যে ৩ পাপের শাস্তি পেতে হবে এ জীবনেই


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 20-09-2023

যে ৩ পাপের শাস্তি পেতে হবে এ জীবনেই

কিছু পাপ এত ভয়াবহ যে তার শাস্তি এ জীবন থেকেই শুরু হয়ে যায়। আখেরাতের শাস্তি তো রয়েছেই। সুনানে আবু দাউদে সংকলিত একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন,

مَا مِنْ ذَنْبٍ أَجْدَرُ أَنْ يُعَجِّلَ اللَّهُ تَعَالَى لِصَاحِبِهِ الْعُقُوبَةَ فِي الدُّنْيَا، مَعَ مَا يَدَّخِرُ لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِثْلُ الْبَغْيِ وَقَطِيعَةِ الرَّحِمِ

মহান আল্লাহ জালিম ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীর মতো অন্য কাউকে দুনিয়াতে শাস্তি দেওয়ার পর আখেরাতের শাস্তিও তার জন্য জমা করে রাখেননি। (সুনানে আবু দাউদ, সুনানে তিরমিজি)

বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন,

اثنان يعجلهما الله في الدنيا: البغي وعقوق الوالدين

জুলুম ও বাবা-মাকে কষ্ট দেওয়ার শাস্তি আল্লাহ দুনিয়াতেই দিয়ে দেন। (মুসতাদরাকে হাকেম, তাবরানি)

১. জুলুম: জুলুম গুরুতর পাপ। এটা যেমন আল্লাহর অবাধ্যতা, একইসাথে দুনিয়ার মানুষের প্রতিও অন্যায়। শুধু আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে জুলুমের পাপ মাফ হয় না বরং তার জুলুমের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সবার কাছেই সে দায়বদ্ধ থাকে। জুলুমের অপরাধের শাস্তি মানুষ দুনিয়াতেই পেয়ে যায়। কোরআনে আল্লাহ বারবার মানুষকে জুলুম থেকে সতর্ক করেছেন, জুলুম থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। দুনিয়াবি শাস্তির পাশাপাশি আখেরাতেও জালিমদের জন্য ভয়াবহ সময় অপেক্ষা করছে। আল্লাহ বলেন,

وَ اَنۡذِرۡهُمۡ یَوۡمَ الۡاٰزِفَۃِ اِذِ الۡقُلُوۡبُ لَدَی الۡحَنَاجِرِ کٰظِمِیۡنَ مَا لِلظّٰلِمِیۡنَ مِنۡ حَمِیۡمٍ وَّ لَا شَفِیۡعٍ یُّطَاعُ

তাদেরকে সতর্ক করে দাও আসন্ন দিন সম্পর্কে, যখন দুঃখ কষ্টে তাদের প্রাণ কন্ঠাগত হবে। জালিমদের কোন বন্ধু নেই, সুপারিশ গ্রাহ্য হবে এমন কোন সুপারিশকারীও নেই। (সুরা গাফির: ১৭)

আল্লাহ যে জালিমদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে গাফেল নন তা মনে করিয়ে দিয়ে আল্লাহ বলেছেন,

وَلَا تَحْسَبَنَّ اللَّهَ غَافِلًا عَمَّا يَعْمَلُ الظَّالِمُونَ

তুমি কিছুতেই ভেবো না আল্লাহ জামিলদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে গাফেল। (সুরা ইবরাহিম: ৪২)

২. বাবা-মাকে কষ্ট দেওয়া: জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের ওপর সবচেয়ে বেশি ইহসান থাকে তার বাবা-মায়ের। বাবা-মায়ের ইহসান বা উপকারের ঋণ কারো পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব হয় না। ইসলাম বাবা-মাকে সম্মান করা, তাদের সাথে সদাচার করা, বৃদ্ধবয়সে তাদের দেখাশোনা করার নির্দেশনা দিয়েছে। কোরআনে আল্লাহ নিজের আনুগত্যের নির্দেশের সাথে সংযুক্ত করে বাবা মায়ের সাথে সদাচরণ করার কথা বলেছেন। আল্লাহ বলেন,

وَ قَضٰی رَبُّکَ اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّاۤ اِیَّاهُ وَ بِالۡوَالِدَیۡنِ اِحۡسَانًا ؕ اِمَّا یَبۡلُغَنَّ عِنۡدَکَ الۡکِبَرَ اَحَدُهُمَاۤ اَوۡ کِلٰهُمَا فَلَا تَقُلۡ لَّهُمَاۤ اُفٍّ وَّ لَا تَنۡهَرۡهُمَا وَ قُلۡ لَّهُمَا قَوۡلًا کَرِیۡمًا وَاخۡفِضۡ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحۡمَۃِ وَ قُلۡ رَّبِّ ارۡحَمۡهُمَا کَمَا رَبَّیٰنِیۡ صَغِیۡرًا

আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার কাছে বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বলো। তাদের উভয়ের জন্য দয়াপরবশ হয়ে বিনয়ের ডানা নত করে দাও এবং বলো, ‘হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা ইসরা: ২৩, ২৪)

২. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা: ইসলাম আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নেওয়া, বিপদ-আপদে সাহয্য করা, অভাবে পড়লে যথাসম্ভব তাদের পাশে দাঁড়ানো মুসলমানদের কর্তব্য। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করলে যেমন দুনিয়াতে তার শাস্তি শুরু হয়ে যায়, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করলে সওয়াবের পাশাপাশি দুনিয়াতেই তার প্রতিদান পাওয়া যায়। রাসুল সা. বলেছেন,

من أحب أن يُبْسَطَ له في رزقه، وَيُنْسَأَ له في أثره، فليصل رحمه

যে ব্যক্তি চায়, তার রিজিক বৃদ্ধি পাক, তার হায়াত বৃদ্ধি পাক, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]