নিপাহর ঝুঁকিতে দেশের প্রায় অর্ধেক এলাকা


নিপাহর ঝুঁকিতে দেশের প্রায় অর্ধেক এলাকা , আপডেট করা হয়েছে : 08-02-2023

নিপাহর ঝুঁকিতে দেশের প্রায় অর্ধেক এলাকা

দেশের ৩১টি জেলায় এ পর্যন্ত নিপাহর রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশের উত্তরবঙ্গের এবং দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে বেশি রোগী শনাক্ত হতে দেখা গেছে। দেশের পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে নিপাহ শনাক্ত হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার দেওয়া তালিকা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

দেশে প্রথম নিপাহ রোগী শনাক্ত হয় মেহেরপুর জেলায়, ২০০১ সাল। সেই থেকে এ বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোন জেলায় কত রোগী শনাক্ত হয়েছে, তার তালিকা করেছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ও রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা। ২ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখা থেকে সিভিল সার্জনদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, জেলাগুলো নিপাহ ভাইরাসজনিত জ্বরের ঝুঁকিতে আছে।

দুই দশকের পর্যবেক্ষণে আমরা জানতে পেরেছি যে বাংলাদেশে নিপাহ সংক্রমণের সব ঘটনার মূলে খেজুরের কাঁচা রস। তাই খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।’

তাহমিনা শিরীন, আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক
নিপাহ ভাইরাস থাকে বাদুড়ের শরীরে। দেশের সব এলাকায় বাদুড় দেখা গেলেও গত ২২ বছরে দেশের সব জেলায় নিপাহ শনাক্ত হয়নি। শনাক্ত হওয়া জেলাগুলোর মধ্যে আছে মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুাষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী, নড়াইল, খুলনা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, ঝালকাঠি, শরীয়তপুর, পাবনা, নওগাঁ, নাটোর, জয়পুরহাট, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ঢাকা ও কুমিল্লা।

তালিকা থেকে দেখা যায়, সিলেট বিভাগের কোনো জেলায় এ পর্যন্ত নিপাহ শনাক্ত হয়নি। চট্টগ্রাম বিভাগের শুধু কুমিল্লা জেলায় ২০১১ সালে এক রোগী শনাক্ত হয়। ঢাকা বিভাগে শুধু শরীয়তপুর জেলায় রোগী দেখা গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাদুড়ের সংস্পর্শে আসা কাঁচা খেজুরের রস থেকে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায়। যশোর জেলা খেজুরের গুড়ের সুখ্যাতি আছে। কিন্তু এ পর্যন্ত এ জেলায় কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলায় কোনো না কোনো বছর নিপাহ শনাক্ত হয়েছে।

দেশের কিছু জেলায় নিপাহ দেখা দিচ্ছে, আবার কোনো অঞ্চলে দেখা দিচ্ছে না—এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা এখনো জানা যায়নি। তবে জনস্বাস্থ্যবিদদের কেউ কেউ মনে করেন, যেসব অঞ্চলে বছরজুড়ে বাদুড়ের খাবার পাওয়া যায়, সেসব অঞ্চলে বাদুড়ের বসবাস বেশি, সেসব এলাকায় নিপাহ বেশি। বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের চেয়ে বৃহত্তর রাজশাহী এলাকায় বাদুড়ের বসবাস বেশি বলে জানিয়েছেন একজন জনস্বাস্থ্যবিদ।

দেশে এ পর্যন্ত নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ৩৩৫ জনকে শনাক্ত করেছে আইইডিসিআর। এর মধ্যে মারা গেছে ২৩৭ জন, অর্থাৎ মৃত্যুহার ৭১ শতাংশ। এ বছর এ পর্যন্ত ছয় জেলায় ১০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৭ জন। এ ছাড়া সন্দেহজনক আরও বেশ কিছু ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করছে আইইডিসিআর। শিগগিরই এর ফলাফল জানা যাবে।

জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, যেহেতু এই রোগে মৃত্যুহার অনেক বেশি, সুতরাং এই রোগের ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন থাকা জরুরি। আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন  বলেন, দুই দশকের পর্যবেক্ষণে আমরা জানতে পেরেছি যে বাংলাদেশে নিপাহ সংক্রমণের সব ঘটনার মূলে খেজুরের কাঁচা রস। তাই খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]