জান্নাতের নেয়ামত হবে অতুলনীয় ও অপরিসীম


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 24-09-2023

জান্নাতের নেয়ামত হবে অতুলনীয় ও অপরিসীম

আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, একদিন নবিজি (সা.) কথা বলছিলেন, তার কাছে এক বেদুইন ব্যক্তি বসে ছিলেন। নবি (সা.) বললেন, জান্নাতবাসী এক ব্যক্তি আল্লাহর কাছে চাষাবাদের অনুমতি চাইবে।

আল্লাহ তাআলা তাকে বলবেন, তুমি কি যা চাও, তা পাচ্ছ না?

সে বলবে, হ্যাঁ, নিশ্চই, কিন্তু আমার চাষ করার খুবই আগ্রহ।

সে বীজ বুনবে এবং তার চারা হওয়া, গাছ বড় হওয়া ও ফসল কাটা সব কয়েক পলকের মধ্যে হয়ে যাবে। কর্তিত ফসলের পাহাড় সমান স্তূপ তাকে দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলবেন, হে আদম সন্তান! এগুলো নিয়ে নাও। কোন কিছুই তোমাকে তৃপ্তি দেয় না!

তখন বেদুইন ব্যক্তিটি বলে উঠলেন, আল্লাহর কসম, এই ধরনের লোক আপনি কুরায়শী বা আনসারদের মধ্যেই পাবেন। তারা চাষী, আমরা তো চাষী নই। (আরবের বেদুইনরা সাধারণত পশু পালন করতো, চাষ করতো না।)

তার কথা শুনে নবিজি (সা.) হেসে ফেললেন। (সহিহ বুখারি)

১. আল্লাহ তার নেক বান্দাদের জন্য জান্নাত সৃষ্টি করেছেন। তাদের জন্য বিলাস ও নেয়ামতের ব্যবস্থা করেছেন। জান্নাতে মানুষের কোনো ইচ্ছাই সেখানে অপূর্ণ থাকবে না। আল্লাহ বলেন,

لَهُمۡ مَّا یَشَآءُوۡنَ فِیۡهَا وَلَدَیۡنَا مَزِیۡدٌ

তারা যা চাইবে, সেখানে তাদের জন্য তাই থাকবে এবং আমার কাছে রয়েছে আরও অধিক। (সুরা কাফ: ৩৫)

আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,

وَ فِیۡهَا مَا تَشۡتَهِیۡهِ الۡاَنۡفُسُ وَ تَلَذُّ الۡاَعۡیُنُ وَ اَنۡتُمۡ فِیۡهَا خٰلِدُوۡنَ

সেখানে মন যা চায় আর যাতে চোখ তৃপ্ত হয় তা-ই থাকবে এবং সেখানে তোমরা হবে স্থায়ী। (সুরা যুখরুফ: ৭১)

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ বলেন, আমি আমার বান্দাদের জন্য এমন নেয়ামত তৈরি করেছি যা কোনো চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি এবং কোনো হৃদয় চিন্তাও করতে পারেনি।’ আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, কুরআন পড়ে দেখুন আল্লাহ বলেছেন, ‘কেউ জানে না তাদের জন্য কী নেয়ামত তৈরি রয়েছে।’ (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

২. যে জান্নাত আল্লাহ তার নেক বান্দাদের জন্য তৈরি করেছেন, তাতে কোনো দুঃখ কষ্ট থাকবে না। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, কেয়ামতের দিন দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি সাচ্ছন্দ্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী জাহান্নামী ব্যক্তিকে আনা হবে। তারপর তাকে জাহান্নামের আগুনে একবার ডু্বিয়ে বলা হবে, হে আদম সন্তান! কখনো কি তুমি সুখে জীবন কাটিয়েছো, কখনও আরাম-আয়েশ দেখেছো? সে বলবে, আল্লাহর কসম! হে আমার রব! না, কখনো দেখিনি। তারপর দুনিয়ায় সবচেয়ে দুঃখ-কষ্টে জীবন কাটানো জান্নাতী ব্যাক্তিকে আনা হবে। তাকে জান্নাতের নেয়ামতে একবার অবগাহন করিয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে, হে আদম সন্তান! তুমি কখনও কষ্ট দেখেছো, দুঃখ কষ্টে দিন কাটিয়েছো? সে বলবে, আল্লাহর কসম, হে আমার প্রতিপালক! কখনো আমি কষ্টে দিন কাটাইনি, জীবনে দুঃখ দেখিনি। (সহিহ মুসলিম)

৩. আখেরাতের সব কিছুই আলাদা হবে। যেমন ইবনে আব্বাস (সা.) বলেছেন, শুধু নামগুলো ছাড়া জান্নাতের কোনো কিছুই দুনিয়ার মতো হবে না। (সহিহ মুসলিম)

এ হাদিসে বর্ণিত ঘটনায় দেখা যাচ্ছে বীজ বোনার পর ফসল বড় হতে সময় লাগেনি। কোনো কষ্ট বা পরিশ্রম করতে হয়নি। এক মুহূর্তে ফসল কাটার উপযোগী হয়ে কাটাও হয়ে গেছে। সুবাহানাল্লাহ! কত অপরিসীম নেয়ামত আল্লাহ তার নেক বান্দাদের জন্য তৈরি রেখেছেন!

আল্লাহ তার দয়ায় আমাদের জান্নাতবাসী হওয়ার তওফিক দিন! নিশ্চই তিনি শ্রেষ্ঠ দয়াময়!


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]