গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট, যুক্তরাষ্ট্রের ৯৫ শতাংশ বাংলাদেশিরাই জানেন না 'বাংলাদেশ কনসার্ট' এর কথা


নোমান ইবনে সাবিত (বিপি), নিউ ইয়র্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 06-05-2022

গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট, যুক্তরাষ্ট্রের ৯৫ শতাংশ বাংলাদেশিরাই জানেন না 'বাংলাদেশ কনসার্ট' এর কথা

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের ঐতিহাসিক মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে আজ শুক্রবার (৬ মে) অনুষ্ঠি্ত হতে যাচ্ছে ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট’। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত এত বড় একটি আন্তর্জাতিক মানের কনসার্টের আয়োজন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের শতকরা ৯৫ শতাংশ বাংলাদেশি এখনো এ খবর জানেন না। এ নিয়ে প্রবাসীদের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।

গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্টের কোনো প্রচার প্রচারণাও নেই কোথাও। অনুষ্ঠানের স্থানীয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট মেইন স্ট্রিম মিডিয়া নামক প্রতিষ্ঠান প্রকাশ্যে আসেননি। নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ১৫টি সাপ্তাহিক পত্রিকার মধ্যে মাত্র কমসংখ্যক প্রচারের ৩/৪টি পত্রিকায় দায়সারা গোছের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। এসব বিজ্ঞাপনে কনসার্টের সময়সূচি, টিকেটের মূল্য, টিকেট কোথায় পাওয়া যাবে, কার সঙ্গে প্রয়োজনে যোগাযোগ করা যাবে সেসব বিষয়ের কোনো উল্লেখ নেই। দায়সারা গোছের একটি প্রচারপত্র এটি। এতে ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনের ঠিকানাও উল্লেখ করা হয়নি। শেষ মুহূর্তে কনসার্টের একদিন আগে নিউ ইয়র্ক কনস্যুলেটে আইসিটি মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে এই কনসার্ট নিয়ে কোথাও কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

গত বুধবার (৪ মে) সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল-এর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, প্রতিষ্ঠিত লেখক-সাহিত্যিক-সাংবাদিকদের বিনা মূল্যে মিলনায়তনে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামীলীগ দলীয় লোকজনরাও বিনা মূল্যে টিকেট পাবেন। গত ৪ মে পর্যন্ত টিকিট বিক্রি ও বিতরণ হয়েছে মাত্র ৪ হাজারের মত। অথচ ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনের মিলনায়তনের আসন সংখ্যা ২০ হাজার ৭ শত ৮৯টি। এ মিলনায়তনের এক দিনের ভাড়া প্রায় অর্ধ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা)।

সংবাদ সম্মেলন থেকে কনসার্ট নিয়ে সীমাহীন নিরবতা কিংবা গোপনীয়তা অবলম্বন করায় প্রবাসীরা আগে কিছুই জানতে পারেননি। শেষ মুহূর্তে কনসার্টের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করায় প্রবাসীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বিশ্বখ্যাত ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে 'গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট' আয়োজন করেছে সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয়। মহান মুক্তিযুদ্ধকালে ১৯৭১ এর ১ আগস্ট এই ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে জর্জ হ্যারিসন, পণ্ডিত রবিশঙ্করের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ কনসার্ট’। আর এ কনসার্ট ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাহায্যের জন্য। তাদেরই স্মরণে শুক্রবার ৬ মে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয়ের হাইটেক পার্ক বিশাল বাজেটে এই কনসার্ট আয়োজন করেছে। প্রায় বছর খানেক আগে এই কনসার্টের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হলেও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীরা এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে। শুধু তাই নয়, কনসার্ট সম্পর্কে শেষ মুহূর্তে জানতে পেরেছে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল। বিশাল বাজেটের এই কনসার্ট উপভোগ করতে দেশ থেকে মন্ত্রী, এমপি, আমলা ও তাদের পরিবারের মোট ৫৫ জন সদস্য নিউ ইয়র্কে আসছেন বলে জানা গেছে।

বিদেশ যাওয়া সংক্রান্ত সরকারি আদেশে (জিও) দেখা যায়, এ আয়োজনে অংশ নিতে যাচ্ছেন সরকারের দুই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, তিনজন সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনসহ ৫৫ জন। এঁদের মধ্যে আইসিটি বিভাগসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রকল্প ও দপ্তরের আছেন ৩১ জন। এত কর্মকর্তা কেন যাচ্ছেন, কোন মাপকাঠিতে যাচ্ছেন, তাঁদের কার কী দায়িত্ব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বিকর্ণ কুমার ঘোষ কাছে দাবি করেন, যাঁরা যাচ্ছেন, সবারই ভূমিকা আছে। কনসার্ট ছাড়াও ব্র্যান্ডিং এবং বাংলাদেশকে তুলে ধরার বিষয় আছে। এ ছাড়া নিউ ইয়র্ক ও সিলিকন ভ্যালিতে বিজনেস সামিট হবে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাউথ এশিয়ান আইসিটি সেন্টার স্থাপনের জন্য সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠান এবং বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এটি তাদের সরকারি সফর হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, কনসার্টের জন্যে একাধিক মন্ত্রী, এমপি এবং বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এসেছেন, তবে সে সংখ্যা কোনভাবে ২০ জনের বেশি হবে না। আরো কয়েকজন এসেছেন নিজ খরচে। এ নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই বলেও মন্তব্য করেছেন জুনাইদ আহমেদ পলক।

মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিতব্য ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট সম্পর্কে জানতে মার্কিন সংবাদবাধ্যম 'বাংলা প্রেস' প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে টুইটারে ও স্থানীয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট মেইন স্ট্রিম মিডিয়ার কর্ণধার ফরহাদকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন করেন-গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট-এর মূল উদ্দেশ্য কি? উক্ত অনুষ্ঠানের সর্বমোট বাজেট কত? সরকারি অর্থের পরিমান কত এবং পৃষ্ঠপোষকরা কত দিচ্ছেন? মোট কতজন ডেলিগেট আসছেন বাংলাদেশ থেকে? আইসিটি বিভাগের বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক আয়োজিত উক্ত গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট-এর যুক্তরাষ্ট্রস্থ প্রতিনিধি বা আয়োজক সহযোগি কারা এবং তাদের ভূমিকা কি? ৬ মে নিউ ইয়র্কের মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিতব্য ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্টের প্রচারহীনতা ফলে এখনো যুক্তরাষ্ট্রস্থ শতকরা ৯৫ শতাংশ প্রবাসী এ খবর জানেন না, এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি? কিন্তু কেউ এসব প্রশ্নের উত্তর দেননি বলে মার্কিন সংবাদবাধ্যম 'বাংলা প্রেস জানিয়েছে।

এই কনসার্টের মোট ব্যয় ও বাজেট কত, সেটা বলতে রাজি হননি হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের এমডি বিকর্ণ কুমার ঘোষ। তবে তিনি বলেন, এ আয়োজনে সরকার দিয়েছে ১০ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন শিল্প গ্রুপ এই কনসার্টে সহায়তা (স্পনসর) করছে। কোন প্রতিষ্ঠান কত টাকা দিচ্ছে, সেটা জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে যে হিসাব পাওয়া গেছে, বেসরকারি এসব প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে ১৫ কোটি পাওয়া যাচ্ছে। জিও অনুযায়ী, আইসিটি বিভাগসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, সরকারের অন্য বিভাগের কর্মকর্তা ও সাংসদদের ব্যয় আইসিটি বিভাগ, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, আইসিটি অধিদপ্তর এবং আইসিটি বিভাগের চলমান বিভিন্ন প্রকল্প থেকে ধরা হয়েছে।

কর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, এ ছাড়া অন্য কোনো খাত নেই। বিভিন্ন প্রকল্পে ভ্রমণভাতা থাকে, সেটা কেটে এই কানসার্টের ব্যয় করা হচ্ছে।এ ছাড়া যাঁদের স্বজনেরা এই কনসার্টে যাচ্ছেন, তাঁরা এবং হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের চুক্তিভিত্তিক দুই কর্মকর্তা নিজ খরচে যাবেন। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’। পণ্ডিত রবিশঙ্কর বিশ্বখ্যাত ব্যান্ড বিটলসের শিল্পী জর্জ হ্যারিসনকে সঙ্গে নিয়ে ওই কনসার্টের আয়োজন করেছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এবার সেই ম্যাডিসনে গাইবে বিশ্বখ্যাত ব্যান্ড স্করপিয়ন্স ও বাংলাদেশের চিরকুট। আইসিটি বিভাগ বলছে, কনসার্ট থেকে আসা অর্থ ইউএনডিপির মাধ্যমে স্বল্পোন্নত ও দরিদ্র দেশের শিশুদের সাইবার নিরাপত্তা সহায়তায় ব্যয় হবে। জিও অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তাদের বেশির ভাগের যাত্রা মে মাসের শুরুতে এবং ১০-১৭ মের মধ্যে দেশে ফেরার কথা রয়েছে। ভ্রমণের পুরো সময় সরকারি দায়িত্ব পালন হিসেবে গণ্য হবে। আত্মীয়স্বজনসহ যাঁরা যাচ্ছেন: আইসিটি বিভাগ ও এর অধীন ছয়টি প্রকল্প, আইসিটি অধিদপ্তর, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের মোট ৩১ জন কনসার্টে যোগ দিতে যাবেন। এই তালিকায় আইসিটি বিভাগের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ, তাঁর একান্ত সচিব সাইফুল ইসলাম এবং প্রতিমন্ত্রীর দুজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম ও একরামুল হক, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল আমিন ও খন্দকার আজিজুল ইসলাম, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্প পরিচালক মোস্তফা কামাল, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ এবং তাঁর মেয়ে ও প্রকল্প সহায়ক গীতাঞ্জলী ঘোষ। আরও যাচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তাঁর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, তাঁর একান্ত সচিব মো. মনিরুজ্জামান, কমিটির সদস্য নুরুল আমিন ও অপরাজিতা হক; সংরক্ষিত আসনের সাংসদ নাহিদ ইজাহার খান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমম্বয়ক জুয়েনা আজিজ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজমা মোবারক, পরিকল্পনা কমিশনের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম।

তাঁদের সঙ্গে আরও যাচ্ছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলেকের মা জামিলা আহমেদ ও বোন ফারজানা আহমেদ, সাংসদ নুরুল আমিনের স্ত্রী রোকশানা পারভীন, সাংসদ অপরাজিতা হকের স্বামী মোজাম্মেল হক, এ কে এম রহমতুল্লাহর স্ত্রী হালিমা রহমতুল্লাহ, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্ত্রী তাপসী ঘোষ, আইসিটি বিভাগের উপসচিব রেজা মো. আবদুল হাইয়ের স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন, জেলা পর্যায়ে আইটি/হাইটেক পার্ক স্থাপন (১২টি জেলায়) প্রকল্পের পরিচালক এ কে এম ফজলুল হকের স্ত্রী ফারহানা আরাবিয়া, আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিবের স্ত্রী লাকি আক্তার ও তিন মেয়ে। এই বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ম্যাডিসন স্কয়ার বাংলাদেশের স্বাধীনতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। সেই স্থানে ৫০ বছর পর কনসার্টের উদ্যোগটি ভালো। কিন্তু যেসব সরকারি কর্মকর্তা যাচ্ছেন, তাঁরা কোন মাপকাঠিতে যাচ্ছেন, আয়োজনের সঙ্গে তাঁদের কী সম্পৃক্ততা এবং কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা সরকারি আদেশে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন। তাঁর মতে, যাঁরা যাচ্ছেন, সেখানে কার কী দায়িত্ব, সেটার জবাবদিহি প্রয়োজন। সরকারি টাকায় এই ব্যয়বহুল ভ্রমণের পেছনে যৌক্তিকতা না থাকলে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।

নিউ ইয়র্কে সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী পলক: আয়োজনের ক্রুটির জন্য নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। স্থানীয় সময় বুধবার (৪ মে) সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল-এর মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট-এর বিশাল এ আয়োজনে নানা ভুলক্রুটি ইতোমধ্যে চোখে পড়েছে এবং আগামীতেও ভুল হতে পারে এজন্য তিনি দূঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

তিনি বলেন আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, গল্প শুনে এবং ইতিহাস পড়ে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জেনেছি। আমি নতুন প্রজন্মের একজন মন্ত্রী। তাই এই বিশাল আয়োজনে ভুলক্রুটি হওয়াটাই স্বাভাবিক।

প্রতিমন্ত্রী পলক কথা প্রসঙ্গে বলেন, বিশ্বখ্যাত মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে ১৯৭১ সালের ১ আগষ্টে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি বিশ্ববাসীর সমর্থন অর্জন ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্বিচার গণহত্যার চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আজ পর্যন্ত  বাংলাদেশিদের কোন অনুষ্ঠান মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে হয়নি। তাই আমরা ঐতিহাসিক মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনকে ভ্যেনু হিসেবে বেছে নিয়েছি।

উপস্থিত সাংবাদিকরা প্রতিমন্ত্রীর ভুল ধরিয়ে দিয়ে বলেন ইতিপুর্বে মেডিসন স্কয়ার গার্ডেন দু'বার বাংলাদেশিদের মিলন মেলা নামে পরিচিত ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন ইন নর্থ আমেরিকার (ফোবানা)সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী তাৎক্ষনিকভাবেই বলেন এটা আমার জানা ছিল না। এ ভুল তথ্যের জন্যও তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চান।

গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট-এর বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে প্রশ্ন করেন সাংবাদিক কৌশিক আহমেদ, লাবলু আনসার, মাহফুজুর রহমান, নাজমুল আহসান, মোহাম্মদ সাঈদ, হাসানুজ্জামান সাকীসহ আরো অনেকে। প্রতিমন্ত্রী সবার প্রশ্নের জবাব দেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ছাড়া গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট-এর কোন মিডিয়া পার্টনার নেই। এ সময় নিউ ইয়র্কের এক বিএনপি কর্মি জাকারিয়া মাসুদ জিকু তার নতুন আইবি টিভি ইউএসএকে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে দাবি করেন এবং প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, মিডিয়া পার্টনার হিসেবে তার টিভিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এ মর্মে বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের জনৈক কর্মকর্তার দেওয়া লিখিত চুক্তিপত্র রয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন আমি মন্ত্রী অথচ এ বিষয়টি আমি জানি না। যিনি আপনার টিভিকে মিডিয়া পার্টনারের দায়িত্ব দিয়েছেন তার নাম বলেন আমি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।

আইবি টিভি ইউএসএ'র স্বত্বাধিকারী জাকারিয়া মাসুদ জিকু যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত তার সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকায় গত সপ্তাহে গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট-এর মিডিয়া পার্টনার আইবি টিভি ইউএসএ'র নাম প্রকাশ হবার পর থেকে বিভিন্ন মহলে নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।    

নিউ ইয়র্কের আইবি টিভিকে এক হাত দিলেন প্রতিমন্ত্রী পলক: ছাবেদ সাথী, নিজস্ব প্রতিবেদক, যুক্তরাষ্ট্র: নিউ ইয়র্কের মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে আগামী শুক্রবার (৬ মে) অনুষ্ঠিব্য ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট’ -এর মিডিয়া পার্টনার দাবি করায় যুক্তরাষ্ট্রস্থ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতিকে এক হাত দিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। স্থানীয় সময় বুধবার (৪ মে) সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল-এর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী বিএনপি কর্মি ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি তার আইবি টিভি ইউএসএকে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে দাবি প্রতিমন্ত্রী সমুচিত জবাব দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ছাড়া গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্টের কোন মিডিয়া পার্টনার নেই।  

প্রতিমন্ত্রীর জবাব শোনার পর নিউ ইয়র্ক প্রবাসী বিএনপি কর্মি জাকারিয়া মাসুদ জিকু তার নতুন আইবি টিভি ইউএসএকে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে দাবি করেন এবং প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, মিডিয়া পার্টনার হিসেবে তার টিভিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এ মর্মে বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের জনৈক কর্মকর্তার দেওয়া লিখিত চুক্তিপত্র রয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি মন্ত্রী অথচ এ বিষয়টি আমি জানি না। যিনি আপনার টিভিকে মিডিয়া পার্টনারের দায়িত্ব দিয়েছেন তার নাম বলেন আমি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।

আইবি টিভি ইউএসএ'র স্বত্বাধিকারী জাকারিয়া মাসুদ জিকু যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। জাকারিয়া মাসুদ জিকু সম্পাদিত নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকায় গত সপ্তাহে গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট-এর মিডিয়া পার্টনার হিসেবে আইবি টিভি ইউএসএ'র নাম প্রকাশ করার পর থেকে নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন মহলে নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট-এর মিডিয়া পার্টনার নিয়ে ভূয়া প্রচারণার জন্য সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সমুচিত জবাবের খবর প্রবাসীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন অনেকেই।  

রাজশাহীর সময় / জি আর


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]