জেলা রেজিস্ট্রারের নির্দেশ উপেক্ষা কাজীর, অজ্ঞাত কারনে ব্যবস্থা নেননি সাব রেজিস্ট্রার তানোর !


মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: , আপডেট করা হয়েছে : 27-02-2023

জেলা রেজিস্ট্রারের নির্দেশ উপেক্ষা কাজীর, অজ্ঞাত কারনে ব্যবস্থা নেননি সাব রেজিস্ট্রার তানোর !

" রেকর্ড রুম থেকে সরকারী ফাইল গায়েব! জেলা রেজিস্ট্রারের নির্দেশ উপেক্ষা কাজীর, অজ্ঞাত কারনে ব্যবস্থা নেননি সাব রেজিস্ট্রার তানোর ! "

জেলা রেজিস্ট্রারের বারবার নির্দেশ উপেক্ষা কাজী মোঃ আতাউর রহমান (৭১)। তিনি চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানার কাজী পাড়া, (৪নং) নেজামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। 

অভিযোগ উঠেছে, তিনি ১৯৭৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গত অনুমানিক ৪৬ বছর যাবত তানোর (১নং) কলমা ইউনিয়নের প্রশাসক মোঃ আমির আলী স্বাক্ষরীত নিকাহ রেজিস্ট্রার জাল লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজী হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। বর্তমানে তিনি অবসরে গেছেন। 

মামলার বরাত দিয়ে জানা যায়, প্রশাসক মোঃ আমির আলী তানোর ডিজিআর ১৬/০১ (তানোর) মামলায় ৬ নং পৃষ্টার ৭নং কলামে প্রশাসক মোঃ আমির আলীর (পি.ডাব্লিউ-৬) তার জবানবন্দিতে বলেন, আমি চাকরিরত থাকা অবস্থায় ১৯৭৩/৭৪ সালে (১নং) কলমা ইউনিয়নে কামার গাঁ তহসিল অফিসে সহকারী তহসিলদার পদে চাকরি করতাম। আমি সহকারী তহসিলদার থাকা অবস্থায় ১নং কলমা ইউনিয়নের ৩-৪-৭৩ তারিখ থেকে ৫-৪-৭৪ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি ওই সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকাকালিন সময়ে আসামী মোঃ আতাউর রহমানকে নিকাহ রেজিস্টার হিসেবে কোন নিয়োগ প্রদান করিনি। 

এরপর গত ২০-০২-২০১৯ তারিখে প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ তাজিম উদ্দিন কর্তৃক প্রতায়ন পত্র প্রদান করেন। গত ১৫-০৩-১৯৭৪ ইং তারিখে মোঃ আতাউর রহমানকে (১নং) কলমা ইউনিয়ন পরিষদ হতে নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় নাই। 

একাধিক কাজী সূত্রে জানা গেছে, মোঃ আতাউর রহমান ১৯৭৪ সাল হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত কোন সরকারী খাতাপত্র উত্তেলন করেন নাই এবং সরকারী কোষাগারে সরকারী টাকা চালান দেন নাই। বাংলাদশ মাদ্রাসা বোর্ডের অধিনে কোন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন নাই। গত (৫ আগস্ট ১৯৮৩) তার ভোটার তালিকা অনুযায়ী এবং নিয়োগের তারিখ (১৫ মার্চ ১৯৭৪) অনুযায়ী তার বয়স ছিলো ১৮বছর ৭ মাস ১০ দিন। মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৭৪ সালের আইন অনুযায়ী নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হতে ২৫ বছর পূর্ণ হতে হবে। এছাড়াও বাংলাদশ মাদ্রাসা বোর্ডের অধিনে কোন মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ করেননি তিনি।

এই সকল অনিয়মের বিষয়ে তানোর সাব রেজিস্ট্রারকে গত (৯ আগস্ট ২০১৭) জেলা রেজিস্ট্রার তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য একটি পত্র প্রেরণ করেন। গত (৯ সেপ্টম্বর ২০১৮) জেলা রেজিস্ট্রার সাব রেজিস্ট্রার তানোরকে নিকাহ রেজিস্ট্রার মোঃ আতাউর রহমানের নিকট রক্ষিত নিকাহ্ ও তালাক সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ড পত্র এবং সিল মোহর তানোর সাব রেজিস্ট্রারের নিকট জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি যথাসময়ে তাহা জমা না দেওয়ায় গত (৩ ডিসেম্বর ২০১৮) এবং গত (৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯) একই নির্দেশ দেন সাব রেজিস্ট্রারকে। কিন্তু সাবরেজিস্ট্রার তানোর বারবারই জেলা রেজিস্ট্রারে নির্দেশ উপেক্ষা করেছেন। এছাড়াও সাব রেজিস্টারের রেকর্ড রুমে কোন কাগজ পত্র বা সিল মোহর জমা দেন নাই আতাইর রহমান। আবার অজ্ঞাত কারনে সাব রেজিস্ট্রার তানোর তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থাও গ্রহণ করেন নাই। গত (২১ জুন ২০২০) জেলা রেজিস্ট্রার সাব রেজিস্ট্রার তানোরকে রাজশাহী জেলা মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার সমিতির সাধারণ সম্পাদক কতৃক দাখিলকৃত মোঃ আতাউর রহমান (১নং) কলমা ইউনিয়নের অবৈধভাবে নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে তদন্ত পূর্বক একটি প্রতিবেদন অত্র স্বারক প্রাপ্তির ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে অত্র কার্যালয়ে প্রেরণ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। সকল নির্দেশও উপেক্ষা করেও থামেন নি সাব রেজিস্ট্রর তানোর। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর ১ নং কলমা ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নিয়োগের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয় থেকে কোন নিয়োগ সংক্রান্ত কোন চিঠি পান নাই বলে জানা গেছে। তারপরও গত (২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩) নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নিয়োগ প্রদানের জন্য প্যানেল প্রস্তুত করেছেন তিনি।

তানোর সাবেক সাব রেজিস্ট্রার মমতাজ বেগম মুঠো ফোনে জানান, কাজী মোঃ আতাউর রহমানের বিষয়ে আমি অবগত। জেলা রেজিস্ট্রার স্যারকে আমি তার বিষয়ে রিপোর্ট প্রদান করেছিলাম। যাহার অনুলিপি রেকর্ড রুমে রক্ষিত থাকার কথা। এখন যারা দায়িত্বে আছেন তাদের কাছে খোঁজ নিলে আমার কার্যদিবসের সকল কাগজপত্র দিতে পারবে। 

তানোর ভারপ্রাপ্ত টিএনও মোঃ জানে আলম জানান, আমি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আজই যোগদান করেছি। তাই কিছু জানি না। তবে যিনি নিয়মিত টিএনও তিনি ১৫ দিনের ছুটিতে আছেন। তিনি যোগদান করলে তার কাছে জানতে পারবেন। 

তানোর সাব রেজিস্ট্রার কার্যলয়ের অফিস সহকারী সুমাইকে মুঠো ফোনে কাজী মোঃ আতাউর রহমানের রেকর্ড রুম থেকে নথি গায়েব এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সাব রেজিস্ট্রার সারের সাথে যোগাযোগ করে জানুন। আমি এ ব্যপারে কিছু বলতে পারবোনা। 

সার্বিক অনিয়মের বিষয়ে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে সাব রেজিস্ট্রার মোঃ তহিদুল ইসলাম তানোর জানান, কোন কথা জানতে হলে আমার অফিসে আসতে হবে। ফোনে আমি কোন বক্তব্য দেব না বলে দাম্ভিকতা প্রকাশ করেন। 


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]