রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী জিলাপি, ষাট বছর ধরে সুনাম ধরে রেখেছে


নিজস্ব প্রতিবেদক , আপডেট করা হয়েছে : 20-10-2022

রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী জিলাপি, ষাট বছর ধরে সুনাম ধরে রেখেছে

রাজশাহী মহানগরীর বাটার মোড়ের জিলাপির দোকানের যাত্রা শুরু ষাটের দশকে। ঐতিহ্যবাহী জিলাপির ব্যবসা শুরু করেন হাসিম উদ্দিন। প্রথম থেকেই সুনাম কুড়াতে থাকে বাটার মোড়ের জিলাপি। প্রতিষ্ঠাকালে দোকানটির নাম ছিল ‘রানী বাজার রেষ্ট্রুরেন্ট’। কয়েক বছরের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায় সাইনবোর্ড। এরপর থেকে আর টাঙ্গানো হয়নি সাইনবোর্ড। বর্তমানে ‘বাটার মোড়ের জিলাপির দোকান’ হিসেবেই পরিচিত হয়ে ওঠে এটি। নামহীন এই দোকানের জিলাপির সুনাম তিন প্রজন্ম ধরে।

প্রতিষ্ঠাকালে এই জিলাপির একমাত্র কারিগর ছিলেন যামিনী সাহা। পরে যামিনী সাহার জিলাপির প্যাঁচ দেওয়া শিখে যান তাঁর ছেলে কালিপদ সাহা। ১৯৮০ সালে বাবার মৃত্যুর পর প্রধান কারিগর হন কালিপদ সাহা। কালিপদের হাতে তৈরি এই জিলাপি এক সময় রাজশাহী শহরের মানুষের কাছে ‘কালিবাবু’ নামেও পরিচিত হয়ে ওঠে। কালিপদ সাহা মারা যায় ২০১৭ সালে। এখন প্রধান কারিগর তাঁর শিষ্য সাফাত আলী সঙ্গে আছেন শফিকুল ইসলাম।

দোকানের প্রতিষ্ঠাতা মালিক হাসিম উদ্দিন এক সময় সাংাবিদকের বলেছিলেন, ‘আমরা একটি বিশেষ ফরমুলায় জিলাপি তৈরি করে থাকি। যে ফরমুলা দেশের আর কেউ জানেন না। আমাদের জিলাপির এক ধরনের বিশেষ স্বাদ রয়েছে। আর এ কারণেই আমাদের জিলাপি ঐতিহ্যবাহী।’ তিনি আরো বলেছিলেন, ‘এটা আমাদের দীর্ঘদিনের ব্যবসা। এখানকার জিলাপির মান অন্যসব জিলাপির তুলনায় ভালো। তানাহলে শুধু এ ধরনের একটা আইটেম দিয়ে এত বড় একটি ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতো না।’ বর্তমানে দোকানে দায়িত্বে থাকা শামিম বলেন, সাধারণ সময় প্রতিদিন এই দোকানটিতে ৮০ থেকে ৯০ কেজি জিলাপি বিক্রি হলেও রোজায় তা বেড়ে ২০০ কেজিতে গিয়ে দাঁড়ায়।

জিলাপি কারিগর শফিকুল বলেন, ‘মাসিক ৩০ টাকা বেতনে এখানে এসেছি। এখন বেতন পাই ১৫ হাজার টাকা। জীবনের বাকিটা সময়ও এই দোকানেই কাটিয়ে দিতে চাই।’ সুস্বাদু জিলাপি কীভাবে তৈরি করেন জানতে চাইলে শফিকুল বলেন, আসলে কারিগর কিছুনা। মহাজন যদি চান, তাহলেই খাবার সুস্বাদু হবে। এ জন্য লাভের আশা কম করতে হবে। এই দোকানের ক্ষেত্রে তাই হয়। মহাজন কয়েক ধরনের ময়দা, ভালো তেল দিয়ে জিলাপি ভাজতে বলেন। এই ইচ্ছাটা থাকতে হবে। তবে হ্যাঁ, জিলাপি ভালো করতে বেশি পরিশ্রমও করতে হয়।

ঐতিহ্যবাহী এই দোকানে জিলাপি কিনতে আসা নগরীর ঘোড়ামার এলাকার শাজাহান ইসলাম বলেন, ‘আমার বয়স এখন প্রায় ৫০। ছোটকাল থেকেই আমার পিতা এই দোকান থেকে জিলাপি কিনে আমাদের খাওয়াতেন।

প্রায় পাঁচ যুগেরমতো সময় ধরে এক নামে চলছে ঐতিহ্যবাহী বাটার মোড়ের জিলাপি। বিকেল হলেই অনেকেই বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলে আসেন বাটার মোড়ে জিলাপি খেতে। এছাড়াও যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠানে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে এ দোকানের জিলাপি।

রাজশাহীর সাধারণ দোকানগুলোতেই এ বছর ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে জিলাপি বিক্রি হচ্ছে। অথচ এত নাম ডাকের বাটার মোড়ের জিলাপি বিক্রি করা হচ্ছে ১৪০ টাকায়। 


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]