রাজশাহীর আম মৌসুম শুরু পরিপক্ক না হওয়ায় প্রথম দিনে বাজারে আসেনি আম


মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: , আপডেট করা হয়েছে : 04-05-2023

রাজশাহীর আম মৌসুম শুরু পরিপক্ক না হওয়ায় প্রথম দিনে বাজারে আসেনি আম

গত বছরের হিসাবে এবার ১০ দিন আগে আঁটি জাতীয় আম দিয়ে রাজশাহীর আম পাড়ার মৌসুম শুরু হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। কিন্তু রাজশাহী জেলার সর্ববৃহৎ আমের মোকাম পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে আম কেনাবেচা করতে দেখা যায়নি। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মৌসুম শুরু হলেও এবার এখনো বাগানগুলোতে আমের পরিপক্বতা আসেনি, যার কারণে মৌসুমের প্রথম দিনে জেলার বৃহৎ আমের মোকাম বানেশ্বর বাজারে কোনো আম কেনাবেচা হয়নি। এদিকে প্রকারভেদে কয়েকটি ধাপে আম পাড়তে দিকনির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে অপরিপক্ব আম পাড়া বন্ধে এবং মানবদেহের ক্ষতিকারক কার্বাইড মিশ্রিত আম বাজারে কেনাবেচা প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। 

বৃহস্পতিবার বানেশ্বর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ইউনিয়ন ভূমি অফিস (কাঁচারী মাঠে) ও কলেজ মাঠে কোনো আম ক্রেতা-বিক্রেতা আসেননি। তবে উৎসুক দু-একজন আমের বাজারে দরদাম দেখতে এসেছেন। কোনো আম কেনাবেচা না হওয়ায় তাঁরা দুপুরের দিকে বাড়ি ফিরে গেছেন। 

বাজারে আসা স্বল্পসংখ্যক আমচাষি ও ব্যবসায়ী বলছেন, প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী এবার গতবারের থেকে ১০ দিন আগে আম পাড়া শুরু হয়েছে। তার ওপর এবার সময়মতো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমের পরিপক্বতা আসতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তবে হয়তো আগাম কিছু গাছে আঁটিজাতীয় আম পাকতে শুরু করেছে। 

তারাপুর গ্রামের বাগানমালিক মোমিন উর হক জানান, গত বছর এই অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে এ বছর অনেক বাগানে আমের মুকুল দেখা দেয়। কিন্তু এবার মৌসুমের শুরু থেকে কোনো বৃষ্টিপাত ছিল না। তার ওপর মাত্রাতিরিক্ত দাবদাহে অনেক মুকুল ও কুঁড়ি শুকিয়ে ঝরে গেছে। সম্প্রতি শিলাঝড় ও বৃষ্টিপাত হওয়ায় বেশির ভাগ আম ঝরে গেছে। এখন গাছে শিলার আঘাতে অনেক আম ফেটে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে কিছু আমে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। এতে এ বছর বাগানমালিকেরা কিছুটা লোকসানের আশঙ্কা করছেন। 

বানেশ্বর বাজারের আম ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, এবার কয়েক দিন আগেই আম কেনাবেচা শুরু হলো। তবে আমের পরিপক্বতা না হওয়ায় হয়তো আজকে (প্রথম দিনে) বাজারে আম আসেনি। তবে ৮-১০ দিন পর থেকে আম বাজারে কেনাবেচা শুরু হবে।

গতকাল  বুধবার (৩ মে) জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে গুটি আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবারের আম পাড়া কার্যক্রম। সেই হিসাবে গোপালভোগ আম সংগ্রহ করা যাবে ১৫ মে থেকে। লকনা বা লক্ষণভোগ ও রাণীপছন্দ আম পাড়া যাবে ২০ মে থেকে। 

এ ছাড়া হিমসাগর ও ক্ষীরশাপাতি ২৫ মে, ল্যাংড়া আম ৬ জুন, আম্রপালি ১০ জুন, ফজলি আম ১৫ জুন নামানোর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আর গৌড়মতি, আশ্বিনা ও বারি-৪ আম ১০ জুলাই নামাতে পারবেন বাগানমালিকেরা। আর সবার শেষে ২০ আগস্ট থেকে বাজারে পাওয়া যাবে ইলামতি জাতের আম। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা খ. ম জামাল উদ্দীন বলেন, এলাকায় নতুন ও পুরোনো মিলে প্রায় ৯০০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। বাগানগুলো থেকে গত মৌসুমে আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৫০ টন। এবং উৎপাদন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টন আম। এ বছর প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টন আম উৎপাদন হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।’

জামাল উদ্দীন আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে হয়তো হাতে গোনা দু-একটি গাছে আঁটিজাতীয় আম পাকতে শুরু করেছে। তবে এই আম পুরোদমে পরিপক্ব হতে এক-দুই সপ্তাহ লেগে যাবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, জেলার সর্ববৃহৎ আমের বাজার পুঠিয়ার বানেশ্বর বাজার। তাই আমে কোনো রকম যেন অনিয়ম না হয়, সে ক্ষেত্রে আড়ৎগুলোতে আমাদের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং থাকবে। আর কোন আম কখন পাড়তে হবে, তার একটি দিকনির্দেশনা জেলা প্রশাসন থেকে ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]