শিক্ষার্থীদের হাতে নিম্নমানের বই, ৬ মাসেই হবে নষ্ট!


শিক্ষা ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 02-01-2023

শিক্ষার্থীদের হাতে নিম্নমানের বই, ৬ মাসেই হবে নষ্ট!

প্রতিবছর জানুয়ারি প্রথম দিনেই সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছে দেওয়া সরকারের একটি ধারাবাহিক সাফল্য। তবে এ বছরের প্রথম দিন বই উৎসবে এসেও নতুন বই পায়নি বেশিরভাগ শিশু। অনেকে অন্য ক্লাসের পুরোনো বই নিয়েই বাসায় ফিরেছে। কেউ কেউ আবার ফিরেছে একেবারে খালি হাতে। কোনো কোনো শিক্ষার্থী একটি-দুটি নতুন বই পেলেও সে বইয়ের নিম্নমানের কাগজ নিয়ে ওঠেছে প্রশ্ন। অভিভাবকদের অভিযোগ, নিম্নমানের কাগজে তৈরি এসব বই বছরের অর্ধেক সময় না যেতেই নষ্ট হয়ে যাবে।

রোববার (১ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আয়োজিত ‘বই বিতরণ উৎসব-২০২৩’ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে এবং দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানা শহরে আয়োজিত বই উৎসবে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে ব্রাইট প্রিন্টিং প্রেস, ফরাজী প্রিন্টার্স, কচুয়া প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের বই সরবরাহ করেছে। এনসিটিবির বেঁধে দেওয়া মানদণ্ডের ছিটেফোটাও দেখা যায়নি এসব বইগুয়ে।

শিশু শিক্ষার্থীদের হাতে যেন দ্রুত পাঠ্যবই নষ্ট না হয় এবং বইয়ের প্রতি তাদের আকৃষ্ট করতে অফসেট পেপারে চার রংয়ের (আরজিবি কালার) বই দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। সেখানে ৮২ শতাংশ উজ্জ্বলতা থাকার কথা থাাকলেও নিউজপ্রিন্টের কালো কাগজে প্রাথমিকের অধিকাংশ বই পাওয়া গেছে। এবছর যেসব বই শিশুদের বিতরণ করা হয়েছে তা দিয়ে বছর পার করা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষকরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বছর পুরোনো বইয়ের ওপরই ভরসা করতে হবে। 

বই উৎসবে আসা রাজধানীর সূত্রাপুরের দক্ষিণ মুহসেন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উম্মে কুলসুম বলেন, তাদের বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিকের শুধু খাতা, প্রথম শ্রেণির গণিত বই, দ্বিতীয় শ্রেণির তিনটি বই, তৃতীয় শ্রেণির ছয়টির মধ্যে চারটি, চতুর্থ শ্রেণির সব বই পেলেও পঞ্চম শ্রেণি শিক্ষার্থীরা কোনো বই পায়নি। যে কারণে তারা বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিতে পারেননি। 

একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুসরাত জাহান বলেন, এ বছর অনেক খারাপ কাগজ দিয়ে বই তৈরি করা হয়েছে। এসব বই শিক্ষার্থীরা বেশি দিন পড়তে পারবে না। বছরের মাঝামাঝি বই নষ্ট হলে নতুন করে দেওয়া কঠিন। সে কারণে নতুন বই দেওয়ার আগে সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পুরোনো বই জমা নেওয়া হচ্ছে। কারও বই নষ্ট হলে বছরের বাকি সময় এসব পুরোনো বই দিয়ে চালানো হবে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, বইয়ের কোনও সংকট নেই। টেন্ডার জটিলতার কারণে এবং ভার্জিন পাল্প (কাগজ তৈরির মন্ড) আমদানিতে সমস্যা এবং কাগজ না পাওয়ার কারণে কয়েকটি প্যাকেজের কাজে দেরি হয়েছে। সব বিদ্যালয়ে তিন থেকে চারটি বিষয়ের বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো সরবরাহের অপেক্ষায় রয়েছে। ১০ জানুয়ারির মধ্যে সব বিদ্যালয়ে শতভাগ বই পৌঁছে দেওয়া হবে।

নতুন বইয়ের মান নিয়ে তিনি বলেন, মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে এবছর স্বাধীন এজেন্সি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মান যাচাইয়ে পরিদর্শন টিম আরও ছয় মাস সময় পাবে। টেন্ডার অনুযায়ী নির্ধারিত মানের বই সরবরাহ করতে হবে। কোথাও নিম্নমানের বই পাওয়া গেলে পরিদর্শন টিম এনসিটিবি, মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে জানাবে। ফলে এর বাইরে বই সরবরাহের কোনো সুযোগ নেই।

চলতি বছর সারাদেশে প্রায় ৩৫ কোটি বই বিতরণ করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে মোট ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ২৪৫টি আর বাকি ২৫ কোটি বই মাধ্যমিক ও অন্যান্য পর্যায়ে বিতরণ করা হবে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]