যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ ও মাকরুহ হয়


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 26-03-2024

যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ ও মাকরুহ হয়

সারা বিশ্বজুড়ে রমজানের আমেজ বিরাজ করছে, একযোগে পালিত হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। ইসলামের মূল পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রোজা হচ্ছে তৃতীয় স্তম্ভ। মুসলিমদের জন্য রোজা একটি অন্যতম ফরজ ইবাদত যা ভঙ্গ করা কবিরা গুনাহ। রোজা ভঙ্গকারী নিকৃষ্ট পাপী। 

ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী রোজার শুদ্ধাতা অর্জন ও যথাযথভাবে পালনের জন্য কিছু বিধিমালা আছে যার ব্যতিক্রম হলে রোজা ভঙ্গ কিংবা মাকরুহ হয়ে যায়। রোজার নিয়তে সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার পর যদি অসর্তকতাবশত কোনো ব্যক্তির রোজা ভঙ্গ বা মাকরুহ হয়ে যায়; তাহলে তার চেয়ে দুর্ভাগা আর কে আছে?

প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, মুসলিম নর নারীর জন্য রোজা রাখা আবশ্যক। শুধুমাত্র পানাহার থেকে বিরত থাকালেই রোজা আদায় হয়ে যায় না; বরং রোজা অবস্থায় মেনে চলতে হয় বেশ কিছু নিয়মকানুনও। আল্লাহ তায়ালা রোজাদারকে তিনটি বিষয় থেকে বিরত থাকতে বলেছেন— ১. স্ত্রী-সহবাস, ২. খাবার গ্রহণ, ৩. পানীয় গ্রহণ। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৮৭)

সুতরাং কেউ স্ত্রী-সহবাস ও পানাহারে লিপ্ত হলে তার রোজা ভেঙে যাবে। এছাড়া নারীদের ঋতুস্রাবের কারণেও রোজা ভেঙে যায়। এসব কারণ ছাড়াও আরও বেশকিছু কারণ আছে, যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।

রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ— 

 ১. মুখ ভরে বমি করা। ২. ইচ্ছা করে বমি করা। ৩. বমির বেশির ভাগ মুখে আসার পর তা গিলে ফেলা। ৪. মেয়েদের মাসিক ও সন্তান প্রসব। ৫. ইসলাম ত্যাগ করা। ৬. রোজাদারকে জোর করে কিছু খাওয়ানো। ৭. প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে ওষুধ বা অন্য কিছু শরীরে প্রবেশ করানো।

৮. গ্লুকোজ, শক্তিবর্ধক ইনজেকশন বা সেলাইন নেওয়া। ৯. ভুলবশত কোনো কিছু খেয়ে রোজা ভেঙে গেছে ভেবে আরও কিছু খাওয়া। ১০. ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে সূর্যাস্তের আগে ইফতার করা।

১১. বৃষ্টির পানি মুখে পড়ার পর তা খেয়ে ফেলা। ১২. কান বা নাক দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করানো। ১৩. দাঁতের ফাঁক থেকে ছোলা পরিমাণ কোনো কিছু বের করে খাওয়া। ১৪. রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় অজুতে কুলি বা নাকে পানি দেওয়ার সময় ভেতরে পানি চলেগেলে। (ফাতাওয়ায়ে শামি ও ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি)।

১৫. রাত অবশিষ্ট আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর পানাহার করা। ১৬. হস্তমৈথুন বা অন্য কোনোভাবে বীর্যপাত করা ১৮. শিঙ্গা লাগানো কিংবা এ জাতীয় অন্য কোনো কারণে রক্ত বের হলে।

এই কারণগুলো ছাড়াও এমন কিছু কাজ আছে যা করলে রোজা ভঙ্গ হবে না; তবে রোজার পূর্ণ সওয়াব পাওয়া যাবে না, বরং রোজা মাকরুহ হয়ে যাবে। রোজার পূর্ণ সওয়াব অর্জন করতে অন্যান্য আমল ঠিক রাখার পাশাপাশি অশ্লীল কাজ, পাপাচার, সুদ-ঘুষ, হারাম পানাহার, অন্যের হক নষ্ট করা, ওজনে কম দেওয়া সহ সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।

রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণ— 

১. কোনো কারণ ছাড়াই কিছু চিবানো। ২. সারাদিন রোজা সঠিকভাবে পালন করার পরেও ইফতারির সময় এমন কোনো খাবার গ্রহণ করা যা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। ৩. গড়গড়া করা বা নাকের ভেতর পানি টেনে নেওয়া। ৪. কোনো কিছু শুধু মুখে পুরে রাখা, সেক্ষেত্রে না খেলেও রোজা মাকরুহ হবে।

 ৫. মুখের লালা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পেটে গেলে ক্ষতি নেই, তবে ইচ্ছাকৃত দীর্ঘ সময় মুখে থুথু ধরে রেখে পরে গিলে ফেললে রোজা মাকরুহ হবে। ৬. রমজানে সারা দিন অপবিত্র শরীরে থাকা। ৮. পাউডার, পেস্ট ও মাজন দিয়ে দাঁত পরিস্কার করা।

 ৯. রোজা রেখে কারো গিবত বা পরনিন্দা করা। ১০. মুখে গুল ব্যবহার করা এবং থুথুর সঙ্গে গুল গলার ভেতর চলে যাওয়া। ১১. মিথ্যা কথা বলা মহাপাপ। রোজা রেখে মিথ্যা বলা মাকরুহ।

 ১২. ঝগড়া-বিবাদ করা ১৪. রান্নার সময় কোনো কিছুর স্বাদ নেওয়া—যেমন, লবন চেখে দেখা, ঝাল পরখ করা, তবে বিশেষ প্রয়োজনের কারণে তা বৈধ। ১৫. নাচ, গান, সিনেমা দেখা। ১৬. যৌন উদ্দীপক কিছু দেখা বা শোনা। ১৭. উচ্চস্বরে চিৎকার কিংবা গালিগালাজ করা।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]