হিমবাহ গলছে, ৪০ বছর পর সামুদ্রিক প্রাণী বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাবে! আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের


রিয়াজ উদ্দিন: , আপডেট করা হয়েছে : 31-03-2023

হিমবাহ গলছে, ৪০ বছর পর সামুদ্রিক প্রাণী বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাবে! আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের

তাপমাত্রা বাড়ছে আন্টার্কটিকার। হিমবাহ গলছে । আন্টার্কটিকার উপকূলীয় স্রোতের গতি কমছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, আগামী ৪০ বছর পর বিশ্বজুড়ে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রই বদলে যাবে। অক্সিজেন সমৃদ্ধ জলস্রোতের প্রবাহ বন্ধ হবে আন্টার্কটিকা থেকে। জলের তাপমাত্রা বাড়বে, সামুদ্রিক প্রাণী বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাবে।

নেচার জার্নালে এই প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আন্টার্কটিকা থেকে ২৫০ ট্রিলিয়ান টনের মতো ঠান্ডা, অক্সিজেন সমৃদ্ধ জলের প্রবাহ ভারত মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক সাগরের দিকে প্রবাহিত হয়। আন্টার্কটিকার তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হিমবাহ গলনের কারণে এই অক্সিজেন সমৃদ্ধ জলের স্রোতের পরিমাণ কমছে। ওই জলের প্রবাহ অন্য সাগর-মহাসাগর অবধি যেতেই পারছে না। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, একটা সময় আসবে যখন পৃথিবীর সমস্ত সাগর-মহাসাগরের ব্যালান্সটাই বদলে যাবে। বিশ্ব উষ্ণায়ণ ও তার জেরে জলবায়ু বদলের কারণে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে বড় প্রভাব পড়বে।  

আন্টার্কটিকার ‘নর্থ রিফ্ট’ নিয়ে বিজ্ঞানী, পরিবেশবিদদের চিন্তা ছিল আগেই। কারণ, গত কয়েক বছর ধরে আন্টর্কটিকায় যেভাবে হিমবাহ ভেঙে গলে যাচ্ছে তাতে ঘুম উড়েছে বিশ্বের তাবড় পরিবেশবিদদের। পৃথিবীর তাপ বাড়ছে, মেরুপ্রদেশে বরফ গলছে, সমুদ্রের জল বাড়ছে, জলবায়ুর বদল আসন্ন সর্বনাশের খাঁড়া ঝুলিয়েই রেখেছে। তার মধ্যেই নর্থ রিফ্টের ওই পাহাড়প্রমাণ বিশাল বরফের চাঁই ভেঙে পড়াকে মোটেই ভাল চোখে দেখছেন না পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।

আন্টার্কটিকার বিশাল হিমবাহ গলেছিল সেই ২০১৭ সালে। হিমবাহ থেকে খসে পড়া দানবাকৃতি হিমশৈল ভাসতে ভাসতে এখন প্রায় সাউথ জর্জিয়া দ্বীপের কাছে এসে পড়েছে। ন্যাশনাল আইস সেস্টারের গবেষকরা বলছেন, দূরত্ব এখন ৩০ মাইলের কাছাকাছি। দ্বীপের পূর্ব দিকে ধাক্কা মারার সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে। যদি ধাক্কা লাগে তাহলে ওই অংশ ভেঙে সমুদ্রে ডুবে যাবে। দ্বীপের ওই অংশেই পেঙ্গুইন, শিলদের কলোনি রয়েছে। সুতরাং কী বিপদ এগিয়ে আসছে সেটা ভাবলেই শিউরে উঠছেন বিজ্ঞানী, পরিবেশবিদরা।

রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি) রিপোর্ট দিয়েছে, পৃথিবীর তাপমাত্রা আরও ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বাড়তে পারে। তাপমাত্রার বদল হলে এর জের পড়বে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রেও। উপকূলীয় অঞ্চলের তাপমাত্রা এখনই বেশি। সমুদ্রের জলের তাপমাত্রার পরিবর্তন এখন অনেক বেশি হচ্ছে। তাই ঘন ঘন ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের জীববিজ্ঞানী ক্রিস ভেনডিটি বলেছেন, জলের উষ্ণতা স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়লে সামুদ্রিক প্রাণীজগত ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বেশ কিছু প্রজাতির মাছের আকার ছোট হতে থাকবে। অস্তিত্বও লোপ পাবে অনেক প্রজাতির। জলবায়ু পরিবর্তন এবং দূষণের কারণে জলের অক্সিজেনও কমছে। যে কারণেও বিপন্ন মাছের অনেক প্রজাতিই।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]