মাছের আঁশেও অর্থ আয়! আঁশ সংগ্রহে ঝুঁকছেন মাছ ব্যবাসায়ীরা


কংকনা রায়, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 06-03-2023

মাছের আঁশেও অর্থ আয়! আঁশ সংগ্রহে ঝুঁকছেন মাছ ব্যবাসায়ীরা

ফেলে দেয়া মাছের আঁশ থেকে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার মাছ ব্যবসায়ীরা। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড় থেকে দুই মণ মাছের ভেজা আঁশ সংগ্রহ করাসহ শুখিয়ে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। 

জানা যায়, বড় মাছ কেনার সময় ঝুটঝামেলা থেকে রেহাই পেতে বেশিরভাগ ক্রেতাই কেটে নেন মাছ। ইতোপূর্বে বড় মাছ কাটার সময় মাছের আঁশ চেষে ফেলে দিতেন ব্যবসায়ীরা। তবে সেই আঁশও যে টাকায় বিক্রি হয় তা জানতেন না কেউ-ই। বর্তমানে সেই আঁশ-ই বাড়তি আয়ের পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলার ৪৫-৫০ জন ব্যবসায়ী রোজ আঁশ সংগ্রহ করছেন। বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড় থেকে দুই মণ মাছের ভেজা আঁশ সংগ্রহ হচ্ছে। যা মাছ ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে রোদে শুখিয়ে নিচ্ছেন। পরে সেই শুখনো আঁশ ব্যবসায়ীদের থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন সৈয়দপুর, নওগাঁ ও রাজশাহী থেকে আসা আঁশ ব্যবসায়ীরা। সেই আঁশ থেকে জাপান, চীন, ইন্দোনেশীয়া, কোরিয়া ও থাইল্যা-সহ বিভিন্ন দেশে তৈরি হচ্ছে উন্নতমানের প্রসাধনীসামগ্রী, ফুড সাপ্লিমেন্ট, ক্যাপসুলের ক্যাপসহ অন্যান্য সামগ্রী। 

মাছ ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এ আঁশ জাপান, চীন ও ইন্দোনেশীয়া রপ্তানি হয়। তবে আমাদের সরাসরি রপ্তানি করার সুযোগ নেই, মাধ্যম দিয়ে রপ্তানি করাতে হয়। যদি সরাসরি রপ্তানির সুযোগ থাকতো তবে আরো ভালো দাম পাওয়া যেতো। ফেলে দেয়া এই আঁশে সম্ভাবনাময় স্বপ্ন দেখছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে আঁশ ব্যবসার প্রসার ঘটাতে সরকারি সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা আশা করছেন তারা।

প্রথম দিকে পৌর মাছ বাজারের পাইকার ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার আলী অন্যান্য মাছ ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করতেন। যাতে কেউ মাছের আঁশগুলো না ফেলেন। মাছ কাটার পর সেগুলো যত্নসহকারে জমিয়ে রাখতে পরামর্শ দেন। 

আব্দুল জব্বার আলী বলেন, কেবল সৈয়দপুর, নওগাঁ, রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রামেই নয়, এখন ফুলবাড়ীতেও মাছের আঁশ কেনাবেচার ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। অন্তত অর্ধশত মাছ ব্যবসায়ী আঁশ সংগ্রহ করছেন। শুরুতে আঁশ প্রতি কেজি ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি হলেও, করোনা মহামারীর পর ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে দিতে হচ্ছে। এটি বিদেশে রপ্তানি করলে দেশে অর্থনৈতিক ভূমিকা রাখবে এ আঁশ। তাই এতে সরকারি সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।

আঁশ সংগ্রহকারী মাছ ব্যবসায়ী মো. সমবারু, রেজাউল আলম ও মোজাফফর হোসেন বলেন, আঁশ সংগ্রহের পর শুখিয়ে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। একসাথে ৪ থেকে ৫ মণ আঁশ সংগ্রহ হলে তা কিনে নিয়ে যান বিভিন্নস্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নেই। তবে বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হবে। 


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]