রমজানে ইতেকাফ সুফল পাওয়ার ইবাদত


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 21-04-2022

রমজানে ইতেকাফ সুফল পাওয়ার ইবাদত

রমজান মাসের ২০ রোজায় মসজিদে ইতেকাফ শুরু করবে মুমিন। এদিন ইফতারের আগেই ইতেকাফে আগ্রহীদের মসজিদে চলে যেতে হবে। ইতেকাফই একমাত্র ইবাদত, যার মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার একান্ত নিবিড় সর্ম্পক তৈরি হয়। মুমিন পায় মর্যাদার রাত 'লাইলাতুল কদর'।

আল্লাহর সঙ্গে বান্দার ঘনিষ্ট সম্পর্ক তৈরির পাশাপাশি ইতেকাফের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো পবিত্র লাইলাতুল কদর পাওয়া। এ রাত যে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোজা ফরজ হওয়ার পর থেকে ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত ইতেকাফ ছাড়েননি। আর তাইতো ইসলামিক স্কলারদের ভাষ্য মতে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফে অতিবাহিত করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া।

যারা নিজেদেরকে ইতেকাফের মাধ্যমে মসজিদে আবদ্ধ করে রাখে, তাদের সঙ্গে আল্লাহর সম্পর্ক না হয়ে পারে না। আর তারা নিশ্চয়ই পবিত্র লাইলাতুল কদরের মতো মর্যাদার রাতের ফজিলতও লাভ করেন।

মসজিদে ইতিকাফ: ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, যে মসজিদে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাআতসহ আদায় করা হয় সে মসজিদে রমজানের শেষ দিন ইতেকাফে অবস্থান করা। মসজিদ ছাড়াও নির্ধারিত স্থানে ইতেকাফ করা যায়। তবে মসজিদে ইতেকাফই উত্তম। কারণ মসজিদ মুত্তাকিদের ঘর।

সুতরাং যারা ইবাদতের উদ্দেশ্যে মসজিদে ইতেকাফ করবে আল্লাহ তাআলা ওই বান্দার প্রতি অবিরত শান্তি ও রহমত নাজিল করবেন। পরকালের সব হিসাব-কিতাব সুসম্পন্ন করে জান্নাতে পৌছানোরও জিম্মাদার হবেন। ইতেকাফের ধরন-

১. ওয়াজিব ইতেকাফ: যদি কেউ কোনো কারণে নিয়ত করে ইতেকাফ করার ইচ্ছা করে। তবে তার জন্য ইতেকাফ আদায় করা ওয়াজিব। ওয়াজিব ইতেকাফ করার সময় দিনের বেলায় অবশ্যই রোজা রাখতে হবে। আবার কেউ যদি সুন্নাত ইতেকাফে থাকাবস্থায় ইতেকাফ ভঙ্গ করে তবে তার জন্য এ ইতেকাফ পুনরায় পালন করা ওয়াজিব বা আবশ্যক হয়ে যায়।

২. সুন্নাত ইতেকাফ: রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করা সুন্নাত। ২০ রমজান ইফতারের আগেই মসজিদে অবস্থান করতে হয়। আর শাওয়াল মাসের চাঁদ ওঠা পর্যন্ত এ ইতেকাফ পালন করতে হয়। যদি কেউ সুন্নাত ইতেকাফে বসে শাওয়ালের চাঁদ ওঠার আগেই ইতেকাফ ভঙ্গ করে তবে পরবর্তীতে এ ইতেকাফ আদায় করা ওই ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব বা আবশ্যক।

৩. নফল ইতেকাফ: সাধারণভাবে যে কোনো সময় ইতেকাফ করা নফল। এ ইতেকাফের নির্ধারিত কোনো সময় কিংবা দিন নেই। তা অল্প সময়ের জন্যও হতে পারে। এ কারণেই মসজিদে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ইতেকাফের নিয়ত করা উত্তম।

রমজানের সুন্নাত ইতেকাফ কেন করবেন?

রমজান মাসের শেষ দশকে রয়েছে এক মহিমান্বিত রাত ‘লাইলাতুল কদর’। কুরআনে কারিমে এ রাতকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলা হয়েছে। আর রাতটি রয়েছে রমজানের শেষ দশকের যে কোনো বেজোড় রাতে। তাইতো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লাইলাতুল কদর তালাশে শেষ দশক মসজিদে ইতেকাফে অতিবাহিত করতেন।

ইতেকাফের ফজিলত: ১. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে একদিন ইতেকাফ করে, আল্লাহ সেই ব্যক্তি ও জাহান্নামের মধ্যে ৩ খন্দক (এক খন্দকের দূরত্ব হলো পূর্ব থেকে পশ্চিম দিগন্তের চেয়ে বেশি) পরিমাণ দূরত্ব সৃষ্টি করেন।’ (তাবরানি ও মুসতাদরাকে হাকেম)

২. হজরত আলি বিন হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু নিজ পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ হলো দুই হজ ও দুই ওমরার সমান’ (বায়হাকি)

৩. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ইতেকাফকারী গোনাহ থেকে বিরত থাকে। তাকে সব নেক কাজের কর্মী বিবেচনা করে অনেক সাওয়াব দেয়া হবে।’ (ইবনে মাজাহ)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইতেকাফের ফজিলত লাভে যথাযথ নিয়ম মেনে ইতেকাফে অংশগ্রহণ ও পবিত্র লাইলাতুল কদর পাওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

রাজশাহীর সময়/এএইচ


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]