজের কেরাত চুপে চুপে পড়া হয়। দিনের নামাজ তথা জোহর ও আসরের নামাজে কেরাত আস্তে পড়া হয়। আর মাগরিব, এশা এবং ফজরের নামাজে কেরাত জোরে বা উচ্চস্বরে পড়া হয়। এটা শরিয়তকর্তৃক আল্লাহর আদেশ। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমল দ্বারা প্রমাণিত।

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দ্বারা প্রমাণিত আমলে ইবাদত-বন্দগি করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য কর্তব্য। তবে কেন রাতের নামাজের কেরাত উচ্চস্বরে আর দিনের নামাজের কেরাত চুপে চুপে পড়তে হবে- এর কারণ বা বিধান জানা থাকতে হবে— বিষয়টা এমন নয়। শুধু এতটুকু জানা ও মানা উচিত যে, এটি মহান আল্লাহ তাআলার হুকুম। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমল। তিনি এভাবে নামাজ পড়েছেন।

উচ্চস্বরে কেরাত পড়ার কারণ

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘যেসব নামাজে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়অ সাল্লাম) আমাদের কেরাত শুনিয়ে পড়েছেন, আমরাও সেসব নামাজে তোমাদের কেরাত শুনিয়ে পড়ি। আর (নবিজি) যেসব নামাজে কেরাত নীরবে পড়েছেন, আমরাও সেসব নামাজে কেরাত নীরবে পড়ি।’ (সুনানে নাসায়ি ৯৭০)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ আমল আমাদের জন্য নির্দেশ ও আবশ্যক কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা সবাইকে তাঁর অনুকরণ ও অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন- ‘তোমাদের জন্য তথা যে ব্যক্তি আল্লাহকে ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে— তার জন্য রাসুলের মাঝে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ২১)

নামাজ পড়ার ব্যাপারে নবিজির নির্দেশ ছিল এমন- ‘তোমরা সেভাবে নামাজ পড়ো, যেভাবে আমাকে নামাজ পড়তে দেখেছো।’ (বুখারি ৬০০৮; মুসলিম ৬৭৪)

উচ্চস্বরে কেরাত পড়ার দলিল

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের নামাজে, মাগরিব ও এশার নামাজের প্রথম দুই রাকাতে শব্দ করে তেলাওয়াত করতেন। আর বাকি নামাজে চুপে চুপে তেলাওয়াত করতেন। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত জুবাইর বিন মুতয়িম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মাগরিবের নামাজে (সুরা) ‘তুর’ পড়তে শুনেছি।’ (বুখারি ৭৩৫; মুসলিম ৪৬৩)

হজরত আল-বারা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘আমি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এশার নামাজে ‘ওয়াত ত্বীনি ওয়াজ জাইতুন’ পড়তে শুনেছি। আমি তার চেয়ে সুন্দর কণ্ঠের তেলাওয়াত শুনিনি।’ (বুখারি ৭৩৩; মুসলিম ৪৬৪)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রাতের নামাজ তথা ফরজ, মাগরিব ও এশার নামাজে প্রথম দুই রাকাতের কেরাত উচ্চস্বরে পড়ে নবিজির অনুসরণ ও অনুকরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]