আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলে বিএনপি আন্দোলন করতে পারছে : প্রধানমন্ত্রী


আবু হেনা: , আপডেট করা হয়েছে : 28-10-2022

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলে বিএনপি আন্দোলন করতে পারছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর দল গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হওয়ায় বিএনপি আন্দোলন করতে পারছে।

তিনি বলেন, তবে, বিএনপি’র যারা খুনের সঙ্গে জড়িত, অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত তাদের ধরতে হবে। তাদের কোনো ছাড় নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সভাপতিত্বকালে দেয়া প্রারম্ভিক ভাষণে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের ওপরে মানুষের আস্থা রয়েছে বলেই তিনবার ভোট দিয়ে দলকে নির্বাচিত করেছে, এবারও দিবে। কিন্তু যারা সন্ত্রাসী, খুনি, জনগণের অর্থ লুটপাটকারী, বোমা-গ্রেনেড হামলাকারী ও অর্থপাচারকারী জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না, ভোটও দিবে না।

তিনি বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে ব্যয় কমাতে হবে ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতায়। তাই খরচ কমানোর জন্য আয়োজন হবে সাদামাটা। সম্মেলন প্রস্তত কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি এবং কাজ করে যাবো। আমাদের উন্নয়নের কথাগুলো যেমন মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। ঠিক তেমনি ভবিষ্যতের জন্য যে পরিকল্পনা করছি সেটাও মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।

তিনি বলেন, বিএনপির আমলে লুটপাট, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, গ্রেনেড হামলা, অত্যাচার, নির্যাতন, খুন-রাহাজানি এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করেনি। যে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে এসেছে সেই দেশকে তারা ভিখারির দেশে পরিণত করে, হাত পেতে চলার দেশে পরিণত করেছিল। সেখান থেকে বাংলাদেশকে তুলে এনে আজকে আমরা আত্মমর্যাদাশীল দেশে পরিণতি করেছি। এখন দেশকে বিশ্বের মানুষ সম্মানের চোখে দেখে।

সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আগামী ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। একদিনেই এই সম্মেলন শেষ হবে।

এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের আগামী কাউন্সিল বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে ব্যয় কমাতে হবে সাদামাটা। তিনি বলেন, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ও কতগুলো উপ-কমিটি করতে হবে। যেহেতু বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা যাচ্ছে, তাই, এবারের সম্মেলন আমরা কোন সান-শওকত করে করবো না। খুব সীমিত পরিসরে, অল্প খরচে, সাদাসিধেভাবে আমাদের সম্মেলন করতে হবে।

সূচনা বক্তব্যে বিএনপি আমলের সন্ত্রাস ও বর্বরতার চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০০১ সালের পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগের সভায় একের পর এক বোমা ও গ্রেনেড হামলা চালানো হলেও বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কামরান ও শেখ হেলালের বৈঠকে গ্রেনেড ও বোমা হামলা চালানো হয়েছিল। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে এবং মঞ্জুরুল ইমাম ও মমতাজসহ অনেককে হত্যা করেছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সারাদেশে এমন কোনো উপজেলা ও জেলা নেই যেখানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়নি। তারা আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা করে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। তবে বাস্তবতা হলো আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী হচ্ছে এবং জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা খুনের সঙ্গে জড়িত, অগ্নি সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িত, আমি জানি তারা অনেকে লুকিয়ে ছিল। এখন বিএনপি মাঠে নেমেছে, তারাও মাঠে নামবে। এই সমস্ত আসামীদের কিন্তু ধরতে হবে। তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। কারণ তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। জীবন্ত মানুষ হত্যা করেছে। চোখ-হাত কেটেছে, মানুষকে নির্যাতন করেছে। তাদের ছাড় নেই। আইন তার আপন গড়িতে চলবে। আইন সকলের জন্য সমান। এটা তাদের মাথায় রাখতে হবে। রাজনীতি করবে রাজনীতিক হিসেবে। কিন্তু সন্ত্রাসী-জঙ্গীবাদি রাজনীতি এ দেশে চলবে না। এটা আমরা চলতে দেবো না। এটা মাথায় রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ এই উপমহাদেশের পুরোনা সংগঠন। এই সংগঠন আরও শক্তিশালী হোক। মানুষের জন্য কাজ করে তাদের হƒদয় জয় করে আমরা ক্ষমতায় এসেছি। জনগণের ভোটে এসেছি, জনগণের আস্থা নিয়ে এসেছি। সেই আস্থা আমরা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। ১৪ বছর আমরা এদেশের মানুষের আস্থা বিশ্বাস ধরে রেখেছি। আওয়ামী লীগ আরও বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এটা আমাদের মাথায় রেখেই এগিয়ে যেতে হবে। আর যারা সন্ত্রাসী, খুনি, দশ ট্রাক অস্ত্র, গ্রেনেড হামলাকারী, বোমা হামলাকারী এদের দেশের জনগণ বিশ্বাস করে না। জনগণ এদের পাশে কোনো দিন থাকবে না। এদের ভোটও দেবে না। এটাই হলো বাস্তবতা।

সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সহ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বিএসএস।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]