দুবাইয়ের আলোচিত আরাভ জুয়েলার্স উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তবে উদ্বোধনী মঞ্চে না উঠেই ১০ মিনিটের মাথায় অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে চলে যান তিনি।
বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একটি রেঞ্জ রোভার গাড়িতে করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের দেরা বাজারে আসেন সাকিব। এ সময় তার সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আরাভ খান।
জানা গেছে, পুলিশের পরিদর্শক পদমর্যাদার এক সদস্য হত্যা মামলার পলাতক আসামি আরাভ খান। তিনি বর্তমানে দুবাইয়ে স্বর্ণের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সেই আরাভ খানের সোনার দোকানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই দুবাই গেছেন সাকিব।
ঢাকা মহানগর গোয়ান্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে জানান, হত্যা মামলার সাজা থেকে বাঁচতে আবু ইউসুফ লিমন নামে এক তরুণকে বিকেএসপিতে খেলার সুযোগের প্রলোভন দেখান আরাভ। ওই প্রলোভনে লিমন আদালতে আরাভের বদলে আত্মসমর্পণ করেন। পরে আদালত লিমনকে কারাগারে পাঠান। এই ফাঁকে আরাভ ঊর্ধ্বতন এক সরকারি কর্মকর্তার সহায়তায় নকল পাসপোর্ট বানিয়ে দেশত্যাগ করে দুবাইয়ে চলে যান। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে লিমনকে আদালত খালাস দেন।
খুনের মামলার ফেরারি আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে আরাভের দুবাইয়ে জুয়েলারি ব্যবসার বিষয়টি নজরে এসেছে গোয়েন্দা পুলিশের। ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে তাকে গ্রেপ্তারে সহযোগিতা চাওয়া হবে বলে জানায় ডিবি।
আরাভ খান মূলত গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার আশুতিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে সোহাগ ওরফে হৃদয়। পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মো. মামুন এমরান খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি তিনি। ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি দুবাইয়ে অবস্থান করছেন।
২০১৮ সালে মামুন এমরান খানকে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে গাজীপুরে একটি জঙ্গলে ফেলে দেয়া হয়। ওই ঘটনায় হওয়া মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ। ওই সময় থেকেই তিনি পলাতক। পরে জানা যায়, যোগসাজশের মাধ্যমে প্রকৃত আসামি রবিউলের পরিবর্তে জেলে গেছেন চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আবু ইউসুফ লিমন। পরে সত্য প্রকাশ করে দেন তিনি। আদালত বিষয়টি অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব দেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে।
রবিউল ভারতে গিয়ে বিয়ে করে সে দেশের নাগরিকত্ব নেন আরাভ খান নামে। তার ভারতীয় পাসপোর্ট নম্বর ইউ ৪৯৮৫৩৮৯। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত তিন বছর মেয়াদি ভিসা পান তিনি। আরাভ খান প্রবাসিদের কাছে নিজেকে বাংলাদেশি বলে পরিচয় দেন।
ভারতীয় পাসপোর্ট অনুযায়ী আরাভ খানের জন্ম ১৯৯৩ সালের ৩১ জুলাই। ৩০ বছর বয়সি আরাভ খান দুবাইয়ে হাজার কোটি টাকা মূল্যের জুয়েলারি শপ খুলে সেখানকার ব্যবসায়ীদেরও চমকে দিয়েছেন।