রাজধানীর খিলগাঁওয়ে শিশু আরাফের (১১) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তার ওপর বিষপ্রয়োগ করা হতে পারে বলে সন্দেহ বাবার। আরাফ নাসিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) বেলা ১১টার দিকে খিলগাঁও নাসিরাবাদ মধ্যপাড়া ঈদগাঁ মাঠ থেকে জানাজার আগমুহূর্তে আরাফের মরদেহটি হেফাজতে নেয় খিলগাঁও থানা পুলিশ। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান মুন্সী জানান, সোমবার রাত ১১টার দিকে তার বাবা-মা শিশুটিকে ফরাজি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তী সময়ে তারা মরদেহটি বাসায় নিয়ে যান এবং মঙ্গলবার সকালে নাসিরাবাদ ঈদগাঁ মাঠে জানাজার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়ে সেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শিশুটির নাক-মুখে ফেনা দেখা গেছে। বিষয়টি রহস্যজনক মনে হওয়ায় ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
এদিকে মৃত আরাফের বাবা মো. রাসেল মিয়া জানান, তারা খিলগাঁও গৌরনগর বাগপাড়া ক্যাপ্টেনের বাড়িতে থাকেন। সোমবার (২৬ জুন) সারা দিন আরাফ তার নানা আনোয়ার আলীর সঙ্গে ত্রিমোহনী এলাকায় নদীতে ট্রলারে ঘোরাঘুরি করে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসায় ফেরে। রাতে খাবার খেয়ে ঘুমানোর আগে আরাফ বাবা-মাকে জানায়, তার পেট ব্যথা করছে এবং শরীর খারাপ লাগছে। পরবর্তী সময়ে আরাফ ও তার চার বছর বয়সী ভাইকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে তাদের মা রুনা আক্তার এলাকার একটি দোকানে যান। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর সেখান থেকে তাদের মা বাসায় ফিরে দুই ছেলে এবং তাদের বাবা রাসেলকে নিয়ে একই বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে রুনার ঘুম ভাঙলে ছেলে আরাফের শরীরে হাত দিয়ে দেখেন, তার শরীর শক্ত ও শীতল হয়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্থানীয় ফরাজী হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১১টার দিকে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরাফের মৃত্যুর বিষয়ে তাদের সন্দেহ আছে উল্লেখ করে রাসেল জানান, গত সপ্তাহে আরাফ তার চাচাতো ভাই সাকিবের সঙ্গে মিলে এলাকারই এক ব্যক্তির কবুতর চুরি করে আনে বলে অভিযোগ করেন ওই ব্যক্তি। এ ঘটনায় রোববার রাসেল মিয়া ও তার মেজো ভাই আশরাফের পরিবারের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার বিচার হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার। এর আগেই সোমবার রাতে তাদের ছেলে আরাফ মারা যাওয়ার বিষয়টি তাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যার পর যে সময়টুকু দুই ছেলেকে বাসায় রেখে তাদের মা রুনা বাইরে গিয়েছিলেন, সেই সময় কেউ আরাফের ওপর বিষপ্রয়োগ করেছে বা বালিশচাপা দিয়ে মেরে ফেলেছে বলে ধারণা করছেন আরাফের বাবা রাসেল।