ওয়াদা করেও কথা রাখেন না বাপ্পা হাজী, করেন প্রতারণা!


রাজশাহী প্রতিনিধি, রাজশাহী: , আপডেট করা হয়েছে : 11-03-2022

ওয়াদা করেও কথা রাখেন না বাপ্পা হাজী, করেন প্রতারণা!

রাজশাহী নগরীতে কয়েকশ কোটি টাকার সম্পদের মালিক বাপ্পা হাজী ওরফে শাহ সাবাব আলী বাপ্পা। বিশাল সম্পদশালী হওয়ার পরও তিনি তার সাথে সম্পৃক্ত নানা লোকের কাছে করেছেন প্রতারণা। ওয়াদা করেও সেই কথা রাখেননি তিনি। 

এনিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাপ্পা হাজীর বিরুদ্ধে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন নগরীর পাওয়ার হাউজ এলাকার বাসিন্দা মো. আমির হোসেন ফাইটার। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এমরান আলী। 

অভিযোগের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, নগরীর পাওয়ার হাউজ এলাকায় এক বিঘা জমির রয়েছে বাপ্পা হাজীর। ওই জমিটির বহুতল ভবন নির্মানের জন্য তিনি মাটি খননের কাজ প্রদান করেন ওই এলাকারই ব্যক্তি আমির হোসেন ফাইটারের কাছে। তাদের মধ্যে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে মৌখিকভাবে চুক্তি হয় ৩ টাকা স্কয়ার ফিট হিসেবে মাটি খননের। এছাড়াও ওই স্থানের খননকৃত সম্পূর্ণ মাটি তাকে বিক্রিরও অনুমতি দেন বাপ্পা হাজী। 

প্রাপ্ত অনুমতি সাপেক্ষে কাজও শুরু করেন আমির হোসেন। তবে কাজের মাঝে বাঁধ সাঁধের বাপ্পা হাজী। উত্তোলনকৃত মাটি নিয়ে তা নিজের বোন ও অন্যান্যাদের মাঝে বিক্রি করে দেন। এবং সেই মাটির অর্থ ও গাড়ীভাড়া প্রদান করার প্রতিশ্রæতি দিয়েও তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। গত ২৭ ফেব্রæয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত মোট মাটি নেন ৩ লাখ ৫৩ হাজার টাকার। একই সাথে ওই জমিতে ৩ টাকা স্কয়ার ফিট হিসেবে মোট ৭৬ হাজার ৮০০ ফিট মাটি কর্তন করান আমির হোসেনের দ্বারা। যার বিল হিসেবে আমির হোসেন পান ২ লাখ ৩০ হাজার ৮০০ টাকা। এর কোন অর্থই আমির হোসেনকে প্রদান করেননি বাপ্পা হাজী। টাকা চাইতে গেলে উল্টো চাঁদাবাজির মামলার ভয় দেখান তিনি। 

এবিষয়ে ভুক্তভোগী আমির হোসেন বলেন, হাজী সাহেব আমাদের স্থানীয় মানুষের সামনে আমাকে ৩ টাকা রেটে বেজ খননের কাজ দেন। তার কথামতো কাজ শুরু করি। কাজ চলার আগেই কিছু অর্থ দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি তা দেননি। উল্টো আমার ব্যাংক থেকে টাকা তুলে এমনকি ঋণ করে কাজ শেষ করি। তারপরও তিনি আমাকে অর্থ দিচ্ছেন না। উল্টো আমাকে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। 

শুধু তাই নয়, তিনি আমার উত্তোলিত মাটি নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেন। ওই অর্থ চাইলে দিবো দিবো করে এখন পর্যন্ত এক টাকাও দেন নি। এতে অনেকটায় বিপদের মধ্যে পড়েছি বলে জানান আমির হোসেন। 

স্থানীয় যুবলীগ নেতা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শুধু আমি একাই ভুক্তভোগী নয়। তার কাছেই কাজ করতেন বন্টি নামের এক ব্যক্তি। তিনি তাকে পুরনো কাঠ ও কিছু আসবাবপত্র দিয়ে দেন বিক্রির জন্য। পরে তিনিই আবার থানায় অভিযোগ দেন মন্টির নামে। এখানেই শেষ নেই তার। তার ওই এক বিঘা জমিটিতে ফাইভ বিল্ডার্স নামের একটি নির্মান প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু তাদের সাথে তিনি চুক্তি ভঙ্গ করেন এবং তাদের মামলা ও হুমকি-ধামকি দিয়ে বিতাড়িত করেন।  

তিনি আরো জানান, নগরীর সিলিন্দায় একটি আমের বাগান তিন ব্যক্তির কাছে তিন বার দলিল ইজারা প্রদান করেন। পরে তাদের মধ্যেও গন্ডগোলের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও মৌগাছির উপজেলার চেয়ারম্যান আলামিনকে মোবাইল ফোনে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে হত্যার হুমকি প্রদান করেন। এরপর তার আপন ভাইয়ের জমিটি তার বাবা-মার কাছে থেকে নিজ নামে লিখিয়ে নেন। এতে তার ভাই থানায় মামলা করলে তাকে হাযতবাস করতে হয়। এছাড়াও আরো বহু লোককে তিনি ওয়াদা করেও পরে প্রতারণা করেছেন। 

আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, থানায় আমির হোসেনের লিখিত অভিযোগটি দায়ের হয়েছে। ঘটনাটি প্রথমে তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি এমরান আলী। 

রাজশাহীর সময় / এম জি


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]