ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে আ. নেতা কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিত!


বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 10-04-2022

ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে আ. নেতা কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিত!

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি'র বাংলাদেশ দূতাবাসে আওয়ামীলীগ নেতা কর্তৃক লেখক, সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিত হয়েছেন। ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে গত ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী এবং ৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে ভার্জিনিয়া প্রবাসী লেখক সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুণ চৌধুরী যোগ দিতে গেলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মাহমুদুন নবী বাকী তাকে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিরা তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুণ চৌধুরী জানান, গত ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী এবং ৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত এম শহিদুল ইসলামের আমন্ত্রণ পেয়ে ওইদিন বিকেলে দূতাবাসে হাজির হন ভার্জিনিয়া প্রবাসী লেখক সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুণ চৌধুরী। দূতাবাসে আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে হারুণ চৌধুরীকে দেখেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ভার্জিনিয়ার মানাসাস প্রবাসী আওয়ামীলীগ নামধারী কথিত নেতা মাহমুদুন নবী বাকী। হারুণ চৌধুরীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালির একপর্যায়ে আপনি কিসের মুক্তিযোদ্ধা? এখানে কেন এসেছেন বলে তাকে অপদস্থ করেন? বাকী'র এমন অসদাচরণে হতবাক হয়ে পড়েন উপস্থিত আওয়ামীলীগ নেতাকর্মি, সাংবাদিকসহ অনেকেই। এ সময় দূতাবাসের অনুষ্ঠান অনুকূলে রাখার জন্য স্থানীয় আইনজীবি ও আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ আলমগীর ও নিউ ইয়র্ক প্রবাসী সাংবাদিক লাবলু আনসার মুক্তিযোদ্ধা হারুণ চৌধুরীকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন। ফলে মাহমুদুন নবী বাকীর অসভ্য ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ সহ্য করেও বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুণ চৌধুরী নিশ্চুপ থাকেন যাতে দূতাবাসের পরিবেশ বিনষ্ট না হয়।

হারুণ চৌধুরী বলেন, ২০১৪ সালে ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসে ১৫ আগষ্ট পালন অনুষ্ঠানে মাহমুদুন নবী বাকী আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে অসদাচণের ফলে অনুষ্ঠানের বিঘ্ন ঘটে। এজন্য তাকে দূতাবাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। দীর্ঘ কয়েক বছর তাকে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

তিনি জানান, মাহমুদুন নবী বাকী দেশে অবস্থানকালে জাসদ ছাত্রলীগের সাথে জড়িত ছিলেন। তার বাবা ছিলেন পাকিস্তান রেলওয়ের একজন কর্মচারি থাকাকালীন সময় পাকিস্তানিদের সাথে ছিল তার গভীর সম্পর্ক। বাকি যুক্তরাষ্ট্রে আসার আগে একজন কাপড় ব্যবসায়ী ছিলে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তথাকথিত আ. লীগ নেতামাহমুদুন নবী বাকী পৃথক পৃথক ঘটনায় প্রায় এক ডজেনের বেশি প্রবাসী আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে তিনি দুর্ব্যবহারসহ তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন। তার দ্বারা সর্বশেষ লাঞ্ছিত হয়েছেন সেক্টর ২ কে ফোর্সে খালেদ মোশারফ ও মেজর হায়দারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধা এবং শ্রীনগর থানা কমান্ভারের দায়িত্ব পালনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুণ চৌধুরী। এর আগে তিনি মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রস্থ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি এবং যুক্তরাষ্ট্র সেনসাস ব্যুরোর সাবেক মহাপরিচালক ড. মনসুর খন্দকার, মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, ড. মিজান মজুমদার, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাদেক খান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক অমর ইসলাম, মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন ও সাবেক সাধারন সম্পাদক শেখ সেলিম, আওয়ামীলীগ নেতা শামীম চৌধুরী, জি আই রাসেল ও শিব্বির আহমেদকে লাঞ্ছিত করেছেন।

মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাদেক খান জানান, মাহমুদুন নবী বাকী তার কমিটির সাধারন সম্পাদক কিন্তু নানা ঘটনা ও তার উগ্রপন্থী মনোভাবের ফলে কোন রকম সুসম্পর্ক নাই। ফলে মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামীলীগ পরিচালনার ক্ষেত্রে নানা বাধা বিপত্তির দেখা দেয়। মেট্রো ওয়াশিংটনসহ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের প্রায় সকল নেতাদের সাথেই তার বাক-বিতন্ডার ঘটনা ঘটেছে, এমনকি তার দ্বারা অসংখ্য নেতাকর্মিরা লাঞ্ছিত হয়েছেন। কাউকেই তিনি কোন সম্মান দিতে চান না। তার এ ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের ঘটনাগুলি কেন্দ্রিয় কমিটির নেতাদের যথাযথ সময়ে জানানো হয়েছে। এর ফলে তাকে কয়েক দফায় বহিস্কার করা হয়েছিল। তিনি শুধু নিজেকেই আওয়ামীলীগ নেতা মনে করেন, অন্য আর কাউকেই নয়। এ ঘটনায় মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিদের পক্ষ থেকে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানান সাদেক খান।

এ ঘটনার সত্যতা জানতে ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করা হলে দূতাবাসের জনৈক কর্মকর্তা জানান বিষয়টি তারা শুনেছেন তবে পুরোপুরি অবগত নন।

ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত এম শহিদুল ইসলামের সাথে ক্ষুদে বার্তায় যোগাযোগ করা হলে অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ঘটনার সত্যতার যাচাইয়ের জন্য অভিযুক্ত মাহমুদুন নবী বাকীর সাথে যোগাযোগ করা হয়। তাকে প্রশ্ন করা হয় গত ৪ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসে আপনি কি কোন মুক্তিযোদ্ধা বা আওয়ামীলীগ নেতাকে লাঞ্ছিত করেছেন? প্রকৃত ঘটনা কি তা জানতে চাই? জবাবে তিনি জানান, কে মুক্তিযোদ্ধা আর কে আওয়ামীলীগ নেতা? উত্তরে হারুণ চৌধুরী ও ড. মনসুর খন্দকারের নাম উল্লেখ করা হয়। পরে তিনি সঠিক উত্তর না দিয়ে বলেন, এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন হয় না বলে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো বন্ধ করতে বলেন তিনি।  

রাজশাহীর সময় / এম আর


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]