বাজারে রোজার হাওয়া


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 20-01-2023

বাজারে রোজার হাওয়া

রমজানের এখনও দুই মাস বাকি। তবে এখনই বাড়তে শুরু করেছে সংযমের মাসটিতে বেশি প্রয়োজনীয় পণ্যের দরদাম। এ তালিকায় রয়েছে আদা, রসুন, ছোলা, মসুর ডাল, মসলাসহ কয়েকটি পণ্য। এ ছাড়া শীতের ভরা মৌসুমে প্রায় সব ধরনের সবজির দামও চড়া। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণে নতুন করে পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়তে পারে বলে শঙ্কা করেছেন খুচরা ব্যবসায়ী অনেকেই। তাঁরা জানান, এলসি (ঋণপত্র) খোলা কমার কারণে ধীরে ধীরে পণ্যের দাম বাড়ছে। সামনে রমজান। এ কারণে বাজারে কিছু পণ্যের দাম চড়া। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় তা পণ্যমূল্যকে আরও উস্কে দেবে। গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল, তেজকুনীপাড়া, মোহাম্মদপুর ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজারে দেশির চেয়ে আমদানি করা পণ্যের দাম বেশি দেখা গেছে। এর মধ্যে আদার কেজি এক মাসের ব্যবধানে বেড়ে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। গত এক সপ্তাহে চায়না আদার দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৪০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগে ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে এক মাস আগে দাম ছিল আরও কম। তখন কেজি বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১৬০ টাকায়। সেই হারে দেশি আদার দাম কিছুটা কম; কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। এ মানের আদার কেজি এক মাস আগে কেনা গেছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।

আদার সঙ্গে চড়েছে রসুনও। সপ্তাহখানেক আগে আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা দরে। আর দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে কেনা গেছে ১০০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। দেশি পেঁয়াজের দাম না বাড়লেও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। এ মানের পেঁয়াজের কেজি এখন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। দেশি পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে।

তেজপাতা, জিরা, দারুচিনি ও লবঙ্গের দামও বেড়েছে। কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে জিরা ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা এবং দারুচিনি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকার ছোট এলাচের কেজি দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রায় সব ধরনের ডালের দাম বেড়েছে। ছয় থেকে সাত দিনে ছোলা কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। পাঁচ দিন আগে কেনা যেত ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। আমদানি করা মসুর ডাল (বড় দানা) কিনতে লাগছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে এ মানের ডাল বিক্রি হয়েছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দের। দেশি মসুর (ছোট দানার) বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়, যা পাঁচ থেকে ছয় দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা দরে। এক সপ্তাহে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডালের দাম এখন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজারের আলম স্টোরের বিক্রয়কর্মী মো. রাসেল বলেন, '৮ থেকে ১০ দিনের মাথায় ছোলা আর আদা-রসুনের দাম বেড়েছে। মাঝে মসুর ডালের দাম কিছুটা কমে এখন আবার বেড়েছে।'

কারওয়ান বাজারের তুহিন জেনারেল স্টোরের বিক্রয়কর্মী মো. রায়হান বলেন, 'গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। এ কারণে জিনিসপত্রের দাম আবারও বাড়তে পারে। কয়েকটি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি আজ (বৃহস্পতিবার) এমন ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন।'

হাতিরপুল কাঁচাবাজারের জাকির জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী জাকির হোসেন বলেন, 'এলসি খোলা কমার পর থেকেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। আদা বিক্রি করি এখন ৩৬০ টাকা কেজি। এত টাকা দিয়ে কয়জনে কিনবে! পণ্যের দাম বাড়লে আমাদের বেচাবিক্রি কমে যায়।'

এদিকে ভরা মৌসুমেও দাম চড়া সবজির বাজার। বাজারভর্তি শীতের সবজি থাকলেও বিক্রি হচ্ছে বছরের সাধারণ সময়ের মতোই বেশি দামে। এক কেজি গোল বেগুন কিনতে ক্রেতাকে খরচ করতে হবে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এ সময় সাধারণত পছন্দের তালিকার তলানিতে থাকে মুলা। দামও থাকে ১৫ থেকে ২০ টাকার ঘরে। সেই মুলার কেজিও এখনও ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। কাঁচামরিচের দাম মাঝে ক'দিন কমে আবার বেড়েছে। কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। ১৫ থেকে ২০ দিন আগে শিমের কেজি ৩০ টাকার নিচে নেমেছিল। এখন বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় পৌঁছেছে। প্রায় এক মাস আগের দামে ফিরেছে ফুলকপি ও বাঁধাকপি; প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এ ছাড়া করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০, শসা ৫০ থেকে ৬০, টমেটো ৩০ থেকে ৫০, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]