সব গুনাহ মাফ হোক ২ রাকাত নামাজে


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 20-02-2022

সব গুনাহ মাফ হোক ২ রাকাত নামাজে

যখন আল্লাহর কোনো বান্দা নামাজে দাঁড়ায় তখন তার সব গুনাহকে উপস্থিত করা হয় এবং গুনাহগুলো তার মাথা ও ঘাড়ের ওপর রাখা হয়। তারপর যখন সে রুকু করে এবং সেজদা করে তখন তার গুনাহসমূহ ঝরে যায়। এমনটিই ঘোষণা করেছেন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

গুনাহমুক্ত জীবন প্রতিটি মানুষের কাম্য। মহান আল্লাহও চান তাঁর বান্দারা গুনাহমুক্ত জীবন যাপন করুক। দুনিয়ার এতসব পাপ-পংকিলতার মাঝে গুনাহমুক্ত থাকাই দায়। তবে হ্যাঁ, ছোট্ট একটি আমলেই গুনাহমুক্ত জীবন গঠন সম্ভব। মুমিন মুসলমান চাইলেই ২ রাকাত নামাজ পড়েই বিগত জীবনের সব গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে পারে? কিন্তু কীভাবে এ নামাজ পড়তে হবে?

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণা, মুমিন বান্দা ২ রাকাত নামাজ পড়লেই মহান আল্লাহ ওই বান্দার বিগত জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত যায়িদ ইবনু খালিদ আল-জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে অজু করে, কোন ভুল না করে (একাগ্রচিত্তে) দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, সেই ব্যক্তির আগের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।’ (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ২ রাকাত নামাজেই সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে-

হজরত ওসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার অজুর মতো অজু করে (একাগ্রতার সঙ্গে) ২ রাকাত নামাজ পড়বে এবং এ সময় অন্তরে অন্য কোনো ধারণা বা চিন্তা হবে না অথবা কোনো কথা বলবে না। তবে তার আগের জীবনের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, নাসাঈ, বাইহাকি, ইবনে হিব্বান)

অপর এক বর্ণনায় নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২ রাকাত নামাজে জান্নাতের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত উকবাহ ইবনু আমির আল-জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেউ উত্তমরূপে অজু করে একাগ্রচিত্তে খালেস অন্তরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।’ (আবু দাউদ, মুসলিম)

উভয় হাদিসে সুন্দরভাবে অজু এবং নবিজীর মতো অজু করার কথা বলা হয়েছে। এখানে অজুর বিশেষত্ব কী? হ্যাঁ, অজুও মানুষকে গুনাহমুক্ত করে। হাদিসে পাকে অজুতে গুনাহ মাফের চমৎকার একটি বর্ণনা তুলে ধরেছেন এভাবে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন কোনো মুমিন অথবা মুসলিম বান্দা অজু করে এবং মুখমণ্ডল ধোয়- তার মুখমণ্ডল থেকে তার চোখের দ্বারা কৃত সব গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে দূর হয়ে যায়। যখন সে তার দুই হাত ধোয়- তার দুই হাতের দ্বারা কৃত সব গুনাহ তার হাত থেকে পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে দূরীভূত হয়ে যায়। এরপর সে সব গুনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়।’ (তিরমিজি)

উল্লেখিত হাদিস ৩টিই গুনাহ মাফের আমল। তাই মুমিন মুসলমানের উচিত, তাড়াহুড়ো কিংবা অমনোযোগী হয়ে কিংবা কথাবার্তায় মগ্ন হয়ে অজু নয়, বরং ধীরস্থিরতার সঙ্গে সুন্দরভাবে অজু করে ফরজ নামাজ আদায় করার আগে দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ আদায় করা। আর তাতেই মিলবে বিগত জীবনের গুনাহ থেকে নিষ্কৃতি।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস ও দিকনির্দেশনার প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া। বিগত জীবনের গুনাহ থেকে নিজেদের পরিশুদ্ধ করে নেওয়া।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উত্তমভাবে অজু করার তাওফিক দান করুন। অজুর পর ২ রাকাত নামাজ পড়ে নিজেদের বিগত জীবনের গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

রাজশাহীর সময় /এএইচ


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]